• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২২, ০২:১৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২২, ০২:১৩ পিএম

পড়তে চাওয়ায় সন্তানসহ তালাকের চিঠি 

পড়তে চাওয়ায় সন্তানসহ তালাকের চিঠি 

নরসিংদী রায়পুরায় লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চাওয়ায় ৫ মাসের শিশু সন্তানসহ নাজিয়া ইসলাম সেতু নামে এক গৃহবধূকে তালাক দিয়েছে তার স্বামী শাহজালাল আহমেদ।

রায়পুরা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মাহমুদাবাদ গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে শাহজালাল আহম্মেদের সাথে ২০২১ সালের ১৫ জানুয়ারি পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই উপজেলার সররাবাদ গ্রামের গোলাম মোস্তাফা মিয়ার বড় মেয়ে সেতুর।

নাজিয়া ইসলাম সেতুর পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়,  নারায়ণপুর সরাফত উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ ৫ পাওয়ার পর নরসিংদী মডেল কলেজ থেকে এইচএসসিতেও জিপিএ ৫ পেয়ে পাশ করে সেতু। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কোচিং করার সময় ছেলে পক্ষের কাছ থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসে তার জন্য। লেখাপড়া বন্ধ না করার প্রতিশ্রুতিতে পরিবার সেই বিয়ে দিতে রাজি হয় এবং তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।

তারা বলেন, বিয়ের পর কিছুদিন ভালোমতোই চলছিলো সংসার। কিছুদিন পর সেতুর গর্ভে সন্তান আসলে সেই সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দেয় শ্বশুর ফরিদ মিয়া। কিন্তু এতে রাজি হয়নি গৃহবধূ। এছাড়া কোচিং শেষ পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যারয়ে ভর্তি হতে চায় সে। এতে ক্ষিপ্ত হয় শ্বশুর ফরিদ মিয়া। পরে বাবার চাপে স্বামী শাহজালালও লেখাপড়া করাতে রাজি নয়। যার জন্য তাকে সারাদিন কাজের উপড় রেখে শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর সেই নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। সারাদিন শিশুকে মায়ের কাছ থেকে আলাদা করে রাখে। একমাত্র রাতে মায়ের বুকে সন্তানকে তুলে দেয়। এতেও সেতু বাধ্য হয়ে স্বামীর সংসার করতে থাকে। এরইমধ্যে শাহজালালের ব্যবসার নাম করে সেতুর বাবার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা এনে দিতে বলে। এতে সেতু রাজি না হওয়ায় সেতুকে ফুসলিয়ে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এরপর নোটারির মাধ্যমে ৯ ফেব্রুয়ারি সেতুর বাবার বাড়িতে ডাকযোগে একটি তালাক নামা পাঠিয়ে দেয়া হয়। তাতে সেতুকে তালাক দেয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়।

এ ঘটনায় ১০ ফেব্রুয়ারি নরসিংদী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বামী শাহ জালাল আহাম্মেদসহ ৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ।

প্রথমে যৌতুক নিরোধ আইন এবং পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আরো একটি মামলা দায়ের করেন ওই গৃহবধূ। মামলার অন্য আসামিরা হল- শ্বশুর ফরিদ মিয়া ও শাশুড়ি রিনা বেগম।

এই পরিস্থিতিতে ৫ মাসের সন্তানসহ সেতু এখন বাবার বাড়িতে কষ্টে জীবন যাপন করছেন বলে জানান। এখন সন্তানের ভবিষ্যতের চিন্তায় দিন যাচ্ছে তার।  

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে শাহজালালের বাবা ফরিদ মিয়া জানান, আমার ছেলের সাথে সেতুর বনিবনা ছিলনা। প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকতো। তাছাড়া কিছু বিষয়ে আমার সাথে বেয়াদবিও করেছে সে। আমার ছেলের ইচ্ছাতেই সেতুকে তালাক দেয়া হয়েছে।

জাগরণ/আরকে