• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০১৯, ০৬:১৪ পিএম

আলাউদ্দিন আলীর অবস্থার অবনতি

আলাউদ্দিন আলীর অবস্থার অবনতি

 

সুরসম্রাট আলাউদ্দিন আলীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে আজ (২৫ জানুয়ারি) সকালের দিকে। দ্রুত তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল হাসপাতালের আইসিওতে চিকিৎসাধীন আছেন। তাকে সার্বক্ষণিক দেখশোনা করছেন স্ত্রী ফারজানা মিমি।

হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী জানান, সকাল সাতটার পর আলাউদ্দিন আলীর রক্তে কার্বনডাই অক্সাইডের মাত্রা বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে রক্তচাপ ও জ্ঞান দ্রুত হ্রাস পায়। যার কারণে তার হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হলে তার হৃৎস্পন্দন ফিরে আসে।

ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী জানান, এখন আলাউদ্দীন আলীর শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থির আছে। তবে তা আশানুরুপ নয়। যে কারণে তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়। ব্যাপারটি তার পরিবারকেও জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

আলাউদ্দীন আলীর স্ত্রী ফারজানা মিমি জানান, আলাউদ্দিন আলী দীর্ঘ দিন যাবত ফুসফুস ক্যান্সারসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি শ্বাসকষ্টের কারণে ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া ও ঘুমাতে পারতেন না। এরমধ্যে গত ২২ জানুয়ারি রাতেই তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপের দিকে গেলে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে ভর্তির পরপরই তাকে লাইফ সাপোর্ট দেয়াতে তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। গত কয়েকদিন তার শারীরিক অবস্থা স্থির থাকলেও আজ সকালের দিকে আবারো অবনতির দিকে গড়াতে থাকলে লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়।

আলাউদ্দীন আলী বাংলা চলচ্চিত্রের অসংখ্য জনপ্রিয় গানের সৃষ্টা। প্রায় তিন শতাধিক চলচ্চিত্রের গানে সুরারোপ করেন তিনি। বেতার, টেলিভিশন, অডিও অ্যালবাম এবং চলচ্চিত্র মিলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার গানের সুরকার আলাউদ্দিন আলী। তিনি একাধারে গীতিকার, সুরকার, বেহালাবাদক ও সঙ্গীত পরিচালক। গান রচনা ও সুর সৃস্টি করে আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন। এরমধ্যে ১৯৭৯, ১৯৮০ এবং ১৯৮১ সালে পরপর তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে হ্যাট্রিক করেন। এছাড়াও তিনি একাধিকবার বাচসাস পুরস্কার, ট্র্যাব অ্যাওয়ার্ড, বিসিআরএ পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন। তার জন্ম ১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী থানার বাঁশবাড়ী গ্রামে। তার বাবা ওস্তাদ জাদব আলীর ও চাচা সাদেক আলীর কাছেই তার সঙ্গীতে হাতেখড়ি। ১৯৬৮ সালে তিনি আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে যন্ত্রশিল্পী হয়ে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন।

আলাউদ্দিন আলীর সুরারোপিত গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে- একবার যদি কেউ ভালোবাসতো, এমনও তো প্রেম হয় চোখের জলে কথা কয়, সুখে থাকো ও আমার নন্দিনী হয়ে কারও ঘরনি, দুঃখ ভালোবেসে প্রেমের খেলা খেলতে হয়, যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়, হয় যদি বদনাম হোক আরো, বন্ধু তিন দিন তোর বাড়ি গেলাম দেখা পাইলাম না, প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ, ভালোবাসা যতো বড়ো জীবন তত বড় নয়, আছেন আমার মোক্তার, আছেন আমার ব্যারিস্টার, সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ, যেটুকু সময় তুমি থাকো কাছে মনে হয় এ দেহে প্রাণ আছে, ইত্যাদি কালজয়ী গান।

এসজে