• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০১৯, ০৮:১৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২০, ২০১৯, ০৮:১৯ পিএম

ইলিশ শিকার অবরোধ সময়সীমা পুনঃনির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন

ইলিশ শিকার অবরোধ সময়সীমা পুনঃনির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে জেলেরা ইলিশ ভরা মৌসুমে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ শিকার করতে যেতে পারছে না। সমুদ্র যখন শান্ত হয় তখন সরকারের জারিকৃত ইলিশ শিকার অবরোধ জেলেদের মরার উপর খরার ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জেলে পেশা ও ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে ইলিশ শিকার বন্ধের জন্য নির্ধারিত ৬৫ দিন অবরোধের সময়সীমা পুনঃনির্ধারণের দাবিতে শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে দশটায় পটুয়াখালীর মহিপুর-আলীপুর মৎস্য বন্দরের শেখ রাসেল সেতুতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে হাজারো জেলে, মৎস্য ব্যবসায়ী, ফিশিং ট্রলার মাঝি সমিতি ও মাছধরা ট্রলার মালিকরা। কুয়াকাটা মহাসড়কের শেখ রাসেল সেতুর উপর আলীপুর, মহিপুর, কুয়াকাটা মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি এবং ফিশিং বোট মালিক সমিতিসহ জেলে পেশার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সংগঠনের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

শেখ রাসের সেতুর উপর অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা মেরিন ফিশারিজ অর্ডিনেন্স ১৯৮৩ এর ধারা ১৮ সংশোধন করে ধারা ১৯ এর পুনঃসংশোধন পূর্বক ফিশিং ট্রলারসহ সকল ইঞ্জিন চালিত নৌকায় মাছ ধরার সুযোগ দেওয়ার দাবি তোলেন।

সমাবেশে উপস্থিত বক্তারা আরও বলেন, বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত ছয় মাস ইলিশ পাওয়া গেলেও মূলত জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র মাস ইলিশের ভরা মৌসুম। এসময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সমুদ্র উত্তাল থাকায় জেলেরা গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে যেতে পারে না। অথচ উল্লেখিত সময়ে সরকারের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে ৬৫ দিন ইলিশ শিকার করা বন্ধ রাখার নির্দেশনা আসছে। এ নির্দেশ বাস্তবায়ন হলে জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। সে কারণে জেলেসহ মৎস্য ব্যবসায়ীরা এ প্রজ্ঞাপন সংশোধনের দাবি জানায়।

এছাড়া উপকূলীয় এলাকার জেলেরা সরকারের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন মেনে জাটকা ইলিশ শিকার বন্ধ রাখে। কিন্তু একই সময়ে ভারতের হাজারো জেলেরা এ নিষেধাজ্ঞা না মেনে বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে ইলিশ শিকার করে। এমনকি মা ইলিশ প্রজনন মৌসুমেও বাংলাদেশের জেলেরা ইলিশ শিকার বন্ধ রাখলেও ভারতীয় জেলেরা ইলিশ শিকার অব্যাহত রাখে। তাই ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই এই দীর্ঘ সময় বাংলাদেশের জেলেরা মাছ ধরা বন্ধ রাখলে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে ইলিশ শিকার করবে। এতে উপকূলের জেলেরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে আর লাভবান হবে ভারতীয় জেলেরা।

মানববন্ধন ও সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- মহিপুর মৎস্য আড়ৎদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দিন আহম্মেদ মাছুম, লতাচাপলী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সভাপতি আনছার উদ্দিন মোল্লা, মহিপুর ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার গাজী, মহিপুর মৎস্য ব্যবসায়ী ফজলু গাজী, ট্রলার মালিক আসাদুজ্জামান দিদার ও জলিল হাওলাদার প্রমুখ।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় ২০১৫ সালে ২০ মে মৎস্য-২ (আইন) অধিশাখা একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে সামুদ্রিক সমৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মাছ ধরা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই প্রজ্ঞাপনটি এত বছর বাস্তবায়ন না হলেও চলতি মৌসুমে বাস্তবায়ন করার প্রক্রিয়া রয়েছে।