• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০১৯, ১১:৩৫ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৭, ২০১৯, ১১:৪৯ এএম

আধুনিকতার ছোঁয়া ২শ’ বছর পুরনো রায়পুর মসজিদে

আধুনিকতার ছোঁয়া ২শ’ বছর পুরনো রায়পুর মসজিদে
ঐতিহাসিক রায়পুর বড় মসজিদ- ছবি: জাগরণ

এক সময় উপমহাদেশ তথা আরব বিশ্বের অনেক ধর্ম প্রচারকের আগমন ঘটেছিল বাংলাদেশে। তারা ধর্ম প্রচারে ছড়িয়ে পড়েন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এদের কেউ কেউ স্থায়ীভাবে রায়পুরসহ লক্ষ্মীপুর জেলা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে ধর্ম প্রচার করে গেছেন। তাদের বংশধরেরা এখনো বংশানুক্রমে পীর-পীরজাদা উপাধি ধারণ করে লক্ষ্মীপুর-রায়পুরসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে আছেন। ধর্ম প্রচারের সময় তারা স্থাপন করেছেন এদেশে বহু মসজিদ। তার মধ্যে জেলার রায়পুর উপজেলায় স্থাপন করা হয় ঐতিহাসিক রায়পুর বড় মসজিদ।মসজিদটির বয়স হয়েছে প্রায় ২০৯ বছর।

জানা যায়, রায়পুর বড় মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা রায়পুরের পীর মাওলানা ফয়েজুলুল্লাহ। তিনি এই এলাকায় বুড়া হজরত নামে পরিচিত। তিনি এসেছিলেন সুদূর বাগদাদ (ইরাক) থেকে। রায়পুরের দক্ষিণ-পূর্ব কেরোয়া গ্রামে তিনি স্বপরিবারে বসবাস শুরু করলেও তার সন্তান বড় মিয়া হুজুর রায়পুর বাজারের পশ্চিমে নতুন বসতি স্থাপন করে ধর্ম প্রচার করেন। সে বাড়িটি এখনো নতুন পীর বাড়ি হিসেবে পরিচিত। বাংলা ১২১৭ সাল এবং আরবী ১২৩১ হিজরীতে পীরে কামেল হযরত মাওলানা শাহ ফয়েজুলুল্লাহ (রা.) রায়পুর বড় মসজিদ নির্মাণ করেন। তবে বড় মসজিদের জন্য ২.৭৫ একর জায়গা ক্রয় করে তা ওয়াকফ করে দেন মধুপুর নিবাসী ধর্মপ্রাণ ও দানশীল ব্যক্তিত্ব (মরহুম) রওশন আলী ব্যপারী।

জানা গেছে, পীরে কামেল বুড়া হযরত শাহ ফয়েজুলুল্লাহ (রা.) মাওলানা কেরামত আলী জৈনপুরী হুজুরকে এত বেশি ভক্তি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসতেন যে, তখন জৈনপুরী হুজুরকে দিয়েই বড় মসজিদের প্রথম ভিত্তি প্রান্তর স্থাপন করান। রায়পুরের ঐতিহ্যবাহী বড় মসজিদ নির্মাণে সময় লাগে টানা ১০ বছর। মসজিদের প্রধান কারিগর আনা হয় অবিভক্ত ভারতের কলকাতা থেকে। প্রধান কারিগরসহ বেশির ভাগ সহযোগিরা ছিলেন ভারতের। পাশাপাশি মসজিদ নির্মাণে এলাকার লোকজনও সহায়তা করেন। এলাকার লোকজন এ মসজিদকে রায়পুর “বড় মসজিদ” হিসেবে জানেন।

আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর এ মসজিদে রয়েছে ২৩টি আকর্ষণীয় গম্বুজ, ৯টি দরজা, ১টি মিনার এবং ১টি বড় গেইট সম্বলিত এই মসজিদ রায়পুরের জনপদে বিশাল খ্যাতি লাভ করে। বহু দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এই মসজিদে নামাজ পড়ার জন্য প্রতিনিয়ত আসেন। পীরে কামেল বুড়া হযরত শাহ ফয়েজুলুল্লাহ (রা.) এই মসজিদের প্রথম ইমামতি করেন। মসজিদটিকে রায়পুরবাসী তাদের গর্বের ও শ্রদ্ধার স্থান হিসেবে ধারণ করেন।

রায়পুর বড় মসজিদ কমিটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ক্বাজি জামসেদ কবির বাক্কিবিল্লাহ বলেন, মসজিদটি এই অবস্থায় ছিল না। আমরা বড় মসজিদের নেতৃত্বে আসার পর মসজিদের সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছি। বিভিন্ন মানুষের কাছে থেকে অনুদান সংগ্রহ করে অনেক চেষ্টায় মসজিদটিকে বর্তমান আধুনিকায়নে আনতে পেরেছি। তবে মসজিদটিকে আরো আধুনিক করার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই রমজানে অসংখ্য মানুষ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন এই মসজিদে।


টিএফ