• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০১৯, ১১:০২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১, ২০১৯, ১১:১৭ এএম

ডিসি এসিদের থানায় নজরদারি, ডিএমপির ওসিদের অসন্তোষ

ডিসি এসিদের থানায় নজরদারি, ডিএমপির ওসিদের অসন্তোষ

রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ভুক্তভোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে শুরু হয়েছে বিশেষ নজরদারি। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) থানাগুলোতে ডিসি, এডিসি ও এসি নিয়মিত যাচ্ছেন। এতে জনসাধারণের সেবার মান বাড়লেও বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে দেখছে না থানার ওসি, পরিদর্শকসহ অন্যান্য কর্মগকর্তাগণ। কৌশলগত কারণে স্বাভাবিক কাজও অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে কর্মকর্তাদের কাছে। ফলে তাদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। এমনটাই মন্তব্য করেছেন ডিএমপির একাধিক থানার ওসি এবং পরিদর্শকগণ।

সম্প্রতি ডিএমপির নতুন কমিশনার শফিকুল ইসলাম যোগদান করেই ঘোষণা দেন, ডিএমপির থানায় সেবার মান বৃদ্ধির জন্য উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ও সহকারী পুলিশ কমিশনারদের (এসি) ২/৩ ঘণ্টা করে থানায় বসে নজরদারি করবেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, ডিএমপির অধীনস্থ কোনো থানায় যদি জনগণ কাঙ্ক্ষিত সেবা ও ভালো আচরণ না পায় তাহলে সিনিয়র, অফিসারদের থানায় বসাব। প্রয়োজনে আমি নিজেও থানায় বসে ওসিগিরি করব।

ডিএমপি কমিশনারের এমন নির্দেশনার পর সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) একাধিক বিভাগ ও থানায় ঘুরে জানা যায়, থানাতে নিয়মিত হয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডিসি, এডিসি ও এসিরা। থানাগুলোর সেবার মান আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেবাপ্রত্যাশীরা যাতে হয়রানির শিকার না হন সেজন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা থানায় নিয়মিত বসছেন। কোন কোন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দাবি করেন, তারা আগে থেকেই থানাতে নিয়মিত ছিলেন। তবে ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনার পর আরও নিয়মিত হয়েছেন।

রমনা বিভাগের ধানমণ্ডি থানার পুলিশ পরিদর্শক কামরুন্নাহার বলেন, আমি বেশির ভাগ সময় থানাতে ডিউটি অফিসার হিসেবে বসি। আমার জোনের এসি-এডিসি স্যারসহ নতুন যোগদান করা ডিসি স্যারও নিয়মিত আসেন। এমনকি তারা এসে ডিউটি অফিসারের রুমেও বসেন।

একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, স্যাররা নিয়মিত আসলে আমাদের মধ্যেও ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা কমে যায়। সেক্ষেত্রে থানায় যারা আসেন তারা সঠিক সেবা পান। প্রথম অবস্থায় কাজে কিছুটা অস্বাভাবিক লাগে। জড়তার সৃষ্টি হয়। পড়ে ঠিক হয়ে যায়। তবে ওসি এবং পরিদর্শকরা কৌশলগত কারণে কিছুটা বেকায়দায় পড়েছেন। এনিয়ে তাদের মধ্যে অসেন্তাষ রয়েছে।

এ বিষয়ে তেজগাঁও বিভাগের শেরে বাংলা নগর থানার পুলিশ বলেন, থানাতে মাসে ২/৪ বার ডিসি স্যার আসেন। ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনার পর স্যাররা আরও নিয়মিত হয়েছেন।

মতিঝিল বিভাগের পল্টন থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানাতে আগত সাধারণ মানুষেরা সঠিকভাবেই সেবা পাচ্ছেন।

থানায় জিডি করতে আসা ব্যবসায়ী মিল্টন বলেন, আমি একটা ঝামেলার কাজ নিয়ে এসেছিলাম। এসআই যিনি ছিলেন তিনি বিষয়টি বুঝতে না পেরে সহকারী পুলিশ কমিশনারের (এসি) কাছে নিয়ে যান। পরবর্তীতে তার সহযোগিতায় আমার কাজটা সম্পন্ন হয়।

সংশ্লিষ্ট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মিশু বিশ্বাস  বলেন, আমরা সকাল-সন্ধ্যায় নিয়মিত থানায় বসছি। থানায় যারা আসছেন তাদের সমস্যার কথা শুনে তাৎক্ষণিক সমাধান দেয়ার চেষ্টা করছি। কেউ যেন থানাতে এসে হয়রানির শিকার না হন সে জন্য সার্বক্ষণিক মনিটরিং করি। ডিসিরা কমপক্ষে ২-৩ ঘণ্টা অবস্থান করে থানার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন।

লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুনতাসির ইসলাম বলেন, ডিএমপি কমিশনার স্যার আমাদের যে ধরনের নির্দেশনা দিয়েছেন সেটা আমরা মেনে চলছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে দিনে একাধিক থানায় বসছি। আগেও বসতাম, তবে নির্দেশনা আসার পর সেটা আরও বেগবান হয়েছে।

এইচএম/একেএস

আরও পড়ুন