পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ভারত রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। শনিবার সর্বশেষ বেনাপোল বন্দরে খুলনার এক আমদানিকারকের ৮০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। রোববার ও সোমবার কোন পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। পেঁয়াজ ভর্তি ১৬টি ট্রাক রোববার রাতে ভারতের পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। মূলত বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজার নির্ভর করে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ওপর। চলতি বছরে বন্যায় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্লাবিত হওয়ায় চলতি মৌসুমি পেঁয়াজ উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তাই এ বছর ভারতের বাজারেও পেঁয়াজের মূল্য বেশ চড়াও। তারই পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির সরকার পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
সাধারণ ক্রেতারা জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ হওয়ায় বাজারে পেঁয়াজের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে ভোক্তাদের ওপর। পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের খবর পেয়ে বেনাপোলসহ যশোরে সর্বত্র ৫০ টাকা কেজির পেঁয়াজ আজ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ১০০/১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ মসলা জাতীয় পণ্যের ভিতরে সব থেকে উপকারী ও প্রয়োজনীয় পণ্য। মাত্র একটা দিনের ব্যবধানে এমন আকাশ ছোঁয়া দামের কারণে এই পণ্যটি কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে পেঁয়াজের ঝাঁজে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ব্যবসায়ীসহ ক্রেতা সাধারণ। তারা বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই সরকারের কোন উদ্যোগ। ভোক্তা অধিকার সংস্থাও রয়েছে হাত গুটিয়ে।
আড়তদার ও দোকানিরা জানান, যেমন কিনছি তেমন দামেই বিক্রি করছি। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। আমাদের নিজেদেরও বাড়িতে পেঁয়াজ পাঠাতে কষ্ট হচ্ছে। বাজারে পেঁয়াজ সংকট থাকায় মঙ্গলবার থেকে পেঁয়াজের বাজার মূল্য আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারণ বাজারের আড়ৎ ব্যবসায়ী সলেমান মণ্ডল জানান, হঠাৎই ভারত সরকার পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে দেওয়ায় তার প্রভাব পড়েছে স্থানীয় বাজারে। মোকাম থেকে আমাদের পেঁয়াজ বেশি দামে কিনতে হচ্ছে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। আর বাইরের পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজিতে। তাছাড়া হোল সেলাররা পেঁয়াজ মজুদ করায় পেঁয়াজের কিছুটা কম হয়ে গেছে বাজারে। বাইরের দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করলে পেঁয়াজের মূল্য সহজে কমবে না বলে মনে করেন তিনি।
বেনাপোল কাস্টম হাউজের সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা বলেন, ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে গত দুদিনে কোন পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে পেঁয়াজের একটি বড় আমদানিকারক। ভোক্তাদের চাহিদা একটি বড় অংশ ভারত থেকে আমদানি করা হয়। পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হওয়ার কারণে বাজারে মূল্য বেড়ে যাবে এবং ভোক্তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কেএসটি