• ঢাকা
  • সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০১৯, ০৫:৩৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৮, ২০১৯, ০৫:৩৯ পিএম

চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের আশঙ্কা : সরানো হলো ৪৪২ পরিবার

চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের আশঙ্কা : সরানো হলো ৪৪২ পরিবার

বর্ষা আর বৃষ্টিপাতে চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠেছে। এতে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। শুরু হয়েছে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারী পরিবারগুলোকে অন্যত্র সরানোর প্রক্রিয়া। টানা দুই দিনের বৃষ্টিপাতে এবারো দেখা মিললো একই চিত্র। চট্টগ্রামের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ লালখান বাজারের মতিঝর্ণা এলাকায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে নানামুখী তৎপরতা। 
এরইমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে ৪৪২ পরিবারকে অন্যত্র সরানো হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করা ৮৩৫ পরিবারের মধ্যে বাকি ৩৯৩ পরিবারকে এখনো নিরাপদ স্থানে সরানো হয়নি। অন্যদিকে পাহাড় থেকে নিরাপদে সরিয়ে আনা পরিবারগুলো প্রশাসনের অগোচরে পুনরায় ফিরে যাচ্ছে তাদের বসত ঘরে। এই অবস্থায় পাহাড় ধ্স ঠেকাতে প্রশাসনের তৎপরতা কতটুকু সফল হবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। 

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, পাহাড় ধসের ঝুঁকি এড়াতে কাট্টলী সার্কলের অধীন আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ২৫০ পরিবার, আলহেরাতে ১১৭ পরিবার, রৌফাবাদ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে  ৪০ পরিবার এবং লালখান বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৫ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। 

লালখান বাজার এলাকার একাধিক স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, বৃষ্টি শুরু হলে মতিঝর্না আর টাঙ্কিরপাহাড় এলাকায় প্রশাসন আর অবৈধ বসবাসকারীদের সাথে চলে চোর পুলিশ খেলা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরিয়ে দেওয়া হলেও তারা পুনরায় ফিরে যায় বসত ঘরে।। আর এই কাজে সহযোগিতা করে স্থানীয় কিছু মানুষ। ইতোপূর্বে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার সময় প্রশাসনের সাথে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় সড়ক অবরোধসহ একাধিক অনাকাঙ্খিত ঘটনার সূত্রপাত হয়। 

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রামের ১৭টি পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করে ৮৩৫ পরিবার। এই পরিবারগুলোর তালিকাও করা হয়। প্রতিবছর পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এসব পরিবারগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি থেকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও নানা বাধার মুখে সেই সিদ্ধান্তগুলো আর বাস্তবায়িত হয় না। 

এদিকে, টানা দুই দিনের ভারী বর্ষণে নগরীর বিভিন্ন স্থানে দেয়াল ধসের ঘটনা ঘটেছে। জামালখান ওয়ার্ডের হেমসেন লেইন ১ নম্বর গলির একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের সীমানা প্রাচীর ধসে পড়ার ঘটনা ঘটেছে সোববার সকালে। এছাড়া নগরীর নন্দনকানে টিএন্ডটি অফিসেও ঘটেছে দেয়াল ধসের ঘটনা। চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে মঙ্গলবারও আব্যাহত থাকবে বৃষ্টিপাত। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড় ধসের ঝুঁকি আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। 

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ আবস্থায় বসবাসকারী পরিবারগুলোকে সরিয়ে আনতে কাজ করছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে অনেকেই নিজ উদ্যোগে সরে গেছে। সোমবার ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোকে সরিয়ে আনতে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। 

সরিয়ে আনার পর পুনরায় বসতিতে ফেরত যাওয়া সম্পর্কে জেলা প্রশাসক বরেন, প্রতি ঘরে ঘরে পাহারা বসানো সম্ভব নয়। আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যদি পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে যাতে একজন মানুষেরও প্রাণহানী না ঘটে।

কেএসটি