• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০১৯, ০৯:৫৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২১, ২০১৯, ০২:৪২ পিএম

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা

ইন্টারপোলের নোটিশে আনা যাচ্ছে না তারেক-তাজউদ্দীন ও কায়কোবাদকে

ইন্টারপোলের নোটিশে আনা যাচ্ছে না তারেক-তাজউদ্দীন ও কায়কোবাদকে

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় হত্যাযজ্ঞের ১৫ বছর হলেও দেশে ফেরত আনা যায়নি ঘাতকচক্রের হোতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জঙ্গি নেতা মাওলানা তাজ উদ্দিন ও বিএনপি সাবেক সংসদ সদস্য মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদকে। ঘটনার  দীর্ঘ ১৫ বছরের মধ্যে প্রায় ১০ বার তাদের নাম ও ছবি সম্মিলিত প্রোফাইল ইন্টাপোলে দেয়া হয়েছে। ইন্টারপোল  তাদের অবস্থান ও তথ্য সংগ্রহের জন্য রেড নোটিশও দিয়েছে। তারপরও তাদেরকে দেশে ফেরত আনতে অনেকটা বেগ পেতে হচ্ছে।  

জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের মধ্যে অন্যতম বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জঙ্গি নেতা মাওলানা তাজউদ্দিন এবং মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ। এদের মধ্যে তারেক রহমান বর্তমানে লন্ডনে ও তাজউদ্দিন দক্ষিণ আফ্রিকায় এবং কায়কোবাদ পাকিস্তানে অবস্থান করছেন। ইতোমধ্যে তাদের দেশে ফেরাতে নানা কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যর্থ হতে চলেছে। এমনকি আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল তাদের গ্রেপ্তারে রেড অ্যালার্ট জারি করলেও তাদের ফেরানো সম্ভব হয়নি।

জানা গেছে, আফগান ফেরত মুজাহিদদের নিয়ে বাংলাদেশে গড়ে তোলা হয় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলাম (হুজি-বি)। ২০০০ সাল ও তার পরবর্তী পাঁচ বছর এই জঙ্গি সংগঠনটি ভয়ানক হয়ে ওঠে। ওই পাঁচ বছরে তারা শতাধিক মানুষ হত্যাসহ ১৩টি গ্রেনেড হামলা চালায়। এর মধ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট  বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশে গ্রেনেড হামলা অন্যতম। অভিযোগ রয়েছে, পরবর্তী সময়ে ওই হামলার তদন্তকে ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করে বিএনপি-জামায়াত সরকার। আর সেটিরও নেতৃত্ব দেন বর্তমানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। পরবর্তী সময়ে আসামিদের স্বীকারোক্তিতে ও্ই হামলায় তারেক রহমানের সমর্থন থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। আর অভিযোগ প্রমাণিত হাওয়ায় গত বছর ১৯ জনকে ফাঁসি, তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন এবং বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন আদালত। ১৮ জন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এখনো পলাতক রয়েছেন।

এদিকে গ্রেনেড হামলা মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল দৈনিক জাগরণকে বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনা হয় তারেক রহমানের হাওয়া ভবনে। তিনি এই ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারী। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া এই আসামি দীর্ঘদিন লন্ডনে পালিয়ে আছেন।

এই মামলার রায় হওয়ার আগেই আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি হয় তারেক রহমানসহ সংশ্লিষ্ট ৩ জনের নামে। পরে এ মামলার রায়ের পর দ্বিতীয়বারের মতো তাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করে সংস্থাটি। তবে কোনো নোটিশেই তাদের দেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়নি। একইভাবে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও হুজির শীর্ষ নেতা মাওলানা তাজউদ্দিন দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থান করছেন। পাশাপাশি অপর আসামি কায়কোবাদ পাকিস্তানে আত্মগোপনে রয়েছেন। তাকেও ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না।

ইন্টারপোলের রেড নোটিশের পরও পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল দৈনিক জাগরণকে বলেন, বিদেশে পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে আমরা ইন্টারপোলের সহযোগিতা নিয়ে থাকি। আগেও ৩-৪ জন আসামিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোল আমাদের সহায়তা করেছে। আশা করছি, সংস্থাটির সহায়তায় বাকিদেরও ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।

এইচ এম/টিএফ

আরও পড়ুন