• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০১৯, ১০:০৩ এএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২০, ২০১৯, ১০:০৩ এএম

অযত্নে অবহেলায় ময়মনসিংহের রাজেশ্বরী ওয়াটার ট্যাংক 

অযত্নে অবহেলায় ময়মনসিংহের রাজেশ্বরী ওয়াটার ট্যাংক 
মুখ থুবড়ে পড়া সেই রাজ রাজেস্বরী ওয়াটার ট্যাংক

অযত্নে অবহেলায় মুখ থুবড়ে পড়ে আছে ময়মনসিংহের রাজ রাজেস্বরী ওয়াটার ট্যাংক । কালের স্মৃতি মুক্তাগাছার জমিদারের জল ভালবাসার নির্দশন এটি । ময়মনসিংহ শহরে বর্তমান সোনালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের পাশে এটি প্রতিষ্ঠিত । 

মুক্তাগাছার প্রখ্যাত জমিদার মহারাজ সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী শহরে পানীয় জল সরবরাহের নিমিত্তে রাজ রাজেশ্বরী ওয়াটার ওয়ার্কস স্থাপন করেছিলেন। নির্মাণকাল ১৮৮৯-১৮৯০ সাল। কথিত আছে, মহারাজের স্ত্রী স্বর্গীয় রাজ রাজেশ্বরীদেবী একবার কঠিন পীড়ায় আক্রান্ত হন। পীড়াটি ছিল দুরারোগ্য। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে পানীয়জল খেতে বারণ করা হয়। অবশেষে এ মহিয়ষী পানীয় পান না করেই মারা যান । মহারাজ স্ত্রীকে খুব ভালবাসতেন। তাই তার স্মৃতিকে অমর করার মানসে তিনি এ জনহিতকর কাজটি সম্পাদন করেন। এটিই ময়মনসিংহ শহরে পানীয়জলের প্রথম যান্ত্রিক উপায়ে সরবরাহকেন্দ্র। ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম তীরে এটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ কাজ সমাধা করতে মোট সময় লাগে প্রায় এক বছর। খরচ হয় সে সময়কার প্রায় দেড় লাখ টাকা।

নির্মাণের প্রথম তিন বছর রাজা বাহাদুরের তত্ত্বাবধানে এটি পরিচালিত হতো। পরে ১৮৯৩ সালে এই ওয়াটার ওয়ার্কসের দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয় ময়মনসিংহ পৌরসভার উপর। দীর্ঘ ৮০ বছর ময়মনসিংহ শহরে পানীয়জলের প্রধান সরবরাহকেন্দ্র ছিল এটি।

ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে পানি তুলে প্রথমে তা বিভিন্ন জলাধারে কয়েক দিন রেখে শোধন করা হতো। অতঃপর সেই পানি যান্ত্রিক উপায়ে পানির ট্যাংকে তুলে তা বিভিন্ন মহল্লায় সরবরাহ করা হতো। দীর্ঘদিন ধরে ওয়াটার ওয়ার্কসটি একটি দর্শনীয় বস্তু হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে এখানে প্রচুর দর্শনার্থী ভিড় জমান। একাত্তরে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর এই ওয়াটার ওয়ার্কসটির প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়। শহরে পানি সবরাহের দায়িত্ব ন্যস্ত হয় জনস্বাস্থ্য বিভাগের ‘পঞ্চ জেলা পানি সরবরাহ পরিকল্পনার’ অধীন।

ময়মনসিংহ নাগরিক আন্দোলনের নেতা আ্যাডভোকেট শিব্বির লিটন জানান, এটি আমাদের আইকন । অযত্নে অবহেলায় মুখথুবড়ে । প্রাচীন পানির ট্যাংকি এটি আমাদের অহংকার ।এটি এভাবে ধ্বংস না করে সংরক্ষণ করা উচিত। 

বিএস