• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০১৯, ০৩:১৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২২, ২০১৯, ০৩:১৯ পিএম

অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও অচল ঢাবি

অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও অচল ঢাবি
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্ত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা- ছবি: কাশেম হারুন

সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ও একাডেমিক ভবনগুলোতে তালা ঝুঁলিয়ে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ফলে সোমবারও (২২ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমি ও প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ছিল অধিকাংশ বিভাগেই।

জানা গেছে, আজ সকালেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ভবনে নতুন করে তালা ঝুঁলিয়ে দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় ফটকগুলোতে বিভিন্ন ধরনের পোস্টারও লাগনো হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্ত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেখানে দুপুর পর্যন্ত অবস্থান নেয়ার পর একটি মিছিল নিয়ে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে যান। সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে ওইদিনের মতো আন্দোলন স্থগিত করা হয়। সমাবেশে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন চলবে বলেও জানানো হয়। সেখানে ডাকসুর ভিপি উপস্থিত হন। এসময় তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি ডাকসুর সমর্থন রয়েছে। এ সমস্যা সমাধানে ডাকসুর পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হবে।

আন্দোলনকারীরা জানান, আগে চার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন তারা। তবে এখন সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন। তারা জানান, সাত কলেজ বাতিলের দাবি ঢাবির অস্তিত্ব রক্ষার দাবি। তালা কর্মসূচি আন্দোলনকে বেগবান করেছে। এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

এদিকে, রোববার আন্দোলনকারীদের অবরোধে বন্ধ থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম। বিকালে শিক্ষার্থীদের লাগানো তালাগুলো ভেঙে ফেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে জরুরি এক বৈঠকের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিতে তাদের সমর্থন রয়েছে দাবি করে তাদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা:

অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে চলমান অচলাবস্থা নিরসনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করছেন ডাকসুর নেতারা। দুয়েকদিনের মধ্যেই শিডিউল পেলে এ সাক্ষাৎ হতে পারে বলে জানিয়েছেন ডাকসুর সদস্য রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য।

সোমবার আন্দোলন চলাকালে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের সামনে গিয়ে তিনি আন্দোলনকারীদের জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েল ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান দেশের বাইরে রয়েছেন। ফলে সাত কলেজ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কেউ নেই।’ 
ঐতিহ্য বলেন, ‘এ ব্যাপারে ডাকসুতে বৈঠক হয়েছে। সেখানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা উঠেছে। ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী শিডিউল নেয়ার চেষ্টা করেছেন, তবে মেলেনি। দুয়েকদিনের মধ্যেই সাক্ষাৎ হতে পারে।

অধিভুক্তি রাখার পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সমর্থন:

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি রাখার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে অবস্থান নিয়ে এ সমর্থন জানান মঞ্চের আহ্বায়ক অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিন। এসময় মঞ্চের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

আ ক ম জামাল উদ্দিন বলেন, যখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়নি, তখন প্রতিটি বিভাগের পাবলিক বিশ্ববিদ্যায়ের অধীনে কলেজগুলো ছিল। তখন তো এতো সমস্যা হয়নি। তিনি বলেন, মাথাব্যথা হলে তো মাথা কেটে ফেলা যায় না। তেমনি সাত কলেজকে বাদ দিয়েও সমস্যার সমাধান হবে না। এজন্য তাদের শিক্ষার মানোন্নয়নে যা যা করা দরকার এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমে যেন কোনো প্রভাব না পড়ে সেভাবে কাজ করতে হবে।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিন ও ঢাবি শাখা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল তাদের কয়েকজন নেতাকর্মীসহ এসে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বাঁধা দেন। এতে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন।

আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, আন্দোলনের এক পর্যায়ে তারা এসে সামাজিক বিজ্ঞান ভবনে প্রবেশ করতে চান।  তালা খুলতে না দিলে আমিনুল ইসলাম বুলবুল ‘ছেলে-পেলে আনবো নাকি’ বলে হুমকি দেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, আমিনুল ইসলাম বুলবুল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হুমকি দিলে তারা উত্তেজিত হয়ে পাল্টা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা- ‘নির্লজ্জ প্রশাসন, ধিক্কার-ধিক্কার’, ‘অ্যাকশন-অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ভুয়া-ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।

এমআইআর/টিএফ
 

আরও পড়ুন