• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২, ০১:০০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২, ০১:০০ পিএম

মুক্তিপন না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে হত্যা

মুক্তিপন না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে হত্যা

নরসিংদীর মনোহরদীর একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের হুগোলিয়াপাড়া এলাকার রূপচান মিয়ার খড়ের গাদার পাশ থেকে অজ্ঞাত এক যুবকের মরদেহের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। সেই অজ্ঞাত যুবকের নাম মিঠু মিয়া (২৪), তার বাড়ি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রায়পুর রেলওয়ে কলোনি এলাকায়। তার বাবার মুসলিম উদ্দিন। তিনি শাড়ির ব্যবসা করতেন।

বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) মিঠু মিয়া শাড়ি কেনার উদ্যেশে নরসিংদী আসার পর অপহরনের শিকার হন। আর এই খবর জানতে পেরে মিঠুর বোন মিনু আক্তার সিরাজগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

নিহত মিঠুর বোন মিনু আক্তার জানান, বুধবার ভোরে শাড়ি কেনার জন্য নরসিংদীর উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয় মিঠু। সন্ধ্যায় মায়ের মোবাইলে নরসিংদী পৌঁছার কথা নিশ্চিত করে মিঠু। ওই দিন রাত ৮টার দিকে আবারও ফোন দিয়ে জানায়, কয়েকজন লোক তাকে অপহরণ করে করে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করছে। অপহরণকারীরা মিঠুকে মারধর করে মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে দ্রুত টাকা পাঠাতে বলে। এ ঘটনার বিষয়ে ওই দিন রাতেই অপহৃত মিঠুর পরিবার থেকে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।

ওই দিন রাত প্রায় ১১টার দিকে মিঠু মিয়া তার মাকে ফোন করে জানায়, বাড়ি থেকে তোমরা টাকা দিতে পারনি।তাই ওরা মনে হয় আমাকে আর বাঁচিয়ে রাখবেনা। এসময় অতীত সময়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

অপরদিকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি মিঠুর কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে মিঠুর বোনকে বলেন, যেহেতু টাকা দিতে পারসনি তাই তোর ভাইকে আর বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। মিঠুর লাশ খুঁজে নিস। এ কথা বলার সাথে সাথেই মোবাইল বন্ধ করে দেয়।  

বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে মিঠুর খোঁজে তার পরিবারের পক্ষ থেকে লোকজন নরসিংদীর উদ্দেশে রওনা দেন। সকাল ১০টার দিকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি মিঠুর মোবাইল থেকে বোন মিনুকে ফোন দিয়ে পুনরায় মুক্তিপণ দাবি করে। এ সময় বোন মিনু তার ভাই মিঠুর সাথে কথা বলতে চাইলে অপহরণকারী আগে টাকা দাবি করে। আর টাকা না দিলে কথা বলতে দেবেনা জানিয়ে পুনরায় মোবাইল বন্ধ করে দেয়। 

বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সিরাজগঞ্জের পরিচিত এক গণমাধ্যমকর্মীর মাধ্যমে জানতে পারেন, মনোহরদীতে অজ্ঞাতনামা এক যুবকের মরদেহ উদ্ধারের খবর। এ খবর পেয়ে মিঠুর মা-বোন দ্রুত মনোহরদী থানায় চলে আসেন। পুলিশের মোবাইলে ধারণকৃত ছবি দেখে মিঠুর মরদেহ শনাক্ত করেন তার পরিবারের সদস্যরা।  

পরবর্তীতে বোন মিনু আক্তার বাদী হয়ে মনোহরদী থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে মনোহরদী উপজেলার একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের হুগোলিয়াপাড়া এলাকার রূপচান মিয়ার খড়ের গাদার পাশ থেকে মিঠু মিয়ার মরদেহ অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার করে থানা পুলিশ। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেন। যুবকের গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। 

মনোহরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আনিচুর রহমান জানান, পুলিশের একাধিক দল ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হত্যাকারীরা অন্য কোথাও মিঠুকে হত্যা করে এখানে মরদেহ ফেলে গেছে। বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে কাজ করছে পুলিশ।

জাগরণ/আরকে