ময়মনসিংহের ভালুকা পৌর এলাকায় গত ১৫ দিন ধরে কোনো ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করছে না পৌরসভার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বাসা-বাড়ি ও বিপণি বিতানের সামনে ময়লার স্তূপ জমে অনেকটা ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে পৌর এলাকা।
ভালুকা পৌরসভায় ৫১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পাশাপাশি দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে আরও ৭৮ জন অস্থায়ী কর্মী পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন যারা তারা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন-ভাতার দাবিতে রাজধানীতে আন্দোলন করছেন আর পৌরসভার মূল ফটকে ঝুলছে তালা। পৌর এলাকায় জ্বলছে না সড়কবাতি, পরিষ্কার হচ্ছে না ময়লার স্তূপ, বাড়ছে চুরি, ছিনতাই ও ডেঙ্গু রোগের আশঙ্কা। সন্ধ্যার পর অনেকটা ভূতুড়ে পরিবেশ নেমে আসে পৌরসভার বিভিন্ন সড়কে। পৌর কার্যালয়ে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত না হওয়ায় নাগরিক সনদ, জন্ম-মৃত্যু সনদ, প্রত্যয়নপত্র ও ট্রেড লাইসেন্সের জন্য গিয়ে না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন সেবাপ্রত্যাশীরা। এই অবস্থার দ্রুত পরিত্রাণ চান ভালুকা পৌরবাসী।
পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সানা উল্লাহ জানান, বাসার সামনে সড়কের লাইট বন্ধ থাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় তার বাসার ফটকের তালা ভেঙ্গে চোর ভেতরে প্রবেশ করেছিল। তবে ওই সময় তিনি বাসার ভেতরে অবস্থান করায় কোন কিছু খোয়া যায়নি।
পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভালুকা বাসস্ট্যান্ড, শহিদ নাজিম উদ্দিন রোড, পাঁচ রাস্তার মোড়, থানার মোড়, ভালুকা মধ্য বাজার, পশ্চিম বাজার, মেজরভিটা, উপজেলা পরিষদ চত্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমে আছে। এসবের উপর বৃষ্টির পানি জমে বাড়াচ্ছে দুর্গন্ধের মাত্রা। এতে নষ্ট হচ্ছে এলাকার পরিবেশ।
পৌরসভার অন্তত দশ জন ব্যক্তি জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ময়লা জমে আছে পৌর সদরের বিভিন্ন রাস্তায়। পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোথা থেকে বেতন-ভাতা নেবেন তা দেখার দায়িত্ব তাদের নয়। তারা নিয়মিত পৌর কর পরিশোধ করেন, তাই সেবাও চান নিয়মিত। এ বিষয়ে পৌর মেয়র দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।
ভালুকা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ময়লার পাশের ফলের দোকানিরা জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে ময়লা জমতে জমতে এখন তাদের দোকানের কাছে চলে আসছে। দোকানের পাশে দীর্ঘ দিন ময়লা জমিয়ে রাখায় দুর্গন্ধে তাদের দোকান চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ভালুকা বাজার সমিতির সভাপতি মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, পৌরসভার সড়ক বাতি লাইট না জ্বালানোয় ভালুকা বাজারসহ আশপাশ এলাকার দোকানগুলোতে চুরির আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে গেছে। তা ছাড়া ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার না করায় বাজারের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা দাবি আদায়ের আন্দোলনে রাজধানীতে অবস্থানকারী ভালুকা পৌরসভার একাধিক কর্মচারী ফোনে ‘দৈনিক জাগরণ’কে জানান, বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কাজে যোগ দেবেন না।
ভালুকা পৌরসভার মেয়র ডা. একেএম মেজবাহ উদ্দিন পৌরবাসীর দুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, পৌরসভার কর্মকর্তাগণ তাদের দাবি আদায়ের আন্দোলন করছেন। এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য নেই।
কেএসটি