• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯, ১২:৪৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯, ১২:৫৮ পিএম

ই-নামজারি সেবা পাচ্ছে ১ কোটি মানুষ : ভূমিমন্ত্রী

ই-নামজারি সেবা পাচ্ছে ১ কোটি মানুষ :  ভূমিমন্ত্রী
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী

২০১৯ এর ১ জুলাই থেকে সারাদেশে ই-নামজারি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে ৪৮৫টি উপজেলা ভূমি অফিস ও সার্কেল অফিসে এবং ৩ হাজার ৬১৭টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ই-নামজারি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে ১ কোটির অধিক নাগরিককে সেবা প্রদান করা হয়েছে। 
 
ই-নামজারির সক্ষমতা বিষয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী দৈনিক জাগরণকে বলেন, প্রতি বছর দেশে প্রায় ৪২ লাখ ভূমি রেজিস্ট্রেশন হয় এবং উত্তরাধিকার সূত্রে আরও ২০-২৫ লাখ নামজারির ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়। কিন্তু মালিকানা হালনাগাদ হয় ৩০-৩৫ লাখ। প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রায় ৩০ লাখ ভূমি হস্তান্তর নামজারি বা রেকর্ড হালনাগাদ এর বাইরে থেকে যায়। ই-নামজারির মাধ্যমে এখন জনগণ সহজ ও কম সময়ে নির্ভুলভাবে অনলাইনে নামজারি করতে পারছেন।
 
ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে নিরবচ্ছিন্ন ব্রডব্যান্ড চালু না হলে পুরোপুরি ই-নামজারির সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এছাড়া নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে সৌর বিদ্যুৎ সংযোগের কথাও চিন্তা করা হবে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রকৃত লক্ষ্য পূরণে ভূমিমন্ত্রী সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের কর্মকাণ্ডের রেটিং সিস্টেম করা গেলে আরও ভালোভাবে সেবা দেয়া যাবে। দেশে ডিজিটাল পরিসেবা বাড়ানোর লক্ষ্যে আমরা বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিতকরণ, ইন্টারনেট সংযোগ বৃদ্ধি, সফটওয়্যার সিস্টেমের সল্যুশন উন্নয়নে ও ক্যাপাসিটি ডেভলপমেন্ট আধুনিকায়ণে কাজ করছি।

যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েলে ইউনিভার্সিটির একটি গবেষক টিম ই-নামজারি সেবা প্রদান বিষয়ে একটি গবেষণালব্ধ ফল তুলে ধরেন। তারা এপ্রিল ২০১৮ থেকে জুন ২০১৯ পর্যন্ত ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে নামজারি ও ই-নামজারি সেবা প্রদানের বিষয়ে ১৫৫টি উপজেলায় গবেষণা করেন। এই গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়– নামজারি সেবা প্রদানের হার ই-নামজারির মাধ্যমে সেবা প্রদানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৪৫ দিনের ক্ষেত্রে ৩৬ শতাংশ সেবা প্রদানের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান ২৮ দিনের ক্ষেত্রে নামজারি সেবা প্রদানের হার ২০ শতাংশ। সেক্ষেত্রে সেবা প্রদানের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখ্য, নামজারি সেবা প্রদানের সময়সীমা ৪৫ দিন থেকে বর্তমানে ২৮ দিনে নামিয়ে আনা হয়েছে।

গবেষণায় আরও দেখা যায়, ই-নামজারি পদ্ধতিতে সেবা গ্রহণে সনাতন পদ্ধতির চেয়ে উপজেলা ভূমি অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সেবা প্রার্থীদের গমনের হার ১৭ শতাংশ কম এবং ভূমি অফিসে সময় ব্যয় করার হার ৭ শতাংশ কম। উল্লেখ্য, প্রান্তিক অঞ্চলে অনেক সময় সেবা গ্রহীতরা ভূমি অফিসে গিয়ে বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা নিচ্ছেন। আশা করা যাচ্ছে ডিজিটাল আনুষাঙ্গিক পরিসেবা এবং নাগরিকদের মধ্যে আইসিটি সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি পেলে সময় কমে আসবে। অর্থাৎ ভূমি সেবা গ্রহণে সময় ও পরিদর্শন কমে যাবার ফলে ব্যয় কমে যাচ্ছে। এর ফলে নাগরিক সন্তুষ্টি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

নাগরিক সেবা গ্রহণ করার পর সেবা প্রদানের মান নিয়ে সেবা গ্রহীতারা তাদের সন্তুষ্টি বা অসন্তুষ্টি বিষয়ক প্রতিক্রিয়া যাতে জানাতে পারেন সেজন্য ওয়েবসাইটে সেই ব্যবস্থা রাখা হবে। পরবর্তীতে মূল্যায়ন করে ভূমি সেবার মান বৃদ্ধি করার ক্ষেত্র সৃষ্টি হবে। ভূমি মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে মনিটরিং ও বহুমাত্রিক বিশ্লেষণের জন্য ডাটা প্রস্তুত করতে পারছে। ভূমি তথ্য ও সেবা কাঠামোতে যুক্ত থাকায় অন্যান্য ভূমি সেবার সঙ্গে আন্তঃসংযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

একই সঙ্গে, উত্তরাধিকার ক্যালকুলেটরের মাধ্যমে নির্ভুলভাবে সম্পত্তির হিসাব করা যাচ্ছে। ই-নামজারির ওয়েবসাইটের (www.land.gov.bd) মাধ্যমে ঘরে বসে অথবা নিকটস্থ ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে নামজারির নতুন এই পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে জনগণের সময়,খরচ ও ভোগান্তি বহুগুণে কমে এসেছে। 

সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যেগ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এর আওতায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, আইসিটি বিভাগ, ইউএসএইড এবং ইউএনডিপি এর সহায়তায় পরিচালিত এটুআই-এর কারিগরি সহযোগিতায় ভূমি মন্ত্রণালয় ও ভূমি সংস্কার বোর্ড এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে উক্ত ই-নামজারি সারাদেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

 

টিএইচ/একেএস

আরও পড়ুন