• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০১৯, ১২:২৬ পিএম

দেশি বিদেশি পাখির কলতানে মুখর শার্শার পদ্মবিল

দেশি বিদেশি পাখির কলতানে মুখর শার্শার পদ্মবিল
দেশি-বিদেশি অতিথি পাখির অভয়ারণ্য শার্শার পদ্মবিল। ছবি : জাগরণ

 

পঞ্চাশ গজ দূরেই ওপারে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া। পাশেই সবুজ বেষ্টনীতে ঘেরা যশোরের শার্শা উপজেলার লক্ষনপুর ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রাম। সীমান্ত ঘেঁষা বেনাপোল থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তরে। মৌসুমী বায়ু পরিবর্তনের হতেই পৌষের শেষ ও মাঘের প্রথমে হাড় কাঁপানো শীতেও বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি অতিথি পাখির আগমনে মুখরিত ও অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে শার্শার পদ্মবিল।

এই গ্রামের পাশেই প্রায় ৭০ বিঘা জমির জলাশয় নিয়ে পদ্মবিল। পদ্মবিলে হরেক রকম পাখির অভয়ারণ্য গড়ে উঠেছে। নিরিবিলি মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা অভয়ারণ্যে পাখির কলতানে মুখরিত গোটা এলাকা। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন শতশত পাখি প্রেমী ও নারী শিশুসহ সাধারন দর্শনার্থীরা ভিড় করছে পদ্মবিলে। উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক দৃশ্য। নিরাপদ ও এলাকাবাসির কড়া নজরদারী থাকায় সবুজ বেষ্টনী ঘেরা জলাশয়ে পাখির অভয়ারণ্য গড়ে উঠেছে বলে জানান স্থানীয়রা।

দর্শনার্থী আব্দুল জববার ও আলী হোসেন বলেন, সরাইল, পানকৌড়ি, ডংকুর, বেগ ও কাসতেচুড়াসহ অসংখ্য পাখি চড়ছে জলাশয়ে। উড়ছে তারা আকাশ নীড়ে। পাখির কিচির মিচিরে মুগ্ধ মানুষ। দেশি ও বিদেশি জাতের-বিভিন্ন স্থান থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে অতিথি পাখি। দেখছে সবাই প্রাণভরে, মন জুড়াচ্ছে ঘুরে ফিরে। গ্রাম ও শহর থেকে আসছে মানুষ অতিথি পাখির অভয়ারণ্যে। প্রকৃতির দৃশ্য ও পাখির আওয়াজ শুনছে তারা প্রাণ খুলে। শিশু যেমন মাতৃক্রোড়ে সুন্দর তেমনি, পাখি সুন্দর নির্জন জলাশয়ে। এ অভয়ারণ্যে এসে পুলকিত তারা।

দুর্গাপুর গ্রামের মনির হোসেন ও মোহম্মাদ আলী বলেন, অতিথি পাখিগুলো কেউ যাতে ফাঁদে পেতে ধরতে না পারে তার জন্য সজাগ গ্রামের মানুষ। নাজুক যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে পর্যটকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বেশ। এ গ্রামের শামিম হোসেন ও আরমান আলী বলেন, উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা যদি অভয়ারণ্যের পাখির খোঁজ-খবর নিত তাহলে আরো বেশি পাখি এখানে আসতো। তারা উপজেলা প্রাণীসম্পদ ও বন বিভাগের সহযোগিতা কামনা করেন।

পাখির এ অভয়ারণ্য রক্ষায় গ্রামবাসি কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরে। পদ্মবিল পরিদর্শন করেছেন তিনি। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় বিষয়টি সুরাহের জন্য উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলে জানান লক্ষনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারা বেগম। তিনি বলেন, প্রাণীসম্পদ দেশ ও জাতীয় সম্পদ। সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

শার্শা উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা জয়দেব কুমার সিংহ বলেন, শীতে বিভিন্ন দেশ থেকে অতিথি পাখি আমাদের দেশে আসে। উপজেলায় কয়েকটি অতিথি পাখির অভয়ারণ্য গড়ে উঠেছে। অনেক স্থানে পাখি শিকারিরা ফাঁদ ও ইয়ারগান দিয়ে পাখি শিকার করছেন। এসব পাখি শিকারিদের আমরা কঠোর নজরদারিতে রাখছি। পরিবেশে যেন বিরুপ প্রভাব না পড়ে তার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পদ্মবিলসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাখি সংরক্ষণে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগ।

এসজেড