• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২২, ১০:২৫ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ১, ২০২২, ১০:২৫ এএম

ছাত্রলীগ না করায় শিক্ষার্থীকে নির্যাতন

ছাত্রলীগ না করায় শিক্ষার্থীকে নির্যাতন

ময়মনসিংহ ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি না করায় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ওয়ালিদ নিহাদ নামে এক শিক্ষার্থীকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এনিয়ে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৩২৪ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। 

সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে তাকে ত্রিশাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে স্থানান্তর করেন। 

তার সহপাঠীরা বলেন, নিহাদকে রাত দেড়টার পর ধরে নিয়ে গিয়ে পিঠে ও মাথায় গুরুতর আঘাত করা হয়েছে। অত্যাচারের শিকার হয়ে সে বেশ কয়েকবার বমি করেছে। ছাত্র উপদেষ্টা তপন কুমার সরকার বলেন, নিহাদ এখন ময়মনসিংহ মেডিকেলে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ নিহাদ বলেন, আমি কেন ছাত্রলীগের গ্রুপ ভিত্তিক রাজনীতি করি না এ অভিযোগেই মূলত আমাকে ডাকা হয়। আমাকে নানাভাবে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে আমার হাতে রামদা ধরা হয়। খালেদা জিয়ার ছবি আমার ফেসবুকে আপলোড দেয়ানো হয়। আমার একটা ভিডিও ধারণ করে জোরপূর্বক বলানো হয়, ২০২৩ সালের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। তারেক জিয়া দেশে ফিরবে। তখন ক্যাম্পাসে কোনো ছাত্রলীগের কুত্তা থাকবে না। 

ওয়ালিদ নিহাদ রেজিস্ট্রার বরাবর একটি আবেদন জমা দেয় যেখানে সে বলে, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের পলাশ ভাই আমাকে হলে নিয়ে যায় এবং যাওয়ার সাথে সাথে আমাকে থাপ্পড় মারে নাট্যকলা বিভাগের হিমেল ভাই। আমার বিভাগের তুহিন ভাই, মুমিন ভাই, ইইই বিভাগের অ্যালেক্স সাব্বির ভাই, তানভীর ভাইসহ আরো ৫/৬ জন টানা লাথি ঘুষি মারতে থাকে। সাথে ফোকলোর বিভাগের যাযাবর নাঈম (আবু নাঈম আব্দুল্লাহ) ভাই লাথিঘুষি মারতে থাকে। গলায় ও বুকের ওপর দাঁড়িয়ে অনেক মেরেছে নাঈম ভাই। আমি কেন রাকিব ভাইয়ের রাজনীতি করি না। আমি নাকি অন্যদেরও রাজনীতি করতে বাধা দিয়েছি, যা ভিত্তিহীন। আমার পারিবারিক সমস্যার কারণেই আমার রাজনীতি করা সম্ভব নয়। আমি পড়াশোনা নিয়েই থাকতে চাই। কিন্তু আমাকে ক্যাম্পাসে থাকতে হলে নাকি রাজনীতি না করে উপায় নাই। 

নিহাদ আরো বলেন, এক পর্যায়ে নাট্যকলার হিমেল ভাই আমার হাতে রামদা দিয়ে আমাকে যাযাবর নাঈম ভাইয়ের কাছে রাজনীতি করবো বলে পা ধরে মাফ চাইতে বলে। এরপর আমার প্রোফাইলে খালেদা জিয়ার ছবি আপলোড দেয়ানো হয়, যা আমি পরে ডিলিট করি। একটি ভিডিও বানায় হাতে রামদা দিয়ে জোরপূর্বক বলানো হয়, ২০২৩ সালের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। তারেক জিয়া দেশে ফিরবে। তখন ক্যাম্পাসে কোনো ছাত্রলীগের কুত্তা থাকতে পারবে না। কোনো শিক্ষকের কাছে বিচার নিয়ে যাবি না। রাকিব ভাই চাইলে ভিসি পরিবর্তন হয়। বেশি কথা বললে ক্যাম্পাসে পড়াশোনা করতে পারবি না, আবরারের মত মরবি।

এনিয়ে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের দরজা আটকে আন্দোলন করছে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপরাধীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে আল্টিমেটাম দেয় আন্দোলনকারীরা। 

এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট মাসুম হাওলাদার বলেন, এ ঘটনাটি আমি সকালে জানতে পেরেছি। আমরা এটা নিয়ে কাজ করবো। হল সম্পর্কিত আমার এখতিয়ারের মধ্যে যা আছে সে বিষয়ে আমরা তোমাদের দাবি পূরণ করবো।

প্রক্টর প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন, আমাদের ২৪ ঘন্টা সময় দাও। আইন দ্বারা আমরা যা করতে পারবো তা মঙ্গলবার দুপুরে এই সময়ে আমরা তোমাদের সামনে উপস্থিত হবো।

জাগরণ/আরকে