জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ বলেছেন, রোহিঙ্গা নিয়ে আমাদের বিরাট সমস্যা হবে। প্রায় ১২/১৪ লাখ রোহিঙ্গার দেখাশোনা আমরা করব কীভাবে। তারা মাদক বিক্রি করছে। ইয়াবা বিক্রি করছে। পাসপোর্ট করে বিদেশ যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে রাখা যাবে না। তাহলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যদিও মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে, এখন সময় হয়েছে তাদের চলে যাওয়ার। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার ফিরে যেতে হবে। যেমন করেই হোক তাদের ফেরত পাঠাতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। 

এসময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ভূয়সী প্রশংসা করে রওশন বলেন, তার মৃত্যুতে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়। 

‘আমরা বিরোধীদলীয় নেতার ভূমিকা পালন করতে পারছি’ জানিয়ে রওশন এরশাদ বলেন, ডেঙ্গুর প্রভাবে বাংলদেশের মানুষ বিপর্যস্ত। এমনভাবে তা বেড়ে গিয়েছিল তা বলার বাইরে। যদি আমরা নিজেরা সতেচন হতাম তাহলে মানুষদের বাঁচাতে পারতাম। প্রতিদিন হাজার হাজার লোক হাসপাতাল ভর্তি হচ্ছে এবং মারা যাচ্ছে। আমাদের দেশটাকে পরিষ্কার রাখতে হবে। ময়লা যেন না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। ম্যালেরিয়া ও যক্ষা আবার ফিরে আসবে- বলছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। পাহাড়ি এলাকায় ম্যালেরিয়া দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে এখন থেকেই সচেতন না হই তাহলে ম্যালেরিয়া ভীষণ আকার ধারণ করবে। এটা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বলা হচ্ছে।  যক্ষা থেকে বাঁচার জন্য আগে থেকেই প্রতিরোধী ব্যবস্থা নিতে হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সচেতন হলে এসব রোগ থেকে জনগণকে বাঁচাতে সক্ষম হব।

কিশোর গ্যাং সম্পর্কে তিনি বলেন, এরা সন্ত্রাসী হচ্ছে। গুণ্ডামি করছে। মাদক নিচ্ছে। মাদক এখানে-সেখানে পৌঁছে দিচ্ছে। ওরা যদি গ্যাং এ রূপান্তরিত হয় তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। যারা শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ছে তাদের আবার স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আরেকটি কাজ করতে হবে সেটা হল- শিশুশ্রম দূর করতে হবে। পরিবার ছাড়া এই গ্যাং কালচার দূর হবে না। এ ব্যাপারে প্রথমেই পিতামাতাদের সচেতন হতে হবে।  ঝরে পড়া সন্তানদের দিকে নজর রাখলে তারা জঙ্গি হতে পারবে না। খেলাধুলার পথে যদি তাদের আনতে পারা যায় তাহলে তাদের এসব বন্ধ হবে। 

গুজব সম্পর্কে তিনি বলেন, আসল কথা না জেনেই মানুষ পিটিয়ে হত্যা করছে। কিন্তু আইন হাতে তুল নেয়া যাবে না। সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন করতে হবে। 

কূটনীতিকদের অর্থনৈতিক কাজে আরো সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এর মাধ্যমে আরো অনেক জিনিস রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি। এছাড়া পোষাক খাত আরো জোরদার করার পাশাপাশি বিদেশে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর কথা বলেন তিনি। 

গ্যাসের মুল্য বাড়ানোয় জনগণের অনেক সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কারণ মানুষ নিজ দেশের জিনিসের বেশি দাম দিতে চায় না।

এইচএস/ এফসি