• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০১৯, ০৫:২৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৫, ২০১৯, ০৫:২৩ পিএম

যৌতুকের মোটরসাইকেল না দেওয়ায় স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ

যৌতুকের মোটরসাইকেল না দেওয়ায় স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ

যৌতুকের মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় এক সন্তানের জননী এক গৃহবধূকে বিষপান করিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। টানা ১৪ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ার পর শুক্রবার (১৪ জুন) দিবাগত রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে গৃহবধূর মৃত্যু হয়।

এর আগে গত ৩১ মে দুপুরে বাবার বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল কেনার টাকা এনে না দেওয়ায় ঝালকাঠি জেলার নলছিটি পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডস্থ বৈচণ্ডী এলাকায় স্বামীর ঘরে বিষপান করানো হয় তাকে।

নিহত গৃহবধূ নুসরাত জাহান ইভা (২২) ওই এলাকার তারিকুল ইসলাম লিংকনের স্ত্রী এবং দেড় বছর বয়সী এক পুত্রসন্তানের মা।

নিহত ইভার বাবা মো. আক্তার হোসেন গাজী জানান, একই এলাকার বাসিন্দা আহসান হাবিবের ছেলে তারিকুল ইসলাম লিংকনের সাথে নুসরাত জাহান ইভার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে ৪ বছর আগে পরিবারের অমতে তারা দুজন বিয়ে করেন। পরে দুই পরিবারই তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়। তিনি বলেন, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য ইভার ওপর শ্বশুর-শাশুড়ির মানুষিক নির্যাতন শুরু হয়, যা একপর্যায়ে শারীরিক নির্যাতনে গড়ায়। শুধু শ্বশুর-শাশুড়ি নয়, গৃহবধূর স্বামী লিংকন, ভাই সুজন ও ভাইয়ের বউ হাসিও ইভার ওপর নির্যাতন করেন।

আক্তার হোসেন আরও বলেন, মেয়েকে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করতে বিয়ের পর থেকে গত চার বছরে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা যৌতুক দিয়েছেন জামাই ও তার পরিবারকে। এতেও ক্ষ্যান্ত হয়নি তারা। সর্বশেষ লিংকন বিকাশ কোম্পানিতে চাকরি নেন। এজন্য মোটরসাইকেলের প্রয়োজন হয় তার, যা স্ত্রীকে তার বাবার বাড়ি থেকে এনে দিতে বলেন।

সর্বশেষ গত ৩১ মে মোটরসাইকেল কেনার জন্য স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে বলেন লিংকন। তা না দেওয়ায় ওইদিন দুপুরে লিংকন ঘরের মধ্যে আটকে ইভাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। পরে শ্বশুর আহসান হাবিব, শাশুড়ি জাহানারা বেগম ও জা হাসির সহযোগিতায় লিংকন ইভার মুখে কীটনাশক ঢেলে দেন বলে অভিযোগ ইভার বাবার।

এ ঘটনার পর তাকে উদ্ধার করে নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে দুই দিনের মাথায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এরপর গত ৯ জুন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিতে বলা হয়। সর্বশেষ গত ১৪ জুন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন ইভা। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তার মৃত্যু হয়।

নলছিটি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘শুরু থেকে এই ঘটনার কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। তার মধ্যে যে গৃহবধূ মারা গেছে তাকে বিষপান করানো হয়েছে বলে দাবি করা হলেও হাসপাতালের ছাড়পত্রে অসুস্থতার কারণ নিউমোনিয়া লেখা রয়েছে। তাই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত হত্যা মামলা নেওয়া সম্ভব নয়।’

এনআই