• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০১৯, ০৯:২০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২৭, ২০১৯, ০৯:২০ পিএম

সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে রুপালি ইলিশ

সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে রুপালি ইলিশ

৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞা শেষে ট্রলারভর্তি ইলিশ মাছ নিয়ে ফিরছেন জেলেরা। দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞার পর সাগরে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়ায় খুশি তারা।

বঙ্গোপসাগর ও তার মোহনা-সংলগ্ন বিষখালী, বলেশ্বর নদী ও গভীর সমুদ্রে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়ায় বাজার জমজমাট। মৌসুমের শুরুতে ৬৫ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় এত দিন জেলেরা মাছ শিকার করতে পারেননি। 
নিষেধাজ্ঞা শেষে এখন কাঙ্ক্ষিত রুপালি ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুটে উঠেছে জেলে, আড়তদার ও মৎস্যজীবীদের মাঝে। তাই স্বরূপে ফিরেছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র (বিএফডিসি) বরগুনার পাথরঘাটা।

জেলে, আড়তদার ও মাছ ব্যবসায়ীদের এখন দম ফেলার ফুরসত নেই। কেউ ইলিশ মাছের ঝুড়ি টানছেন, কেউ প্যাকেট করছেন, আবার কেউ কেউ সেই প্যাকেট দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে তুলে দিচ্ছেন ট্রাকে। সব মিলিয়ে যেন আনন্দের জোয়ার বইছে।

অন্যদিকে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বরফকলের শ্রমিকরাও। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় উপকূলীয় জেলেপল্লিগুলোতে স্বস্তি ফিরেছে। মাছভর্তি যান্ত্রিক নৌযান কিংবা মাছ ধরার (ফিশিং) ট্রলার নিয়ে জেলেরা গভীর সমুদ্র থেকে হাসিমুখে ফিরছেন। আবার অনেকে মাছ ধরার জন্য ছুটছেন সাগরপানে।

মৎস্য বিভাগ বলছে, মৎস্যসম্পদ বৃদ্ধিতে ৬৫ দিন সাগরে সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেরা সব ধরনের মাছ শিকার থেকে বিরত ছিলেন। নিষেধাজ্ঞা মেনে জেলেদের অবরোধ পালন ফলপ্রসূ হয়েছে। সাগর ও নদীতে ইলিশের পরিমাণ বাড়ছে।

দেশের বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বরগুনার পাথরঘাটায় দেখা যায়, সাগর থেকে ফিরে আসা ইলিশভর্তি ট্রলারগুলো ঘাটে সারিবদ্ধভাবে নোঙর করে আছে। দীর্ঘদিন মাছ ধরতে না পারলেও এখন কাঙ্ক্ষিত রুপালি ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুটে উঠেছে জেলে, আড়তদার ও মৎস্যজীবীদের মাঝে।

শনিবার (২৭ জুলাই) গ্রেড অনুযায়ী মণপ্রতি ইলিশ বিক্রি হয়েছে ফিশিং ১ম গ্রেট ২১ থেকে ২৫ হাজার টাকা, ২য় গ্রেট ১৭ থেকে ১৯ হাজার টাকা। লোকাল ১ম গ্রেট ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা, ২য় গ্রেট ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা, তৃতীয় গ্রেট ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা ধরে কেনাবেচা চলছে। এ ছাড়া এক কেজির বড় সাইজের ইলিশ মণপ্রতি ৫৫ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।

স্থানীয় জেলেরা জানান, ইলিশ মৌসুমের শুরুতেই সরকার ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে। মাছ ধরতে না পেরে জেলেদের না খেয়ে দিন পার করতে হয়েছে এত দিন। ট্রলার মালিকসহ মৎস্য পেশার সঙ্গে জড়িত সবাই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তবে সাগরে এখন প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। সামনের দিনগুলোতে আরো বেশি ইলিশ পাবেন এমনটাই আশা করছেন তারা।

পাথরঘাটার রুইতা এলাকার ট্রলার শ্রমিক বাবুল মিয়া বলেন, ‘ট্রলার সকালেই ঘাটে নোঙর করেছি। এত দিন  মাছ ধরা বন্ধ ছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে গিয়ে যে মাছ পেয়েছি তাতে খুশি। এবার প্রায় ১০ লাখ টাকার মতো মাছ বিক্রি করতে পারব।’

ইলিশের আড়তদার শেখর চন্দ্র বাবু বলেন, সাগর থেকে কিছু ট্রলার ঘাটে আসছে, তাদের প্রত্যেকেই কম-বেশি মাছ পাচ্ছে। বিক্রি করেও ভালোই লাভ করছে তারা। ইলিশের দাম মধ্যম পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান তিনি।

পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মাহ্ফুজুল হাসনাইন জানান, মৎস্যসম্পদ উৎপাদনে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞায় সরকারি আইন বাস্তবায়নে মৎস্য বিভাগের পাশাপাশি প্রশাসনের ব্যাপক ভূমিকা ছিল। বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতা-বিষয়ক সভা-সভাবেশ করা হয়েছে। এতে করে স্থানীয় জেলেদের মধ্যে সচেতনতা এসেছে। নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেরা সব ধরনের মাছ শিকার থেকে বিরত ছিলেন। যে কারণে বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবার ইলিশের উৎপাদন অনেক বেশি। প্রচুর বৃষ্টি হলে আরও বেশি ইলিশ ধরা পড়বে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

এনআই

আরও পড়ুন