• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০১৯, ১২:০৩ পিএম

দেখার নেই কেউ, টেকনাফের হোয়াইক্যং শামলাপুর সড়কের দৈন্যদশা

দেখার নেই কেউ, টেকনাফের হোয়াইক্যং শামলাপুর সড়কের দৈন্যদশা
হোয়াইক্যং শামলাপুর সড়কের দৈন্যদশা। ছবি: জাগরণ

 

কক্সবাজার থেকে ৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও টেকনাফ থেকে ৩০ কিলোমিটারে উত্তরে অবস্থিত হোয়াইক্যং শামলাপুর আন্তঃসড়ক। প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি সড়ক নয়, যেন মরণ ফাঁদ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কটির এখানে সেখানে পুকুর সমান গর্ত। অনেক স্থানে কংক্রিট উপড়ে গিয়ে মাটি সরে গিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি বেহাল দশায় পড়ে থাকলেও দেখার নেই কেউ।

জরাজীর্ণ এই সড়ক দিয়ে অটোরিক্সা, সিএনজি, চান্দের গাড়ি (জ্বীপ), ট্রাক, ডাম্পার, লেগুনা, মাইক্রোসহ প্রতিদিন কয়েক হাজার গাড়ি চলাচল করে। এক কথায় বাস ব্যতীত সব যানবাহন চলাচল করে। সড়ক দূর্ঘটনা, মাঝপথে যানবাহনের চাকা পাংচার ও নষ্ট হওয়া নিত্যদিনের ঘটনা। পথচারী, যাত্রী ও চালকদের দুর্ভোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমলেই নিচ্ছেনা।

বর্তমান সরকারের আমলে সড়কটির এই দৈন্যদশায় ক্ষোভ জানিয়েছে এলাকাবাসী। তারা বলছেন, সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারা সড়কটি সংস্কারে উদ্যোগ নিচ্ছেন না।

খোঁজ খবর নিয়ে ও সংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টেকনাফ উপজেলার উত্তর দিকের ব্যবসায়ীরা এবং উখিয়া উপজেলার বালুখালী, থাইংখালী, পালংখালীর ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পেশাজীবী শ্রেণীর মানুষ প্রতিদিন এ সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করেন। ইদানিং কক্সবাজার অঞ্চলের লোকজন টেকনাফ মহাসড়কের যানজট এড়াতে এ সড়কটি ব্যবহার করে কক্সবাজারে আসা-যাওয়া করছেন।

সড়কটি মেরিনড্রাইভের লাগোয়া। পর্যটন স্পট নান্দনিক গুদুংগুহা যাতায়াতেও এ সড়কটি ব্যবহার করতে হয়। এমনকি রোহিঙ্গাদের দেখভাল করতে বিভিন্ন সংস্থার যানবাহনগুলোও এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। এছাড়া হোয়াইক্যং আলহাজ্ব আলী উচ্চ বিদ্যালয়, হোয়াইক্যং রেঞ্জ অফিস, বিট অফিস, লাতুরীখোলা সরকারী  প্রাথমিক বিদ্যালয়, দৈংগ্যাকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আদিবাসী এলাকার একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুরিখোলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতে এ সড়কটিই একমাত্র মাধ্যম।

ব্যবসায়ী ও হোয়াইক্যং ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের বলেন, সপ্তাহে কয়েকবার কক্সবাজার যেতে হয়। কিন্তু মহাসড়ক দিয়ে যেতে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা সময় ব্যয় হয়। সময় বাঁচাতে হোয়াইক্যং শামলাপুর সড়ক দিয়ে মেরিনড্রাইভ হয়ে অল্প সময়েই কক্সবাজার যাওয়া যায়। বর্তমানে এই সড়কের বেহাল অবস্থা শরীরে ব্যথা চলে আসে। সড়কটির দ্রুত টেকসই উন্নয়নের দাবি জানান তিনি।

সিএনজি চালক নুরুল বশর বলেন, এ পথে হোয়াইক্যং থেকে বাহারছড়া যেতে ১৫ মিনিট সড়কটি আধাঘন্টার বেশী সময় ব্যয় হয়। পাশাপাশি কোনো কোনো সময় সড়কের গর্তে পড়ে যান্ত্রিক গোলযোগে পরতে হয়।

হোয়াইক্যং আলহাজ্ব আলী আছিয়া উচ্চ বিদ্যালয়েল ক্রীড়া শিক্ষক খোকন বড়ুয়া বলেন, এ সড়কটি দিয়ে একাধিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। শিক্ষার্থীরা প্রায়ই সড়ক দূর্ঘটনার কবলে পড়ে। এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহাকারী ভূমি কমিশনারকে একাধিকবার বলা হলেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না বলেও জানান তিনি।

রইক্ষ্যং বিট কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন চৌধুরী ও টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সদস্য আজিজুল হক তাদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে জানিয়ে সড়কটির দ্রুত সংস্কাররের দাবি জানান।

হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ এসআই দীপঙ্কর রায় জানান, এই সড়কে নিয়মিত ডাকাতির ঘটনা ঘটায় পুলিশি টহল দিতে হয়। সড়কটি জরাজীর্ণ হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপদ বিভাগের টেকনাফ অফিসে যোগাযোগ করা হলে প্রকৌশলী নিয়মিত না থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এমনকি অফিস সহকারী মোস্তাক আহমদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

 

সাইসে