• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৯, ০৩:০৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৯, ০৮:১৯ পিএম

‘বালিশ-পর্দা কাণ্ড ছিঁচকে কাজ, হাওয়া ভবনের সঙ্গে মেলালে চলবে না’

‘বালিশ-পর্দা কাণ্ড ছিঁচকে কাজ, হাওয়া ভবনের সঙ্গে মেলালে চলবে না’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের - ছবি : জাগরণ

‘বালিশ-পর্দা’ কাণ্ডের সঙ্গে বিএনপি আমলের হাওয়া ভবনের লুটপাটকে মেলালে চলবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ‘বালিশ-পর্দা’ কাণ্ডকে ‘ছিঁচকে কাজ’ বলেও এ সময় আখ্যায়িত করেছেন তিনি। 

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফ্রিংয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।  

দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স হলেও রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রে ‘বালিশ কাণ্ড’ ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের ‘পর্দা কাণ্ড’ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সরকারের এই সিনিয়র মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের ছিঁচকে কাজগুলো যারা করে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা কিন্তু কোনো এমপি কিংবা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী নন। এখানে তো হাওয়া ভবনের মতো লুটপাটের বিষয় নেই। যারা এমন অভিযোগ করে, তারা তো দেশটাকেই লুটপাট করে খেয়েছে। এখন কিন্তু সরকারের কোনো বিকল্প সেন্টার নেই। লুটপাটের কোনো ভবন এই সরকারের আমলে নেই, এটা আমি দাবি করে বলতে পারি। বালিশ আর পর্দার সঙ্গে তো হওয়া ভবনের লুটপাটের বিষয়কে মেলালে চলবে না। 

‘জাতীয় পার্টির বিভক্ত দুই গ্রুপ আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে রয়েছে’- এ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে একসময় আমাদের জোট ছিল, তাদের সঙ্গে আমাদের নির্বাচনি জোট থাকলেও আদর্শিক কোনো ঐক্য নেই। 

তিনি আরও বলেন, এখন জাতীয় পার্টি বিরোধী দল। সত্যিকার অর্থে তারা বিরোধী দল হিসেবে শক্তিশালী থাকুক এটা আমরাও চাই। বিরোধী দল নিজেরাই যদি নিজেদের দ্বন্দ্বে দুর্বল হয়ে যায়, এখানে তো আমাদের কিছু করার থাকে না। আমরা চাই- জাতীয় পার্টির ব্যাপারগুলো তারা নিজেরাই মীমাংসা করুক। এখানে প্রধানমন্ত্রীর কোনো দায়িত্ব নেই। জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানোর আমাদের তো দরকার নেই। জাতীয় পার্টিতে কী হয়েছে তা আমাদের দেখার বিষয় নয়। জাতীয় পার্টি তো আওয়ামী লীগের কোনো শাখা সংগঠন নয়, যে এটা আওয়ামী লীগকে দেখতে হবে। এটা তাদের বিষয়, তারাই দেখবে। 

পুলিশের ওপর একাধিকার হামলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, জঙ্গি তৎপরতা একেবারে থেমে গেছে এমন দাবি আমরা কখনও করব না। এখানে ছোটখাট যে ঘটনাগুলো ঘটছে এগুলোকে আমরা মনে করি যে, এগুলো বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে হলেও ওরা হয়তো টেস্ট কেস করছে, বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটনানোর জন্য। ওরা বড় ধরনের কোনো প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন অশঙ্কা করছি। কাজেই আমরা সতর্ক আছি। 

উপজেলা নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগের হয়েও ‘নৌকার’ বিরোধী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তারা শোকজ নোটিস পাচ্ছেন বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে যারা বিদ্রোহী ছিল, তাদের শোকজ করার সিদ্ধান্ত আগে থেকেই ছিল। সেটা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া কীভাবে দ্রুত করা যায়, আজকে সেটা আলোচনা করেছি। আগামীকাল থেকে দেড়শর মতো শোকজ নোটিশ ইস্যু হবে। শোকজের জবাবের জন্য তিন সপ্তাহ সময় দেয়া হবে। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এমপি-মন্ত্রী যারা মদদদাতা তারাও শোকজ পাবে।’ তবে তাদের নাম প্রকাশ করতে না চেয়ে তিনি বলেন, ‘মদদদাতাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতাও থাকতে পারে। যাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ও মদদ দেয়ার অভিযোগ আছে, তারা সবাই শোকজ পাবে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজেই বলেছিলেন, বিএনপি না এলে নির্বাচন উৎসবমুখর করার জন্য প্রার্থিতা উন্মুক্ত থাকবে। তার নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা মাঠে নেমেছি, কিন্তু এখন আবার কেন শাস্তি দেবে?- তৃণমূলের এমন বক্তব্যের বিষয়ে ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী  লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কথা বলেছেন, কোনো রেকর্ড আছে? হাওয়া থেকে বললে তো হবে না।’ পরে ‘১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখের প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন’ উল্লেখ করলে তিনি বলেন, ‘এটা অনেক আগের কথা।’ 
            
সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, অ ফ ম  বাহাউদ্দীন নাছিম, এনামুল হক শামীম, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বি এম মোজাম্মেল হক, উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ। 

এএইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন