• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০১৯, ১২:৪৬ পিএম

যে কোন সময় দক্ষিণাঞ্চলে বাস চলাচল বন্ধের আশঙ্কা

যে কোন সময় দক্ষিণাঞ্চলে বাস চলাচল বন্ধের আশঙ্কা

 

বাস টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে বরিশাল ও পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতি। পটুয়াখালী সমিতি চাচ্ছে তাদের জেলার বাস টার্মিনাল তারা নিজেরাই পরিচালনা করতে। আর বরিশাল মালিক সমিতির তাদের লক্ষ্য দুই দশকের আধিপত্য ধরে রাখা।

এ নিয়ে দুই সমিতির মধ্যকার বিরোধ এখন তুঙ্গে উঠেছে। তার মধ্যেই পটুয়াখালী বাস টার্মিনাল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে বরিশাল সমিতির কাউন্টার ক্লার্কদের। এজন্য সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে বরিশাল সমিতির নেতারা।

ফলে দুই সমিতির মধ্যকার বিরোধে যে কোন সময় দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরিন রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তার আগেই প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. কাওসার হোসেন শিপন বলেন, পটুয়াখালী বাস টার্মিনাল থেকে বরিশাল বাস মালিক সমিতির ২৫টি গাড়ি চলাচল করছে। একইভাবে পটুয়াখালীর ১১টি গাড়ি চলছে বরিশাল থেকে। ২৫টি গাড়ি পরিচালনার জন্য পটুয়াখালী বাস টার্মিনালে চারজন কাউন্টার ক্লাক নিয়োগ দিয়েছেন তারা। দীর্ঘ দিন ধরে এদের মাধ্যমেই বাসগুলো পরিচালনা করে আসছিল।

হঠাৎ করেই গত ২ মার্চ বরিশাল সমিতির কাউন্টার ক্লার্কদের জোরপূর্বক কাউন্টার থেকে বের করে দিয়েছে পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির নেতারা। তাছাড়া ২ মার্চ থেকে প্রতিদিন আমাদের সমিতির ব্যয়ের আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা করে আত্মসাৎ করছে তারা।

তিনি অভিযোগ করেন, ২০০৯ সালের ৩ মে পটুয়াখালী আরটিসির সভার সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে লেবুখালী থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ৬টি স্পটে পটুয়াখালী মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নামে বরিশালের গাড়ি থেকে মাত্রাতিরিক্ত হারে চাঁদা তোলা হচ্ছে। এ নিয়ে আমাদের মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

আমরা মালিক ও শ্রমিকরা সমস্যা সমাধানে গত ১৫ মার্চ বরিশাল-পটুয়াখালী ও বরগুনা সড়ক পরিবহন মালিক সমন্বয় পরিষদের সঙ্গে জরুরি সভা করেছি। তাছাড়া ১৬ মার্চ বিভাগীয় কমিশনার বরাবর একটি লিখিত আবেদনও করেছি। কিন্তু তাতেও কোন সুরাহা হচ্ছে না।

সবশেষ ১৭ মার্চ বরিশালের মালিক ও শ্রমিক সমন্বয়ে জরুরি সভা করে পটুয়াখালী সমিতির স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে বিভাগীয় কমিশনারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। তাড়াতাড়ি তারা ব্যবস্থা না নিলে বরিশাল সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মালিক সমিতির ওই নেতা।

অপরদিকে, পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিগত ২০ বছর ধরে বরিশাল মালিক সমিতি পটুয়াখালী বাস টার্মিনাল নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। এখন আমাদের জেলার বাস টার্মিনাল আমরাই নিয়ন্ত্রণ করবো। কিন্তু এটা বরিশাল সমিতির নেতারা মানতে চাচ্ছে না।

তিনি বলেন, বিগত ২০ বছর ধরে বরিশালের ১২ জন ক্লার্ক দিয়ে পটুয়াখালী টার্মিনাল নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলো বরিশাল বাস মালিক সমিতি। অথচ বরিশালস্থ রূপাতলী কাউন্টারে আমাদের মাত্র ২ জন লোক রয়েছে। প্রয়োজনে আমরা আমাদের দু’জন লোক সরিয়ে নিয়ে আসব। আর চাঁদাবাজির যে অভিযোগ তারা তুলেছে সেটা ভিত্তিহীন দাবি করে পটুয়াখালী সমিতির ওই নেতা বলেন, বরিশালের গাড়ি থেকে কেউ চাঁদা তুলে থাকলে তাকে তারা মামলা দিয়ে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিচ্ছে না কেন?

মূলত পটুয়াখালী বাস টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ হারাতে চায় না বলেই বরিশালের নেতারা উল্টা পাল্টা বলছে। তারা যতই হুমকি-ধামকী দিক আমাদের টার্মিনাল আমরাই পরিচালনা করবো। প্রয়োজনে পটুয়াখালীর বাস বরিশাল রুটে চলাচল বন্ধ করে দেয়ার পাল্টা হুমকিও দিয়েছেন পটুয়াখালী মালিক সমিতির ওই নেতা।


কেএসটি