• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৯, ০৪:৩৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৯, ০৪:৩৩ পিএম

ভূমিতে অনিয়ম-দুনীতি প্রতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে : টিআইবি

ভূমিতে অনিয়ম-দুনীতি প্রতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে : টিআইবি
টিআইবি লোগো

ভূমিখাতে দুনীতি প্রাতিষ্ঠানিক ও অংশীধারিত্বের রূপ নিয়েছে। দলিল নিবন্ধন ও দুনীতি সমর্থক শব্দে রূপান্তরিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

সোমবার (০৯ সেপ্টেম্বর) ‘ভূমি দলিল নিবন্ধন সেবায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলান।

তিনি বলেন, যারা দুনীতি ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিহ করে আইনের আওতায় আনতে হবে। নতুবা সেবাগ্রহীতাদের আরো বিপাকে পড়তে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে এর আগে ‘ভূমি দলিল নিবন্ধন সেবায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন নিহার রঞ্জন রায় ও শাম্মী লায়লা ইসলাম।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে নিবন্ধন পরিদপ্তর অধিদপ্তরের উন্নিত হয়। তিনটি পার্বত্য জেলা ব্যাতিত এ অধিদপ্তরের অধীনে ৪৯৭টি সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। টিআইবি প্রথম পর্যায়ে দেশের আটটি বিভাগের ১৬টি জেলা রেজিস্ট্রার অফিস ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৬ জেলার ৪১টি সাব-রেজিস্ট্রার অফিস নিয়ে এ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে।

জুলাই ২০১৮ থেকে আগস্ট ২০১৯ সময়কালের মধ্যে এ গবেষণার তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং প্রতিবেদন প্রণয়ন করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হহয়, দলিল নিবন্ধন সেবা প্রদানের মাধ্যমে নিবন্ধন অধিদপ্তর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩৬ লাখ ৭২ হাজার ৪২৮টি নিবন্ধন হয়েছে। এ থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ১২ হাজার ৪৩২ কোটি ৯৯ লাখ ৭২ হাজার ৭৩১ টাকা।

টিআইবি কর্তৃক পরিচালিত সেবা খাতে দুনীতি শীর্ষক খানা জরিপের (১৯৯৭-২০১৭) ফলাফল অনুযায়ী ৪২.৫ শতাংশ খানা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে সেবা গ্রহণের সময় দুর্নীতির শিকার হয়। এর মধ্যে ২৮.৩ শতাংশ খানাকে গড়ে ১১ হাজার ৮৫২ শতাংশ ঘুষ দিতে হয়েছে।

প্রতিবেদনে নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি ও লাইসেন্স প্রাপ্তিতে নিয়ম বহির্ভূত অর্থ লেনদেনের তথ্য উঠে এসেছে। নকলনবীশ হিসেবে নাম তালিকাভুক্তকরণে ২০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকার নিয়ম বহির্ভূত অর্থ লেনদেন হয়। নকলনবীশ থেকে মোহরার পদে যোগদানে ২ লাখ থেকে ৮ লাখ, মোহরার থেকে সহকারী পদে যোগদানে ৩ লাখ থেকে ১০ লাখ, দলিল লেখকদের লাইসেন্স প্রাপ্তিতে ১ লাখ থেকে তিন লাখ, দলিল লেখকদের দলিল লেখক সমিতিতে অন্তর্ভুক্তি করতে ২ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা ও সাব রেজিস্ট্রার বদলিতে ৩ লাখ থেকে ২০ লাখ পর্যন্ত নিয়ম বহির্ভূত অর্থ লেনদেন হয়। তবে এলাকাবেদে টাকার অংক কম-বেশি হয়।

অভিযোগ রয়েছে, এই অর্থের ১০-৫০ শতাংশ সাব-রেজিস্ট্রার এবং বাকি অংশ অফিসের সকলের মধ্যে পদ অনুযায়ী ভাগ ভাটোয়ারা হয়। দলির নিবন্ধনের জন্য নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ১ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা লেনদেন হচ্ছে। দলিলের নকল উত্তলনে ১ হাজার থেকে ৭ হাজার ও দলিল নিবন্ধন প্রতি দলিল লেখক সমিতিকে চাঁদা দিতে হয় ৫শ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।

উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশের তুলনায় আমাদের দেশে নিবন্ধন ফি বেশি বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সম্পতি বিক্রয় দলিল নিবন্ধনের জন্য নিবন্ধন ফি ও অন্যান্য ফি বাবদ সম্পত্তির মূল্যের ওপর শ্রীলংকা ৫.১ভাগ, ভারতে ৭.২ ভাগ ব্যয় হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এ হার ১০.২ ভাগ।

ভূমি দলিল নিবন্ধন সেবায় অনিয়ম ও দুনীতির কারণ হচ্ছে রাজস্ব ফাঁকি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জমির বাস্তব মূল্য দলিলে না লিখে কম মূল্য লেখা হয়। আবার জমির দলিল বন্ধক রেখে অধিক ঋণের জন্য নির্ধারিত মূল্যের বেশি দেখানো হয়। ভূমি নিবন্ধনে অনিয়ম-দুনীতি কমিয়ে আনতে ডিজিটালাইজন ও আইনের সংস্কারসহ ১৩ দফা সুপারিশ প্রদান  করেছে টিআইবি।

এআই/বিএস 
 

আরও পড়ুন