• ঢাকা
  • বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪, ৩১ চৈত্র ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০১৯, ০৯:২৬ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৩, ২০১৯, ০৯:২৭ এএম

বিএসএমএমইউতে নিরাপত্তা জোরদার

আজও ভিসির কার্যালয়ের সামনে চিকিৎসকদের অবস্থান

আজও ভিসির কার্যালয়ের সামনে চিকিৎসকদের অবস্থান

 

আন্দোলনের মুখে আলোচনা সাপেক্ষে চিকিৎসক নিয়োগ পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করেন বিএসএমএমইউ ভিসি। আজ বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেটের বৈঠকে সিদ্ধান্তের জানানোর কথা রয়েছে। ভিসির এ ঘোষণার পরই আন্দোলনরত চিকিৎসকরা তাদের কর্মসুচী সাময়িক বন্ধ রাখে। আজ সিদ্ধান্তের পরই পরবর্তী কর্মসূচী দেয়ার ঘোষনা দেয় চিকিৎসকরা।

এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে চিকিৎসক নিয়োগে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ মামলা দায়ের করেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভাংচুর, অরাজকতা, নৈরাজ্য সৃষ্টি ও সরকারী কাজে বাধাদান সংক্রান্ত আইনে গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। বিএসএমএমইউ’র প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় বিএসএমএমইউর চিকিৎসক নিয়োগের প্রতিবাদে আন্দোলনকারীদের মধ্যে প্রথম সারির ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই চিকিৎসকরা হচ্ছেন, ডা. বিজয় কুমার পাল, ডা. আহসান হাবিব হেলাল, ডা. আরিফুর ইসলাম জোয়ারদার টিটু, ডা. বশির আহমেদ জয়, ডা. মোহাম্মদ ফারুক, ডা. তৌহিদুজ্জামান, ডা. মিরজন, ডা. জাকির, ডা. কাউসার, ডা. এনায়েত উল্লাহ তুষার, ডা. প্রাণ, ডা. সুবাস কান্তি দে, ডা. দিপঙ্কর, ডা. মেহেদী, ডা. রাফিউল বারী, ডা. বিদ্যুৎ চন্দ্র দেবনাথ, ডা. সজীব। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ৩০/৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। শাহবাগ থানার মামলা নম্বর-১২।

এদিকে নিয়োগের মৌখিক পরিক্ষা স্থগিত করে আন্দোলনরত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করার খবর পেয়ে চিকিৎসকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। চিকিৎসকরা সরকারী দলের চিকিৎসক সংগঠনগুলোর মধ্যে বিদ্যমান তাদের সহপাঠী ও সহকর্মীদের সঙ্গে গোপনে একাধিক বৈঠক করে তাদের পরামর্শ নিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসএমএমসইউর প্রবীণ একজন কর্মচারী জানিয়েছেন, বিএমএ, স্বাচিপ ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক সমিতির একাংশের নেতারা আন্দোলনরত চিকিৎসকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।

স্থানীয় সূত্র বলছে, আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) চিকিৎসকরা বিএএমএমইউর বটতলায় ও ভিসির কার্যালয়ের সামনে সিড়ি ও করিডোরে অবস্থান নিবেন। তারা তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও পুলিশ দিয়ে হয়রানির পায়তারা বন্ধ করতে দাবি জানাবে। প্রয়োজনে তারা পুর্বের দিনের মত তারা ভিসির কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ন অবস্থান কর্মসুচী পালন করবেন।     

এদিকে চলমান চিকিৎসকদের আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি ও অনাকাঙ্খিত পরিবেশ যাতে না হয়, সে দিকে দৃষ্টি রেখে বিএসএমএমইউতে অতিরিক্ত পুলিশ, র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি পাহারায় রয়েছে বিপুল আনসার সদস্য। তা ছাড়া বি ব্লকের প্রবেশ পথ, ভিসির কার্যালয়ের করিডোর এবং পেছনের প্রবেশ পথে গোয়েন্দা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। চালানো হচ্ছে ব্যাপক তল্লাশী। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধানদের ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।  

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য, অরাজকতা করা হচ্ছে। এ সব নৈরাজ্য ও অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টিসহ নানা অভিযোগ এনে একটি মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। ওসি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নৈরাজ্য ও অনাকাঙ্খিত ঘটনা বরদাশত করা হবে না।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার চিকিৎসকদের চলমান আন্দোলনের মুখে নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, চিকিৎসক নিয়োগে শুরু হওয়া মৌখিক পরীক্ষা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হবে নাকি চালিয়ে নেওয়া হবে, সে বিষয়ে পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আজ সে সিন্ডিকেট বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ২০০টি মেডিকেল অফিসারের পদে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় বিএসএমএইউ কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১৮০ জন এমবিবিএস ও ২০ জন বিডিএস চিকিৎসক চাওয়া হয়। প্রথম দফায় নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হলেও সেটি পিছিয়ে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে পরীক্ষার দিন ঠিক করা হয়। পরীক্ষা নেওয়ার জন্য প্রশ্নপত্রও ছাপানো হয়। কিন্তু অনিবার্য কারণ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা স্থগিত করে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাপা হওয়ার দেড় বছর পর গত ২২ মার্চ সেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর থেকেই আন্দোলন শুরু করেন চিকিৎসকদের একাংশ।

এইচ এম/এসজেড