• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ৪, ২০১৯, ০৩:৪১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৪, ২০১৯, ০৯:৪৬ পিএম

খুলনায় আতঙ্ক কাটেনি

নদীতে ৪ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত

নদীতে ৪ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত

ঘূর্ণিঝড় ফণী ও অমাবশ্যার প্রভাবে খুলনার প্রায় সকল নদ-নদীর জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে গড়ে ৪ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জেলার দাকোপের বানিশান্তা ও কয়রা দশহালিয়া এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। যদিও প্রাথমিকভাবে বাঁধ আটকানো সম্ভব হলেও এখনও আতঙ্ক কাটেনি।

ভারতে শুক্রবার অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আঘাত হানার পর শুক্রবার রাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সকলের শঙ্কা ছিল ঝড়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগরের পাড়ের সুন্দরবন সংলগ্ন দাকোপ ও কয়রা উপজেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হবে। কিন্তু তেমন ক্ষতি না হলেও কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপের পানি উন্নয়ন বোর্ডেও বেড়ি বাঁধের কমপক্ষে ৪০টি স্থানে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। খুলনার নদ-নদীর মধ্যে শিপসা, পশুর, শাকবাড়িয়া, কপোতাক্ষে স্বাভাবিকের তুলনায় গড়ে ৪ ফুট উচ্চতায় জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

গভীর রাত থেকে খলনা ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে কখনও হালকা কখনও তীব্র গতিবেগে বাতাস বয়ে চলেছে। বাতাসের সঙ্গে সঙ্গে মাঝে মধ্যে বৃষ্টিও হচ্ছে। শনিবার সকাল  থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও বেলা ১১ টার দিকে বেশ সূর্যের আলো দেখা দেয়। দুপুরের পর থেকে আবারও অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ বিরাজ করছে। রাতের ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতক খুঁটি ও তার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সকাল থেকে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
 
জানা যায়, দক্ষিণ বেদকাশীর  গোলখালী এলাকায় শুক্রবার গভীর রাতের জোয়ারে পানি ছাপিয়েছে। বাঁধের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অংশ আংটিহারা এলাকা। আংটিহারা এলাকায় শনিবার সকালে স্থানীয় জনসাধারণ স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে মেরামত করেছেন। ১৪/১ পোল্ডারের  গোলখালী গ্রামে কপোতাক্ষ নদের মোহনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের  বেড়িবাঁধ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। ঘাটাখালি বেড়িবাঁধেও বেশ ঝুঁকি রয়েছে। পানির যে চাপ তাতে যে কোনো সময় বাঁধ ভেঙে জনবসতি এলাকায় ক্ষতি হতে পারে। ৪নং মহারাজপুর ইউনিয়নে দশহালিয়া গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের অবস্থা খুব খারাপ।

অপরদিকে শুক্রবার রাতে খুলনার দাকোপের বানীশান্তা বাজার এলাকার পশুর নদীর বাঁধ ভেঙে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অপরদিকে শনিবার বেলা ১১টার দিকে গুনারী বৈদ্যবাড়ি এলাকায় বাঁধ ভেঙে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়।

খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমিরুল আযাদ এ বিষয়ে জানান, ফণীর তাণ্ডব খুলনায় তেমন দেখা দেয়নি। গত ২৪ ঘন্টায় ( শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা) ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামীকালও বৃষ্টিপাত হতে পারে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৩, ১৪, ও ১৪/১ পোল্ডারের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সেলিম আবেদ জানান, এ পোল্ডারগুলোর কমপক্ষে ২০টি স্থান বেশ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। দশহালিয়া, ঘাটারখাল, হরিণখোলা এলাকায় কয়েকটি স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হলে তা আপাতত আটকানো গেছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ ( দাকোপ, পাইকগাছা ও কয়রা একাংশ) নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী এ বিষয়ে বলেন, দাকোপের বানিশান্তা এলাকায় ভাঙনে পানি আটকানো গেছে। বড় ধরণের ক্ষতি যাতে না হয় এজন্য স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান, চেয়ারম্যানসহ জনসাধারণের সঙ্গে পরামর্শ করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

একেএস