মেহেরপুরে বোরো ধানের চারা নষ্ট হতে শুরু করেছে। অতিরিক্ত শীত ও চারা উৎপাদনে দেরি করায় অনেক চারা মারা যাচ্ছে। ফলে চলতি বছর বোরো মৌসুমে চারা সংকটে পড়তে পারেন কৃষকরা। কোল্ড ইনজুরি থেকে চারা রক্ষায় প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধান আবাদ নিয়ে চাষিদের অনিহা থাকার কারণে এবার বীজতলা তৈরিতে দেরি হয়েছে। আবার ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শৈত্য প্রবাহের কারণে অনেক বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ১৫-২০ দিন বয়সী চারার পাতা ও শেকড় শুকিয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়ছে। কোনো কোনো বীজ তলার ৩০ ভাগ, আবার কোনো কোনো বীজ তলার বেশিরভাগ চারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা ধান ক্ষেতে রোপণ করা আর সম্ভব নয়।

রাইপুর গ্রামের চাষি মোকলেছুর রহমান জানান, আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নাগদার খালে চাষিরা মূলত বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করেন। আমন ধান কাটার পর দেরিতে যারা চারা দিয়েছে, তাদের বেশিরভাগ চারার এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এবার বোরো ধান আবাদে চারা সংকটে পড়তে যাচ্ছেন জেলার চাষিরা।

কৃষকরা জানান, সবজি চাষখ্যাত মেহেরপুর জেলায় আমন, আউশ ও বোরো মৌসুমে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জমিতে ধান চাষ হয়। পরিবারের ভাতের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ধান বিক্রি করেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। বিশেষ করে গত বোরো মৌসুমে এ জেলায় রেকর্ড পরিমাণ ধান উৎপন্ন হয়। চলতি বোরো মৌসুমের আগে ধানের দর পতনের ফলে চাষিরা ধান চাষে অনেকটা নিরুৎসাহিত হন। তারপরেও ধান ছাড়া অন্য ফসল ফলে না এমন জমিতে ধান আবাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার তিনটি উপজেলায় এক হাজার ৭২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের বীজতলা রয়েছে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ১৬০ হেক্টর। এ মৌসুমে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার ৮৮৪ হেক্টর। গত মৌসুমে আবাদ হয়েছিল ২৩ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান জানান, ১৫ নভেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বীজতলায় বীজ বপণের উপযুক্ত সময়। অনেক চাষি এ সময়ের পরে বীজতলা তৈরী করেছেন। ফলে তীব্র শীতে কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছে কিছু বীজতলা। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য চাষিদের অবশ্যই আদর্শ বীজতলা তৈরি ও উপযুক্ত সময়ে বীজ বপণ করতে হবে।

এসসি/