• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০১৯, ০৮:৪০ এএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৩, ২০১৯, ০৮:৪৭ এএম

ডেঙ্গু জ্বরের প্রভাবে ঢাকায় চাহিদা বেড়েছে লেবু-ডাবের

ডেঙ্গু জ্বরের প্রভাবে ঢাকায় চাহিদা বেড়েছে লেবু-ডাবের
ডেঙ্গু জ্বরের প্রভাবে বিক্রি বেড়েছে লেবুর, ছবি- কাশেম হারুন


ডেঙ্গু জ্বরের প্রভাবে ঢাকায় লেবু ও ডাবের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। অবশ্য খুচরা পর্যায়ে ডাবের মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও লেবুর দাম বাড়েনি। বরং লেবু বিক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে!

শুক্রবার সরেজমিনে ঢাকার কয়েকটি বাজার, পাড়ামহল্লার স্থায়ী সবজি-ডাব বিক্রেতা ও বিভিন্ন হাসপাতালের নিকটস্থ ডাব বিক্রেতার কাছ থেকে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে। ডেঙ্গুজ্বরাক্রান্তদের বেশি বেশি ডাবের পানি, লেবুর রস-শরবত খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এর মাধ্যমে রোগী সতেজতা অনুভবের সম্ভবনা থাকে। পাশপাশি রক্তের প্লাটিলেট বৃদ্ধি, রুচিশক্তি বৃদ্ধিতেও কাজ করে লেবুর রস ও ডাবের পানি।

লালমাটিয়াস্থ সিটি হাসপাতালের পাশে ডাব বিক্রি করেন রফিক মিয়া। ওই হাসপাতালের রোগী ও রোগীর স্বজনরাই তার প্রধান ক্রেতা। শুক্রবার দুপুরে ডাবের সাথে লেবুও পাওয়া যায় রফিকের দোকানে। একটি প্রশ্নে তিনি বলেন, এই হাসপাতালে (সিটি হাসপাতাল) ডেঙ্গুর রোগীর লোকজন লেবু কই বেচে জানতে চায় আমার কাছে। এক মোহাম্মদপুর বাজার ছাড়া কাছে কোনো জায়গা নাই। পরে ভাবলাম- লেবুই তো, আমিই রাখা শুরু করি। মানুষেরও উপকার হইলো, আমার ইট্টু ব্যবসাও হইলো।

প্রায় ১০ দিন ধরে প্রতি হালি রসাল, কাগজি লেবু রফিক বিক্রি করছেন ১০ টাকায়। রফিকের মতন নতুন লেবু বিক্রেতার জন্ম নিয়েছে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালের সামনে বা খুব কাছে।

মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে শুক্রবার বিকালে কথা হয় বেশ কয়েকজন লেবু বিক্রেতার সাথে। বিক্রেতার আনসার আলী বলেন, কোরবানি ঈদের কারণে লেবুর চাহিদা তো আছেই, এখন দেখছি ডেঙ্গু রোগীর লোকজনও লেবু কিনতে আসে। কেনার সময় তারা আমাদের সাথে তার রোগীকে নিয়ে নানা ধরণের কথাবার্তাও বলেন, দোয়া চায়।

কারওয়ান বাজারে পাইকারি দরে লেবু বিক্রি করেন ফরিদ হোসেন। তিনি দৈনিক জাগরণকে বলেন, এই তো গত বুধবার (৩১ জুলাই) এক ডেঙ্গু রোগীর লোক দুই ডজন লেবু কিন্না নিসে আমার কাছ থেইকা। উনি নিজ থেইকাই বলতেসিল যে, তার বোনের ডেঙ্গু হইছে। অবস্থা নাকি ভাল না। ডাক্তার বলছে লেবুর শরবত বেশি বেশি খাওয়াইতে।

দেখা গেছে, ঢাকার বিভিন্ন বাজার ও মানভেদে প্রতি হালি এলাচি লেবু ২০-২৫ টাকা, কাগজি লেবু ১০-২৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। হাতিরপুল বাজারের লেবু বিক্রেতা আনোয়ার একটি প্রশ্নে বলেন, লেবুর দাম বাড়ে নাই। কিন্তু বিক্রি বাড়ছে।

ডেঙ্গুরোগীদের স্বজন তার কাছ থেকেও লেবু নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন আনোয়ার। তিনি বলেন, যদি ডেঙ্গু রোগীর লোকজন লেবু না নিতো, তাহলে এখন লেবুর বিক্রির পরিমাণ বাড়তো না বলে মনে হয়।

আনোয়ারের এই কথার মতন কথা বলেন, মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারের লেবু বিক্রেতা আনসার আলী, কাওরান বাজারের ফরিদ হোসেন।

অন্যদিকে, ঢাকার হাসপাতালগুলোর সামনে বা আশপাশে ডাব বিক্রির পরিমাণ বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। লালমাটিয়াস্থ সিটি হাসপাতালের পাশে ডাব বিক্রেতা রফিক মিয়া বলেন, ভালই বাড়ছে বিক্রি। দামও একটু বাড়ছে। আগে যেটা ৪০টাকা বেচতাম সেটা এখন ৫০, আগে যেটা ৫০ টাকা বেচতাম সেটা এখন ৬০টাকা বিক্রি করা লাগতেসে। পাইকারিতেই দাম বাড়ছে দেইখা এই দামে বেচা লাগতাসে।

মহাখালীর আমতলী ঈদগাহ মাঠের ভেতর কিছু ডাব বিক্রির দোকান আছে। একটি দোকানের বিক্রেতার লুৎফর বলেন, আমার এখানে একজন লোক প্রতিদিন আসে, পাঁচ লিটারের বোতল ভইরা নিয়া যায় ডাবের পানি দিয়া। এই পানি নাকি তার বড় ছেলেকে খাওয়ায়, ডেঙ্গু হইছে।

ডাবের দাম ও চাহিদা বৃদ্ধির বিষয়ে তিনিও রফিকের মতন কথা বলেন।

আরএম/আরআই
 

আরও পড়ুন