• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৫, ২০১৯, ০৫:৫১ পিএম

প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না হওয়ায় চাঁদপুরের মিষ্টি কুমড়া চাষিরা হতাশ

প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না হওয়ায় চাঁদপুরের মিষ্টি কুমড়া চাষিরা হতাশ
সড়কের পাশে স্তূপ করে রাখা মিষ্টি কুমড়া ট্রাকে করে চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে

 

চলতি মৌসুমে প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না হওয়ার কারণে লাউ-কুমড়ার উৎপাদন কমেছে। বিশেষত চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার অলিপুর এলাকার শতাধিক কৃষকের উৎপাদিত সবজি এবার ধস নামার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, অলিপুরে উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া চট্টগ্রামের বাজারে চাহিদা রয়েছে। তবে বৃষ্টি না হওয়ায় এবার উৎপাদন হয়েছে অনেক কম।

পাইকারি বিক্রেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার চট্টগ্রামে কুমড়া যাচ্ছে কম। কুমড়া চাষিরা জানান, কৃষি অফিসের লোকজন মাঠ পর্যায়ের কৃষকদেরকে পরামর্শ আর প্রয়োজনীয় নির্দেশনা না দেওয়ায় কুমড়া উৎপাদন কমেছে। অথচ এ অঞ্চলে প্রায় ৪০ বছর মিষ্টি কুমড়া চাষ বেশ জনপ্রিয়। অলিপুর গ্রামরে শতাধিক কৃষি পরিবার মৌসুমী সবজি চাষের উপর নির্ভরশীল।  

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডাকাতিয়া নদীর পাড় ঘেঁষে হাজীগঞ্জ উপজেলার অলিপুর এলাকা। এ নদীর অববাহিকায় কুমড়া চাষও বাড়ছে। উপজেলার উটতলি থেকে শুরু করে অলিপুর বাজার, উত্তর অলিপুর, দক্ষিণ অলিপুর, কামরাঙ্গা, মনিহার, মহেশপুর, বাকিলা, সাতবাড়িয়া, বেতিয়াপাড়া, কৈয়ারপুল, শ্রীনারায়ণপুর, দক্ষিণ বলাখাল, উচ্চগাঁ এলাকায় এবারও কুমড়ার চাষ হয়েছে।

কিন্তু এবার প্রয়োজনীয় বৃষ্টির অভাবে এ এলাকার কুমড়া গাছ শুকিয়ে গেছে। যদিও এখন চাষিরা কুমড়া তুলতে ব্যস্ত। তারা কুমড়া তুলে সড়কের পাশে স্তূপ করে রাখে। এ স্তূপ থেকে ট্রাকে করে চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজারে কুমড়া সরবরাহ করা হয়।

এলাকার পাইকারি বিক্রেতারা জানান, চাঁদপুরে উৎপাদিত কুমড়াগুলো চট্টগ্রামের রেয়াজউদ্দিন বাজার দখল করে আছে। প্রায় ২৫ বছর ধরে হাজীগঞ্জ থেকে কুমড়া কিনে চট্টগ্রামের রেয়াজউদ্দিন বাজারে বিক্রি হচ্ছে। কুমড়া চাষের জমি কিনে সেই কুমড়া বয়সে পূর্ণতা আসলে তা মাঠ থেকে তুলে ট্রাকে করে চট্টগ্রামে পৌঁছে দেয়া হয়।

এ কুমড়াগুলো আড়তে ৮/৯ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। অন্য বছরগুলোয় ভালো লাভ পেলেও এবার লাভের পরিমাণ খুব কম। কারণ এবার ফলন হয়েছ অনেক কম।

কুমড়া চাষি লিটন মুন্সী জানান, বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষকরা প্রায় ৪০ বছর এ অঞ্চলে কুমড়া চাষ করে আসছি। এখানে একজন ব্লক সুপারভাইজার আছে বলে জানি। কিন্তু ওনাকে আমরা দেখিনি। এ বছর তেমন একটা ভালো ফলন হয়নি। কৃষি কর্মকর্তারা এখানে এসে কুমড়া চাষের বিষয়ে পরামর্শ দিলে ফলন আরো অনেক বেশি পেতাম।

সংশ্লিষ্টদের দাবি, বীজ তলায় কুমড়া চারা লাগানো থেকে শুরু করে জমি তৈরি করা, জমিতে গাছ লাগানো, গাছের পরিচর্চা করা, ফলন বাড়ানো, ফলনে পূষ্টতা আনাসহ কুমড়া চাষে স্থানীয় কৃষকদেরকে নিয়ে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা প্রয়োজন। কুমড়া চাষকে মসলা চাষের আওয়তায় এনে প্রণোদনা ভাতাসহ কৃষকদেরকে ভালো মানের বীজ দেয়া যাতে পারে। ইউনিয়ন ভিক্তিক ব্লক সুপারভাইজার মাধ্যমে নিয়মিত তত্বাবধান করলে এ অঞ্চলের কুমড়া চট্টগ্রাম ছাড়াও আরও অনেক বাজারে সরবরাহ করা সম্ভব।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন মনি সূত্রধর জানান, কৃষকদের অভিযোগ সত্য নয়। বিস্তৃর্ন এলাকায় কুমড়া চাষের কারণে সব কৃষকের খবর এক সময়ে নেয়া বা দেয়া সম্ভব হয় না। কৃষি কর্মকর্তা যেদিন মাঠে যায়, সেদিন হয়তো অভিযোগকারীরা মাঠে থাকেন না। যথাযথ ফলন উৎপাদন না হওয়ার বিষয়ে এ কর্মকর্তা জানান, লাউ-কুমড়া চাষে পর্যাপ্ত পানির প্রয়োজন। এ বছর বৃষ্টি না হওয়ার কারণে লাউ-কুমড়া উৎপাদন কম হয়েছে।

এসসি/এসজেড