• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০২২, ০৮:১১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ২১, ২০২২, ০৮:১১ পিএম

শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ

শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ
ছবি- জাগরণ।

বাঞ্ছারামপুর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)প্রতিনিধি// 

# ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে বিদ্যালয় ভাঙচুর

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন আহমেদের নের্তৃতে বিদ্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। 

আজ সোমবার দুপুর একটার দিকে উপজেলার ধারিয়ারচর হাজী উমরআলী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে বিষয়টি জানাজানি হলে গত ১৭ মার্চ স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমেনা বেগম অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষককে ওই ছাত্রীকে গোপনে অনৈতিক সর্ম্পক করে বিয়ে করেছেন এই মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।

স্থানীয় লোকজন সূত্রে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা, শ্রমিক লীগের যুগ্ম-আহবায়ক মহিউদ্দিন সহ শতাধিক বহিরাগতদের নিয়ে সোমবার দুপুরে বিদ্যালয়ে যান। সে সময় বিদ্যালয়ে ক্লাস চলছিল। শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে বাইরের মাঠে নিয়ে যায়। বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন অভিযোগ তুলে ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদেরও নিয়ে তারা মানববন্ধন করে। মানববন্ধন শেষে বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের হাসনাহেনা একাডেমিক ভবনের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষের দরজা-জানালা ভাঙচুর করে।

এসময় শিক্ষার্থীদেরও হাতে লাঠি-শোটাসহ, স্কেল, কাঠ, বাঁশ. ইট ও পাইপ ছিল। খবর পেয়ে বাঞ্ছারামপুর থানা পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম একই বিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীকে বিয়ে করেছেন বলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানতে পারে। 

গত ১৭ মার্চ সন্ধ্যায় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিদ্যালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য আশরাফ উদ্দিনকে আহবায়ক করে তিন সদস্যেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পাশাপাশি সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলামকে এ ঘটনার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। তদন্ত কমিটি ও শফিকুল ইসলামকে ১০ দিনের সময় দেয়া হয়। 

সোমবার সকালে শিক্ষার্থীদের পরিবারের দুই সদস্য সহকারী শিক্ষক শফিকুলের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক আমেনা বেগমের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।  অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সহকারী শিক্ষক শফিকুল প্রায় দেড় মাস আগে প্রাইভেট পড়ানোর সময়ে কক্ষে এক পেয়েও ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন। একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমেনা বেগম বলেন, গত ১৭ মার্চ সন্ধ্যায় আমরা সভাকক্ষে ঘটনা যাচাই করতে তদন্ত কমিটি গঠন সহ শিক্ষক শফিকুলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। আমরা এখনো ঘটনার কিছুই জানিনা। তিনি বলেন, সোমবার উপজেলায় পৌছার পরপরই জানতে পারি, ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন আহমেদ স্থানীয় লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ে আসেন। আমি তাকে অপেক্ষা করতে বলেছিলাম। এরমধ্যেই তিনি শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষ থেকে করে বের করে শিক্ষার্থীদেও নিয়ে মানববন্ধন করে। পরে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে বলে শিক্ষকরা আমাকে জানিয়েছে। 

মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের বিষয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থানা না নেয়ায় স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে শিক্ষকের বিচারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেছে। পরে বিদ্যালয়ের ছাত্ররা ভাঙচুর করেছে বলে শুনেছি।

বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাজু আহম্মেদ জানান, ঘটনার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম, বর্তমানে পুলিশ এলাকায় রয়েছে। এখনও স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও অভিযোগ দেয়নি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা শমসাদ বেগম জানান, স্কুলের ভাঙচুরের খবর পেয়ে আমি ও ওসি সাহেব গিয়েছিলাম, ওসি সাহেবকে আমি দায়িত্ব দিয়ে এসেছি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে।

 

এসকেএইচ//