ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীর গায়ে আগুন দিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ রোববার (৭ এপ্রিল) থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত মাদ্রাসার স্বাভাবিক কার্যক্রম ও অনির্দিষ্টকালের জন্য হোস্টেল ও হেফজ বিভাগ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, বর্তমান অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দোলাকে বহিষ্কার ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়।        

সোনাগাজী মাদ্রাসাসহ গোটা উপজেলায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনার দিন শনিবার (৬ এপ্রিল) বিকাল থেকে মাদ্রাসা হোস্টেল ছেড়ে শিক্ষার্থীরা চলে গেছে। মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পরীক্ষা কেন্দ্রে নুসরাত জাহান রাফির (১৮) গায়ে আগুন দিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় জরুরি সভায় বসে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। কমিটির সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পি কে এম এনামুল করিম, সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনসহ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় আগামী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত মাদ্রাসার স্বাভাবিক কার্যক্রম ও অনির্দিষ্টকালের জন্য হোস্টেল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তবে ওই কেন্দ্রে চলমান আলিম পরীক্ষা যথানিয়মে চলবে।

মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন জানান, কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত মাদ্রাসার স্বাভাবিক কার্যক্রম ও অনির্দিষ্টকালের জন্য হোস্টেল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। 

এদিকে রোববার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবুল ফজল। এর আগে পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। পুরো তদন্ত শেষ হওয়ার পরই প্রকৃত কারণ জানা যাবে। ঘটনাস্থল থেকে পলিথিন জাতীয় কিছু পাওয়া গেছে। ধারণা হচ্ছে, ওই পলিথিনের ভেতরেই কেরোসিন ছিল।’

নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান জানান, নুসরাতের অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। 

শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যায় নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করেছে এমন সংবাদ দিলে সে ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যায়। সেখানে বোরকা পরা ৪/৫ জন ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। সে অস্বীকৃতি জানালে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।

এফসি