• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০১৯, ০৬:২৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২১, ২০১৯, ০৬:২৬ পিএম

‘ববিতে অদৃশ্য ও অশুভ শক্তির প্রয়াসে আন্দোলন’

‘ববিতে অদৃশ্য ও অশুভ শক্তির প্রয়াসে আন্দোলন’
উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ভিসি বিরোধী আন্দোলনের এক মাস হতে চলেছে। গত ২৬ দিন ধরে টানা আন্দোলনের ফলে অচল অবস্থায় রূপ নিয়ে ক্যাম্পাস। এর ফলে সেশন জট শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা দিয়েছে।

তাই এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় এবং লেখাপড়ার স্বার্থে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে ক্লাসে ফেরার আহবান জানিয়েছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক। ৮ দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরও ক্লাসে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনকে অদৃশ্য ও অশুভ শক্তির প্রয়াস বলেও অভিযোগ করেছেন ববি উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক। রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের একটি ই-মেইল থেকে উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এ অভিযোগ এবং আহবান জানানো হয়েছে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি আহবান জানিয়ে লিখিত ওই বক্তব্যে উপাচার্য বলেছেন, ‘গত ১৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের ব্যানারে হাতা গোনা ও চিহ্নিত কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী মানববন্ধন করে। ইতিপূর্বে চিহ্নিত কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীও একই দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল।

তিনি উল্লেখ্য করে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা, জননেত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছাতেই মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। যার মেয়াদকাল ২৭ মে শেষ হবে। বিগত ৩ বছর ১০ মাসের অধিকাল ধরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে অপেক্ষাকৃত নবীন এই বিদ্যাপিঠটিকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছি।

ভিসি অভিযোগ করে বলেন, ‘মেয়াদকালের শেষ সময়ে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের স্বার্থসিদ্ধির জন্য চিহ্নিত গোষ্ঠী আমার পদত্যাগের দাবিতে বিগত ১ মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারসমূহে তালা লাগিয়ে অবৈধভাবে কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। তাদের এই অহেতুক আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তারা এক কল্পিত সন্ত্রাসের ভয়ে ভীত হয়ে এর প্রতিবাদ করে সাহস নিয়ে এগিয়ে আসছে না। এ অবস্থা থেকে আমাদের উত্তরণ অবশ্যম্ভাবী, অন্যথায় জাতির পিতার স্বপ্নের দক্ষিণ বাংলার এই বাতিঘর, যেটি তার সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ম প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে বাস্তবায়িত হয়েছে, তা অপূরণীয়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ভিসি আরো উল্লেখ করেছেন, ‘যারা মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান পণ্ড করার উদ্যোগ নিয়েছিল তাদের উদ্দেশ্যেই আমি বক্তব্য রেখেছিলাম। সেই বক্তব্যে কেউ আহত হয়ে থাকলে তাদের উদ্দেশ্যে আমি দুঃখ প্রকাশও করেছিলাম। কিন্তু বিষয়টি সেখানেই থেমে থাকেনি। বরং কোন এক অদৃশ্য ও অশুভ শক্তির প্রয়াসে এতদূর গড়িয়েছে।

দুঃখ প্রকাশের পরও কেন এই আন্দোলন চলছে? কেন সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাজীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে? এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারী মিলিয়ে সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের ৫ শতাংশের বেশি হবে না। এরা কার স্বার্থ হাসিলের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি ৯৫ ভাগের বেশি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ধ্বংস করার জন্য নেমেছে, এমন প্রশ্ন রেখে ভিসি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘পরবর্তী কর্ম দিবসে তোমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসো। তোমাদের শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্লাসে চলে যাও। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের হাতে তোমাদের শিক্ষাজীবন জিম্মি হয়ে থাকতে পারে না।

শিক্ষার্থীদের প্রতি আশ্বাস রেখে লিখিত বক্তব্যে ভিসি বলেন, ‘একজন শিক্ষক হিসেবে কোন প্রতিষ্ঠানের এহেন অবস্থা আমার জন্য কষ্টদায়ক। যেভাবেই হোক ২৭ মে’র পর ব্যক্তি ইমামুল হক বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে না। তবে কেন এই ধ্বংসাত্মক প্রয়াস চলছে? সকল বরিশালবাসীর কাছে আমার অনুরোধ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে তার মহীমা নিয়ে এগিয়ে চলতে আপনাদের সাহসী প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে আসুন।

কেএসটি