• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০১৯, ০৫:০৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ৬, ২০১৯, ০৯:১০ পিএম

কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্র চন্দ, সা. সম্পাদক উম্মে কুলসুম

কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্র চন্দ, সা. সম্পাদক উম্মে কুলসুম
কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ চন্দ্র ও সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম - ছবি : জাগরণ

দশম জাতীয় সম্মেলনে কৃষক লীগের সভাপতি হয়েছেন সমীর চন্দ্র চন্দ ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন উম্মে কুলসুম স্মৃতি। বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকালে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কৃষক লীগের সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনেই বিগত কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

বুধবার সকাল ১১টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কৃষক লীগের সম্মেলন উদ্বোধন ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুর সোয়া ১টায় প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কৃষক লীগের সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হয়।

বিকাল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি হিসেবে ১৩ জন প্রার্থী হন এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ১১ জন প্রার্থিতা প্রস্তাব করেন। পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে ১৩ জন সভাপতি এবং ১১জন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীর মধ্যে কাদের হাতে নেতৃত্ব দেয়া যায় এ নিয়ে বৈঠকে বসেন। আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গেও ফোনে আলোচনা করেন।

বৈঠক থেকে বের হয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সভাপতি হিসেবে সমীর চন্দ্র চন্দের নাম ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উম্মে কুলসুম স্মৃতির নাম ঘোষণা করেন। 

সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণার সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৩ জন সভাপতি এবং ১১ জন সাধারণ সম্পাদকের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কাকে সকলের দায়িত্ব দেয়া যায় এই বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করে নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আশা করি এই সিদ্ধান্ত সবাই মেনে নিবেন। নতুন সভাপতি সাধারণ সম্পাদক আগামী ৭ দিনের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করবে।

নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে সমীর চন্দ্র বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে গুরুদায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন বাংলার কৃষকের মুখে হাসি ফোটাতে কৃষক লীগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে, একইসঙ্গে দলের কর্মসূচি সফল করতে দলীয় নেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে কৃষক লীগ অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।

নতুন সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি আমাদের উপর আস্থা রেখে নতুন দায়িত্ব অর্পণ করেছেন, সেই আস্থার প্রতিদান দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। সারা বাংলার কৃষকদের সংগঠিত করে আরো শক্তিশালী হবে কৃষক লীগ।

কমিটি ঘোষণার সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক রেজা উপস্থিত ছিলেন। 

সমীর চন্দ্র চন্দ :  

কৃষিবিদ সমীর চন্দ্র চন্দ এর আগে কৃষক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন ও বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের কার্যনির্বাহী সদস্য। সমীর ১৯৮২-৮৩ সেশনে বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউটে (বর্তমানে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) কৃষি বিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে ১৯৮৬ সালে (১৯৮৯ সালে অনুষ্ঠিত) বিএসসি এজি (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্রজীবনে তিনি ১৯৮৭-৮৯ মেয়াদে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউট (বর্তমানে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং সেই সময় ছাত্রদের ন্যায়সসঙ্গত অধিকার আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ১৯৯৬-৯৮ মেয়াদে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ ঢাকা মেট্রোপলিটনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে তিনি কৃষিবিদদের চাকরির সংস্থানসহ পেশাগত উৎকর্ষ সাধনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। 
       
তিনি বাংলাদেশ কৃষক লীগের ১৯৯৮-২০০৭ মেয়াদে কৃষি উপকরণ সম্পাদক এবং ২০০৭-২০১২ মেয়াদে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি পেশাজীবী সংগঠন কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের ২০০৯-২০১২ মেয়াদে সাংগঠনিক সম্পাদক ও ২০১২-২০১৬ মেয়াদে যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯০ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।                                         

উম্মে কুলসুম স্মৃতি  : 
জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আইনজীবী উম্মে কুলসুম স্মৃতি ১৯৬৩ সালের ১ জানুয়ারি পলাশবাড়ী সদরে জামালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম মোকসেদ আলী প্রধান মধু ও মা মরহুমা মাহমুদা বেগম প্রধান। তার স্বামী মো. মাহবুর রহমান একজন সফল ব্যবসায়ী। 

ছাত্রজীবন থেকেই স্মৃতি ছাত্রলীগের রাজনীতে সক্রিয়। ছাত্রজীবন শেষে একজন আইনজীবী হিসেবে ১৯৯৩ সালে ঢাকা বারে যোগদান করেন এবং আওয়ামী রাজনীতি তথা আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত হন। বিগত ২০০০ সালে ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সর্বাধিক ভোটে কার্যকরী পরিষদের এক নম্বর সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৬-০৭ সালের ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কার্যকরী পরিষদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হন, ২০০৩ সালে বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যোগদান করেন সাধারণ সদস্য হিসেবে। এরপর আইন বিষয়ক সম্পাদক ও পরে ২০১২ সালে কাউন্সিল অধিবেশনে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বর্তমান সময়ে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গাইবান্ধা জেলা শাখার সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ ছাড়াও জাতীয় সংসদের কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারিয়ান অ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সদস্য।

২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াত জোটবিরোধী প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সংগঠনে, মিছিলে, রাজপথ অবরোধ কর্মসূচিতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। নিয়মিত আইনজীবী হিসেবে আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন তিনি। ২০০১ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (সুপ্রিম কোর্ট বারের) সদস্য পদ লাভ করেন। আওয়ামী সরকারের বিভিন্ন সময়ে তিনি এপিপি, এডিশনাল পিপি ও পিপি (দুর্নীতি দমন কমিশন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কলেজ জীবনে খেলাধুলায় বিশেষ করে কাবাডি খেলায় তিনি জেলার চ্যাম্পিয়ন ছিলেন।

এএইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন