• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২, ০৩:২০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২, ০৩:২০ পিএম

সাতক্ষীরার নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে সড়ক সংস্কার

সাতক্ষীরার নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে সড়ক সংস্কার

সাতক্ষীরার শ্যামনগর সদরের গোডাউন মোড়-নুরনগর সড়ক সংস্কারের কাজে নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। রাস্তার দুপাশ বর্ধিত করতে এজিং নির্মাণসহ ডব্লিউবিএম ওয়াটার বন ম্যাকাডাম কাজে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারে সংস্কারকৃত এ সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে স্থানীয়রা হাতাশা প্রকাশ করেছেন। কাজ শেষে বছর না ঘুরতেই এই সড়ক ফের ভাঙনমুখে পড়বে বলেও তাদের দাবি।

জানা গেছে, এলজিইডির তত্ত্বাবধানে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে গোডাউন মোড়-নুরনগর সড়কে ৩ হাজার ৮০০ মিটার জায়গায় সংস্কার (জিওবি মেইনটেন্যান্স) কাজ শুরু হয়েছে। ছয় মাস সময়সীমা থাকলেও সামনের দুই-তিন মাসের মধ্যে সীমান্তবর্তী এলাকাকে সংযুক্ত করা এ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, কাজের শুরুতে অতি নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার হলেও তদারকি কর্তৃপক্ষসহ জনপ্রতিনিধি এমনকি প্রশাসনেরও ন্যূনতম কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। উপকরণের মান নিয়ে স্থানীয়রা নিজেদের আপত্তি জানালেও ঠিকাদারের লোকজন তাতে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করছে না।

মাহমদুপুর গ্রামের বাসান্দিা ফজল হোসেন ও আব্দুর রহিম জানান, সড়কের দু’পাশের বর্ধিত অংশে যে খোয়া (ইটের টুকরা) ফেলা হচ্ছে তা সামান্য চাপে ধুলায় পরিণত হচ্ছে। এছাড়া এজিং এর কাজে ব্যবহার করা ইট এতটা নিম্নমানের যে হাতে ধরার পরপরই তার অনেকগুলো ভেঙে যাচ্ছে। এভাবে সংস্কার করা হলে বছর না ঘুরতেই দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্তঘেঁষা গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি আবারও চলাচলের অযোগ্য হয়ে যাবে বলেও দাবি তাদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, গোডাউন মোড় থেকে সোয়ালিয়া ব্রিজ পর্যন্ত ইতোমধ্যে এজিং (দু’পাশের বর্ধিত অংশ ইট দিয়ে আটকে দেয়া) সম্পন্নের পর বর্ধিত অংশে খোয়া (ইটের টুকরা) ফেলে রোলিংয়ের কাজ চলছে। এছাড়া গোডাউন মোড় থেকে যাদবপুর মোড় পর্যন্ত সড়কে হার্ড বেড প্রিপারেশনের কাজও এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। এসব কাজে যে ইট ও খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে তা অতি নিম্নমানের। উপকরণের মানের বিষয়ে জানতে চাইলে কোন মন্তব্য না করে কর্মরত শ্রমিকরাও জানান, ঠিকাদারের পক্ষ থেকে সরবরাহকৃত উপকরণ দিয়ে তারা কাজ করছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, যেনতেনভাবে কাজ করায় মাত্র গত তিন-চার বছরের ব্যবধানে সড়কটি ভঙনের মুখে পড়ে। দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশী সময় ধরে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে থাকার পর সম্প্রতি কাজ শুরু হলেও নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের ফলে নিশ্চিতভাবে বলা যায় তা বেশীদিন টিকবে না। সীমান্তবর্তী কৈখালী ও নুরনগরের মত গুরুত্বপূর্ণ জনপদে ভারী যানবাহন চলাচলের একমাত্র এ সড়কের সংস্কার কাজে মন্ত্রণালয়সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপেরও দাবি জানান তারা।

জানা গেছে, খুলনার একটি প্রভাবশালী মহল এই কাজের দায়িত্বে রয়েছে। এটিসি ও এসআরটি নামীয় দুটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজটি পরিচালনা করছেন। গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সংস্কার কাজের শুরুতে নিম্নমানের ইট খোয়া ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান মিস্ত্রি নাম প্রকাশ না করে বলেন, একটা রাস্তা কি সারাজীবন যাবে নাকি। আপনাদের কিছু বলার থাকলে ঠিকাদারকে বলেন।

কাজের দায়িত্ব পাওয়া প্রতিষ্ঠানের মালিক নিজেকে সোহেল পরিচয় দিয়ে বলেন, এজিং এর কাজে কোন নিম্নমানের ইট দেয়া হচ্ছে না। তাছাড়া বাইরে থেকে ইট ভেঙে প্রস্তুককৃত খোয়া নিয়ে আসায় কিছু ডাস্ট আসছে। 

শ্যামনগর উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুজ্জামান সোহাগ ফোন রিসিভ না করলেও উপসহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মানিক হোসেন নিজেও বিষয়টি সরেজমিনে দেখেছেন। তিনি ঠিকাদারকে কর্মস্থলের পাশে ইট এনে ভাঙার নির্দেশনা দিয়েছেন। মানসম্পন্ন কাজ করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে সতর্কও করা হয়েছে।

জাগরণ/আরকে