• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০১৮, ১০:২২ এএম

ধামইরহাটে খেজুর গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা

ধামইরহাটে খেজুর গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা
নওগাঁর গ্রামাঞ্চলে চলছে খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরির কাজ - ছবি: জাগরণ

 

শীতের আগমনে শুরু হবে পিঠা-পুলির উৎসব।  এসব পিঠার স্বাদ আরো বাড়িয়ে দেয় খেজুরের গুড়।  নওগাঁর ধামইরহাটে খেজুর রস থেকে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার গাছিরা। 

সূর্যাস্ত যাওয়ার আগে গাছিরা রস সংগ্রহের জন্য গাছ পরিস্কারসহ হাঁড়ি বাঁধার কাজ শুরু করে।  আর সারা রাতে হাঁড়িতে যে রস সংগ্রহ হয় তা আগুনে জ্বালিয়ে তৈরি হয় সুস্বাদু গুড়।  এখনো পুরোদমে শীত শুরু না হওয়ায় গুড়ের মৌসুম তেমন একটা জমে ওঠেনি বলে জানালেন স্থানীয় গাছিরা। 

খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে রস থেকে লালি ও গুড় তৈরির কাজ চলবে প্রায় মাঘ মাস পর্যন্ত।  ধামইরহাট উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের গ্রামে এখন খেজুরের রস সংগ্রহের দৃশ্য চোখে পড়ছে।  

খেজুর রস ও গুড়ের জন্য ধামইরহাট  উপজেলার একসময় খ্যাতি ছিল।  সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম-বাংলার প্রাচীন এই ঐতিহ্য।  কিছুদিন আগেও বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে, ক্ষেতের আইলে, ঝোপ-ঝারের পাশে ও রাস্তার দুধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ।  কোনো পরিচর্যা ছাড়াই সেগুলো প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠত।  প্রতিটি পরিবারের চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত রস দিয়ে তৈরি করা হতো খেজুরের গুড়।  সম্প্রতি ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার বেশি হওয়ায় দিনদিন খেজুর গাছ কমে যাচ্ছে। 

নাটোরের লালপুর উপজেলা থেকে আসা গাছি রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা পেশাগত কারণে প্রায় প্রতি বছর ধামইরহাট উপজেলায় এসে খেজুর গাছ মালিকদের কাছ থেকে ৪ মাসের জন্য গাছ ভাড়া নিই।  চাহিদা মতো খেজুর গাছ না পাওয়ায় এবং রস কম হওয়ায় আশানুরূপ গুড় তৈরি করতে পারছি না।  এ কারণে এখন আর তেমন পোষায় না।  তারপরও এবছর প্রায় দেড়শর মতো খেজুর গাছের জন্য মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করেছি।  বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে না দিয়ে জীবিকার জন্য এই পেশা ধরে রেখেছি।  তবে যেভাবে খেজুর গাছ নিধন করা হচ্ছে তাতে অল্প দিনের মধ্যেই এই এলাকা থেকে খেজুর গাছ হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, এবছর মানসম্পন্ন খেজুরের গুড়ের দাম কিছুটা বেশি হবে- এমনটাই আশা আমাদের।  শীত একটু বেশি পড়তে শুরু করলে ও পিঠা-পুলির উৎসবে খেজুর গুড়ের দাম ও চাহিদা বাড়বে, সেসময় আমাদের লাভ একটু বেশি হয়। তবে যে পরিমাণে শ্রম দিতে হয় সেই পরিমাণে আমরা লাভ করতে পারছি না। 

এফসি