• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০১৯, ০৫:৫২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ৫, ২০১৯, ১১:৫৬ পিএম

সংসার পেল প্রতিবন্ধী ফারহানা

সংসার পেল প্রতিবন্ধী ফারহানা

প্রতিবন্ধী অক্ষম মানুষেরা চিরকালই সমাজে উপেক্ষিত ও অবহেলিত হয়ে আসছে। শারীরিক, শ্রবণ, বাক্, বুদ্ধি ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের একটি অংশ জন্মগতভাবে প্রতিবন্ধী। অপর অংশ দুর্ঘটনার কারণে মানসিকভাবে প্রতিবন্ধীত্বের শিকার হয়। গর্ভাবস্থায় মায়েদের দৈহিক কোনো ঘাটতি, পুষ্টিহীনতা বা অসুস্থতা, জন্মের পর বেড়ে ওঠার সময় অপুষ্টি, রোগাক্রান্ত হওয়া, সড়ক দুর্ঘটনা প্রভৃতিসহ বাবা মা’র অমনোযোগ, অযত্ম ও অবহেলার কারণে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
 
প্রতিবন্ধী ফারহানা খাতুনের বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলার পূর্ব শাহপাড়া। তার বাবা ফজলুর রহমান পাঁচ বছর আগে মারা যান। সংসারে রয়েছে মা জরিনা বেওয়া আর ছোট ভাই ফয়সাল হোসেন। ভাই ফয়সালও শারীরিক প্রতিবন্ধী। সে স্থানীয় ওয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র। আর ফারহানা এসএসসি পাস করেছেন তিন বছর আগে। তাদের বাবার মৃত্যুর পর মা জরিনা বেওয়া অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। তাদের পরিবারটি পুরো এলাকায় একটি অসহায় পরিবার হিসেবে পরিচিত।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের সবচেয়ে অসহায় পরিবারটির প্রতিবন্ধী কন্যা ফারহানা খাতুনের বিয়ে হচ্ছে। ফারহানার স্বামী রুবেল হোসেন সদর উপজেলার ফতেঙ্গাপাড়ার হাবিবুর রহমানের ছেলে। রুবেল হোসেন পেশায় সে একজন রাজমিস্ত্রী। এর আগে রীতি মেনে গত বুধবার সন্ধ্যায় ফারহানার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হয়েছে।  
প্রতিবন্ধী ফারহানার বিয়ে ছোট পরিসরে হলেও আয়োজনে কমতি ছিল বিয়েতে। এলাকার কয়েকশ লোক এ বিয়ের দাওয়াত খেয়েছেন।

আর নাটোরের লালপুরে কন্যা দায়গ্রস্ত অসহায় এই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন রুহুল আমিন রুবেল নামের এক ব্যবসায়ী। 

প্রতিবন্ধী ফারহানা খাতুনের মা জরিনা বেগম জানান, ফারহানা জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার অসহায় এ পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন পার্শ্ববর্তী বড়াইগ্রাম উপজেলার ইলেকট্রিক্স পণ্য ব্যবসায়ী রুহুল আমিন রুবেল। তিনিই কন্যা দায়গ্রস্ত এ পরিবারের একজন হয়ে ফারহানার বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন। যতদিন বেঁচে থাকবো, দোয়া করে যাবো আমার আরেক সন্তান রুহুল আমিনের জন্য। বর রুবেল হোসেন বলেন, ‘আমি ফারহানার ব্যাপারে জেনেই তাকে বিয়ে করছি। তাকে পছন্দও হয়েছে আমার। আজ থেকে আমার ছায়াও থাকবে এই অসহায় পরিবারটির উপর।’

ব্যবসায়ী রুহুল আমিন রুবেল বলেন, ‘মানুষকে খুশি দেখতে ভালো লাগে। ২০০৫ সালে ক্যান্সারে আমার মা মারা যাবার পর থেকে আমি বিপদগ্রস্ত ও অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াই। তাদের মুখে হাসি ফুটলেই আমি খুশি। যতদিন বেঁচে থাকবো অসহায় মানুষদের জন্য কাজ করবো। আমি চাই আমার দেখাদেখি বিত্তবানরা অসহায় মানুষদের পাশে এসে দাঁড়াক।’  

কেএসটি