স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিকসহ তিন জন মিলে হত্যা করেছে চরমোনাই ইউনিয়নের বুখাইনগর এলাকার দলিল লেখক রেজাউল করিম রিয়াজকে (৪০)। পরকীয়া প্রেমে বাধা ও সম্পত্তি দখল করতে গভীর রাতে পরিকল্পিতভাবে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে তাকে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) হত্যার দায় স্বীকার আদালতে এমনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী লিজা আক্তার। এ ছাড়াও এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর দুই আসামি পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

এর মধ্যে একজন মাসুম। তিনি নিহত রেজাউল করিম রিয়াজের সহকারী এবং লিজা আক্তারের পরকীয়া প্রেমিক। স্বামীকে হত্যার দায় স্বীকার ও আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালী মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘রোববার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।’

এদিকে আদালত সূত্রে জানা গেছে, রেজাউল করিম রিয়াজের দ্বিতীয় স্ত্রী লিজা বেগম। তারা একসঙ্গে থাকলেও দুজনের মধ্যকার সম্পর্ক ভালো ছিল না। তাছাড়া রেজাউল করিমের সহকারী মাসুমের সঙ্গে লিজার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যকার সম্পর্কের কথা জেনে যান রিয়াজ। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ হতো। 

ঘটনার আগের দিনও একই বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয় লিজা আক্তার ও তার প্রেমিক মাসুম। সেই ক্ষোভ থেকেই মাসুমকে নিয়ে রিয়াজকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাতে রিয়াজকে দুধের সঙ্গে কৌশলে ঘুমের ওষুধ সেবন করানো হয়। পরে প্রেমিক মাসুমসহ দুজন এলে তাদের ঘরে প্রবেশ করতে দরজা খুলে দেয় লিজা।

এর পর লিজা তার স্বামীর নাকে-মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। তখন মাসুম ও তার সহযোগী ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিয়াজকে জবাই করে হত্যা করে। ওই রাতেই মোটরসাইকেলে তারা পালিয়ে যায়, যা চরমোনাই পীরের দরবারের সিসি ক্যামেরায় পাওয়া গেছে। ওই সিসি ক্যামেরার সহযোগিতায় ঘাতকদের গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করার কারণে এ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন এসআই মোস্তাফিজুর রহমান।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (এপ্রিল) ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের বুখাইনগর বাজারসংলগ্ন নিজ বাসায় জবাই করে হত্যা করা হয় দলিল লেখক রেজাউল করিম রিয়াজকে। তিনি ওই এলাকার আব্দুস ছাত্তার হাওলাদারের ছেলে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই মনিরুল ইসলাম লিপন বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে কোতয়ালী মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এফসি