• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০১৯, ০৮:৩৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২১, ২০১৯, ০২:৩৮ এএম

৩০ বছর পর রমা কৃষ্ণ শিকলবন্দি থেকে মুক্ত

৩০ বছর পর রমা কৃষ্ণ শিকলবন্দি থেকে মুক্ত
শিকলবন্দি অবস্থায় রমা কৃষ্ণ সাহা - ছবি : জাগরণ

৩০ বছর পর শিকলবন্দি থেকে মুক্ত হলেন মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার উত্তর রামগোপালপুর গ্রামের রমা কৃষ্ণ সাহা (৫৫)।

সম্প্রতি ‘৩০ বছর ধরে শিকলবন্দি রমা কৃষ্ণ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। পরে শনিবার (২০ এপ্রিল) মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের নির্দেশে হাতিমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সদস্যরা রমা সাহাকে উদ্ধারে মাঠে নামে। রমা সাহার বাড়ি গিয়ে পরিত্যক্ত একটি জরাজীর্ণ ঘর থেকে তালা ভেঙে রমা কৃষ্ণকে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে উদ্ধার করে। পরে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এ এস এম ফেরদৌস রামা সাহাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। 

এ সময় চিকিৎসক জানান, দীর্ঘ বছর বন্দি জীবন-যাপন করায় রমা সাহা কিছুটা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে এবং ওষুধ লিখে দেয়া হয়েছে।

হাতিমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে অভিযানে নেমে রমা কৃষ্ণ সাহাকে শিকলমুক্ত করে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আইনগত সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শিকলবন্দি থেকে মুক্তি অবস্থায় রমা রমা কৃষ্ণ সাহা- ছবি : জাগরণ

সম্পত্তির লোভে ৩০ বছর ধরে শিকলবন্দি করে রাখার অভিযোগ করেছেন রমা কৃষ্ণ সাহা। কিশোর বয়সে পিতা গৌরাঙ্গ সাহা মারা গেলে সংসারের হাল ধরেন রমা কৃষ্ণ সাহা। বরিশালের আঞ্জুরহাট থেকে ধান-ডাল এনে মিরকাদিম বন্দরের আড়তে তা বিক্রি করতেন রমা কৃষ্ণ সাহা। সম্পত্তির কারণে জীবনের সোনালী সময়গুলো শিকলবন্দি থেকে তিনি এখন ৫৫ বছরের বৃদ্ধ। 

এদিকে, রমা কৃষ্ণ সাহার আত্মীয় স্বজনদের দাবি, বরিশালে ব্যবসা করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়ে রমা কৃষ্ণ সাহা মানসিক ভারসাম্য হারায়। ছেড়ে দিলে অত্যাচার ও উৎপাত করে। এই জন্য তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল।

তবে স্থানীয়রা জানায়, মিরকাদিমের দুধপট্রি এলাকার স্বর্গীয় গৌরাঙ্গ সাহার পুত্র রাম কৃষ্ণ সাহা ওরফে রমা (৫৫) কে তার আপন ছোট ভাই গনাই সাহা ৩০ বছর আগে ঘরের মধ্যে শিকলবন্দি করে রাখে। পাঁচ বছর পূর্বে গনাই সাহা মারা যায়। তবুও শিকল মুক্ত হতে পারেনি রাম কৃষ্ণ ওরফে রমা সাহা। গনাই সাহার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী মনি রানী সাহা ও তার সন্তানরা এতদিন রমা কৃষ্ণকে একটা ছোট অন্ধকার কুঁকড়ি ঘরে শিকলবন্দি করে রেখেছিল।

কেএসটি