• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০১৯, ১১:২০ এএম

ট্রেনের বগিতে বাতি নেই, হয়রানির শিকার যাত্রীরা

ট্রেনের বগিতে বাতি নেই, হয়রানির শিকার যাত্রীরা

 

ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন হয়ে প্রতিদিন আন্তঃনগর, মেইল ও লোকালসহ ৩২টি ট্রেন চলাচল করে। এসব ট্রেনের মধ্যে শুধু আন্তঃনগরের বগিতে বাতির ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু অন্যান্য মেইল ও লোকাল ট্রেনের অনেক বগিতে বাতি নেই, আর থাকলেও নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। এসব ট্রেনে রাতের অন্ধকার দূর করতে হকারের কুপিবাতি আর যাত্রীদের মোবাইলের আলোই হয়ে ওঠে একমাত্র ভরসা। এ কারণে রাতের অন্ধকারে ট্রেনের বগির ভেতরে ভৌতিক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এতে প্রায়ই চুরি ও পকেটমারের শিকার হয় যাত্রীরা। পাশাপাশি নারী যাত্রীরা বখাটেদের মাধ্যমে গয় যৌন হয়রানির শিকার।

এছাড়াও জারিয়া-মোহনগঞ্জ ও নাসিরাবাদ ট্রেনে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও লাইন কেটে দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এসব সমস্যার কারণে ট্রেনগুলোতে রাতের যাত্রী আগের চেয়ে কমে গেছে। 

নিরাপত্তাহীনতা ও দুর্ভোগের কারণে অনেক সময় ট্রেনের বগি যাত্রী শূন্য থাকে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। সরেজমিনে গিয়ে গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের বগিতে বাতি না থাকার সত্যতা পাওয়া যায়। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী যাত্রী বলেন, ‘ট্রেনের এই বগিতে বাতি না থাকায় অন্ধকারে ভৌতিক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। এতো যাত্রীর মাঝে আমরা কয়েকজন মাত্র নারী যাত্রী। তাই আতঙ্কের মধ্যে আছি। এভাবে ময়মনসিংহ পর্যন্ত কীভাবে যাব? খুব ভয় করছে।’

শুক্রবার (১ মার্চ) রাত ৭টা ২৭ মিনিটে ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা ভৈরবগামী লোকাল ট্রেন স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেয়। সেখানে দেখা যায়- ট্রেনের ৫টি বগির মধ্যে ২টি বগিতে বাতি নেই। বাকি ৩টি বগির মধ্যে ২টিতে বাতি জ্বললেও অপর ১টি বগির বাতি নিভু নিভু করছিল।

ট্রেনযাত্রী মিলন মিয়া জানান, ভৈরব ট্রেনের এই অবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই। কোনো বগিতে বাতি জ্বলে, আবার কোনো বগিতে বাতি জ্বলে না। আর এই সুযোগে পকেটমার ও চোরের উৎপাত বেড়ে যায়। রাতের বেলায় ট্রেনের নিরাপত্তা বাহিনী অন্ধকারাচ্ছন্ন বগিতে টহল দেয় না। তারা শুধু আলো আছে এমন বগিতে টর্চ নিয়ে বসে থাকে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই যাত্রীসেবার মান দিন দিন কমে যাচ্ছে। রাত ৮টা ৩০ মিনিটে ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেন বিজয় এক্সপ্রেস ওই স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেয়। তবে এই ট্রেনের সব বগিতে বাতির ব্যবস্থা ছিল।

গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম মিন্টু জানান, ট্রেনের বগিতে বাতি না থাকার কারণে রাতে যাত্রীদের মালামাল চুরি, ছিনতাই হচ্ছে। নারীরা প্রায়ই যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এসব কারণে রাতের বেলায় লোকাল ট্রেনের যাত্রী কমে যাচ্ছে এবং সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যাত্রীসেবার মান বাড়াতে রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের এই বিষয়ে নজর দেয়া প্রয়োজন।

শনিবার (২ মার্চ) বিকেলে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রেনে বাতির বিষয়টি আমাদের আওতাধীন না। এটি ইলেকট্রিক বিভাগের বিষয়। আর ট্রেনে যাত্রী নিরাপত্তার বিষয়টি রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা দেখভাল করে। তারপরও আমি বিষয়গুলো সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানাব।’


কেএসটি