• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০১৯, ০১:১৭ পিএম

খাদ্য সংকটে সাড়ে ৩শ বানর 

খাদ্য সংকটে সাড়ে ৩শ বানর 

 

ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া সন্তোষপুর সংরক্ষিত বনাঞ্চলে এক সময় বাঘ, ভাল্লুক, ময়ুরসহ নানা প্রাণীর বসবাস ছিল। প্রাকৃতিক বনায়ন বিনষ্ট করার ফলে এখন আর বাঘ, ভাল্লুক, ময়ুর চোখে পড়ে না। এখন শুধু চোখে পড়ে বানর। খাদ্য সংকটে বানরগুলো এখন সামাজিক বানর হয়ে গেছে। বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৩শ বানর থাকলেও- নেই পর্যাপ্ত খাবার। 

সন্তোষপুর সংরক্ষিত বানাঞ্চল এখন শুধু কাগজেই সংরক্ষিত। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার বনভূমির পুরোটাই এখন বিলীন হয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা শাল গজারি কেটে মুতাসহ পুড়িয়ে এখন লাগানো হয়েছে বিদেশি প্রজাতির গাছ। ভুলেও বনের প্রাণী বিদেশি আকাশমণি-ইউক্যালিপটাস গাছে ওঠে না। বন বিটের অফিস ঘরের সঙ্গে থাকা সামান্য শালগাজারী বনেই দিনরাত কাটে তাদের।

সন্তোষপুর বন উজারের পর বানরগুলো চরম খাদ্য সংকটে এদিক সেদিক চলে যাওয়ায় বানারের সংখ্যা কমে গিয়ে ছিল। তাছাড়া বনের অংশিদারিত্বের নামে অনুপ্রবেশকারীদের অত্যাচারও কম হয়নি বানরগুলোর উপর। সন্তোষপুর বনে অস্তিত্ব সংকটে পড়া বানরগুলোকে খাবারের সংস্থানের জন্য বনবিভাগ কয়েক একর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফলের বাগান তৈরি করে। ফলের বাগানও এসময় জবরদখল হয়ে গেলেও মিডিয়ায় কারণে বন বিভাগ জবর দখলকারীদের উচ্ছেদ করে। 

প্রায় ১ হাজার একর জমিতে রাবার গাছ লাগনোর পর বানরগুলোর চলাফেলার সীমানা আরও সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। রাবার কষের উগ্রগন্ধে এক পাও মাড়ায় না বানরগুলো। 

অপরদিকে, বনের জমি অংশিদাররা আনারস ও হলুদ আবাদ করছে। আনারস ক্ষেতে এক সময় বানারগুলো আসার যাওয়া করতো- এখন আর আসা যাওযা করে না।

স্থানীয়রা জানান, অংশিদারদের পাহাড়াদারদের অত্যাচার ও অতিমাত্রায় আনারসে রাসায়সিক উপাদান ব্যবহার করায় বানারগুলোর অনীহা। 

সন্তোষপুর বনে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৩শ মত বানার রয়েছে। গতবার ২০টি বানর নতুন করে বাচ্চা জন্ম দিয়েছে। এর মধ্যে ৩টি বাচ্চা মরা গেছে। এবার ৫০টির মত বানর গর্ভবতী। বৈশাখ মাসে বানরগুলোর প্রসবকালীন সময়। প্রসবকালীন সময়ের আগে বানরগুলোকে বেশি করে খাবার দেয়া দরকার বলে জানান স্থানীয়রা। 

সন্তোষপুর বনবিটের অফিসে ৬ জন দোকানদার ও বনবিভাগের সহায়তায় প্রতিমাসে বাড়তি খাবার হিসাবে চাল কিনে খাবার দেয়া হয়। চাল বানরের খাবার না হলেও ক্ষুধার জ্বালায় চাল খেয়ে ক্ষুধা মেটায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্ষুধার জ্বালায় বানরগুলো ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ছে। 

সন্তোষপুর বনবিট কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, বনে আগের মত খাবার নেই। বন বিভাগ থেকে লাগনো গাছে ফল খায় বানরগুলো। প্রতিদিন সকালে দেয়া হয় চাল। সন্তোষপুর বন দেখতে আসা দর্শণার্থীদের খাবার খেয়েই বানারগুলো জীবনধারণ করছে। 

কেএসটি