• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২১, ০৪:২৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ৩০, ২০২১, ০৪:২৫ পিএম

বন্ধ হচ্ছে রংপুরে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের স্কুল ফিডিং

বন্ধ হচ্ছে রংপুরে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের স্কুল ফিডিং

রংপুরে প্রাথমিকে পড়ুয়া প্রায় সোয়া লাখ শিক্ষার্থী ‘স্কুল ফিডিং’ সুবিধা হতে বঞ্চিত হতে যাচ্ছে। আগামী মাস থেকে টিফিন হিসাবে খেতে দেওয়া বিস্কুট বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে। এতে দারিদ্র্যপীড়িত এ জেলার গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জের ৫৬১টি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা পড়বে পুষ্টি সংকটে। বাড়বে প্রাথমিকে ঝড়ে পড়া শিশুর সংখ্যা।

সুবিধাভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা সরকার ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) সহায়তায় পরিচালিত ‘স্কুল ফিডিং’ প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানোর দাবি তুলেছেন। টিফিনে উচ্চ পুষ্টিসম্পন্ন বিস্কুটের পরিবর্তে নগদ টাকা অথবা অন্য কোনো কিছু না দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সুবিধাভোগী স্কুলের শিক্ষকেরা। তবে স্কুল ফিডিং প্রকল্পের মেয়াদ এ মাসে শেষ হবার কারণে জুলাই থেকে শিশুদের মধ্যে আর বিস্কুট বিতরণ করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘স্কুল ফিডিং’ প্রকল্পের আওতায় সারা দেশের দারিদ্র্যপীড়িত ৩৫টি জেলার প্রাথমিক স্কুলের ৩১ লাখ ৬০ হাজার শিশুকে প্রতিদিন টিফিন হিসাবে বিস্কুট খেতে দেয়া হয়। এরমধ্যে রংপুর জেলার কাউনিয়া, গঙ্গাচড়া, তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ উপজেলা ৫৬১টি স্কুলের ১ লাখ ১৪ হাজার ৩৫৪ জন শিশু শিক্ষার্থী রয়েছে। যার মধ্যে তিস্তা, ঘাঘট, করতোয়া ও যমুনেশ্বরী নদী বিধৌত চরাঞ্চলের শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ২৯ হাজার। এই প্রকল্পের মেয়াদ জুনে শেষ হলে আগামী জুলাই থেকে শিশুদের মধ্যে আর বিস্কুট বিতরণ করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে বিতরণ কার্যক্রমে নিয়োজিত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর (এনজিও) সাথে প্রকল্প চুক্তির মেয়াদও শেষ হবে।

এদিকে প্রাথমিকে শতভাগ ভর্তি নিশ্চিত ও ঝরে পড়া রোধ করতে স্কুল ফিডিংই একমাত্র উপায় বলে মনে করছেন শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। তারা প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। আর অভিভাবকেরা বলছেন, উপবৃত্তির চেয়ে স্কুল ফিডিং বেশি জরুরি। দরিদ্রপীড়িত শিশুদের পুষ্টি চাহিদা পূরণে স্কুল ফিডিং গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প। এনজিওগুলোর দাবি, সার্বিক দিক বিবেচনা করে চলমান স্কুল ফিডিং প্রকল্পের মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ানো সম্ভব। কারণ, প্রকল্পের সরকারি খাতে ৪ শত ৭৩ কোটি ৯ লাখ টাকা এখনো ব্যয় করা হয়নি।

রংপুর জেলায় স্কুল ফিডিং প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা প্রকল্প সমন্বয়কারী শাহিন হক জানান, জেলায় চারটি উপজেলার দুটি এনজিওর ২৯ জনকে নিয়ে স্কুল ফিডিং প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে। কর্মরত সবাই চুক্তিভিত্তিক কাজ করছেন। তাদের মাধ্যমে চার উপজেলার ৫৬১টি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের ১ লাখ ১৪ হাজার ৩৫৪ জন শিক্ষার্থী স্কুল ফিডিংয়ের আওতায় বিস্কুট পেয়ে আসছে। 

তিনি আরো জানান, এ মাসের ৩০ জুন পর্যন্ত চলমান প্রকল্পে সারা দেশে ব্যয় হবে ৪ হাজার ৫১৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৩ হাজার ২৬৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা এবং প্রকল্পের সাহায্যের সমুদয় টাকা ব্যয় হবে। এছাড়া সরকারি খাতে ৪ শত ৭৩ কোটি ৯ লাখ টাকা এখনো ব্যয় করা হয়নি। প্রকল্পের কার্যক্রম চলামান না থাকলে এ টাকা ফেরত চলে যাবে। এ অবস্থায় অব্যয়িত টাকা দিয়ে স্কুল ফিডিং প্রকল্পের চলমান বিদ্যালয়গুলোতে বেবল উচ্চ পুষ্টিমান সমৃদ্ধ বিস্কুট প্রদান করা হলে আগামী জুলাই থেকে ১২ মাস এ কার্যক্রম চালানো সম্ভব হবে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ এম শাহজাহান সিদ্দিক , প্রকল্পের মেয়াদ জুনেই শেষ হবে। পরের মাস থেকে শিক্ষার্থীরা আর পুষ্টিসম্পন্ন বিস্কুট পাবেন না। সরকার এখনো প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। নতুন করে প্রকল্প নিয়ে কাজ করতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় চিন্তাভাবনা করছে।

জাগরণ/এমআর