• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯, ১১:০৩ এএম

সাটুরিয়ায় ধর্ষণ মামলায় সেই ২ পুলিশ কর্মকর্তার ৬ দিনের রিমান্ড

সাটুরিয়ায় ধর্ষণ মামলায় সেই ২ পুলিশ কর্মকর্তার ৬ দিনের রিমান্ড
দুই পুলিশ কর্মকর্তা- ছবি: জাগরণ

 

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় এক তরুণীকে বাংলোতে আটকে রেখে ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে পাঠানো দু’জন হলেন- উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাজহারুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মানিকগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সাত নম্বর আদালতে তাদের হাজির করে। এরপর ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার তাদের ছয় দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মহিউদ্দিন আহমেদ  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আজ সকালে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ওই তরুণী বাদী হয়ে মামলা করেছেন বলে জানান মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) রিফাত রহমান। মামলার বাদী তরুণীর বাড়ি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায়। তিনি বাবার সঙ্গে ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় থাকেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ঢাকার আশুলিয়া থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় এসআই সেকেন্দার হোসেনের সঙ্গে আশুলিয়ার এক নারীর পরিচয় হয়। ওই নারীর প্রতিবেশী এ তরুণী।

এই পরিচয়ের সূত্র ধরে পাঁচ-ছয় বছর আগে জমি ব্যবসার জন্য ওই নারী সেকেন্দারকে এক লাখ টাকা দেন। পরে জমি বিক্রি করে তার অংশের লভ্যাংশসহ তিনি সেকেন্দারের কাছে তিন লাখ টাকা পাওনা হন। তবে দীর্ঘ দিনেও তার সব টাকা পরিশোধ করা হয়নি। এ কারণে ওই টাকার জন্য তিনি মাঝে মধ্যে সাটুরিয়া থানায় সেকেন্দারের কাছে যেতেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

ওই তরুণী বলেন, গত বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে তিনি পরিচিত ওই নারীর সঙ্গে নিয়ে সাটুরিয়া থানায় যান। থানায় যাওয়ার পর সেকেন্দার তাদেরকে থানার পাশে জেলা পরিষদের ডাক বাংলোর ভেতরে নিয়ে যান। সেখানে একটি কক্ষে বসে পাওনা টাকার বিষয়ে কথাবর্তা বলার সময় এএসআই মাজহারুল সেখানে উপস্থিত হন। এরপর ওই নারীকে কক্ষে নিয়ে আটকে রাখা হয়।

এরপর তাকে পাশের একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে ওই কর্মকর্তারা ইয়াবা সেবন করেন। এ সময় তাকেও ইয়াবা সেবনে বাধ্য করা হয়। ইয়াবা সেবনের পর তিনি অসুস্থবোধ করেন। এরপর থেকে শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত ওই কক্ষে আটকে রেখে ওই দুই কর্মকর্তা তাকে কয়েক দফায় ধর্ষণ করেন।”

এসপি রিফাত রহমান সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে দুই পুলিশ সদস্যকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। এরপর রোববার ওই তরুণী তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

এসপি বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনা তদন্তে দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) হাফিজুর রহমান এবং জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হামিদুর রহমান সিদ্দিকী।

হাফিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় প্রাথমিক তদন্ত করা হয়। তদন্তে ওই দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

এদিকে সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতেই ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) লুৎফর রহমান।

তিনি বলেন, তিনিসহ চার সদস্যবিশিষ্ট একটি চিকিৎসক দল ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করেন। আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

সাটুরিয়া থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় সোমবার রাতে ওই তরুণী বাদী হয়ে অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

টিএফ