• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ৯, ২০১৯, ০৯:৩৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৯, ২০১৯, ০৩:৪০ পিএম

অবৈধ বালু উত্তোলনে হুমকিতে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল ও মসজিদ

অবৈধ বালু উত্তোলনে হুমকিতে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল ও মসজিদ
লক্ষ্মীপুরে অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে হুমকিতে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল ও মসজিদ -ছবি : জগরণ

লক্ষ্মীপুর প্রশাসনের অবহেলায় বালু দস্যুরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। প্রভাবশালীরা প্রশাসনের নাকের ডগায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে জেলা পরিষদের দিঘির গভীর থেকে প্রতিদিন বালু উত্তোলন করছে। এতে ওই এলাকায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পরিবার পরিকল্পনা স্বাস্থ্য বিভাগ, লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল, মসজিদ ও জেলা পরিষদের নির্বাহীর বাসভবনসহ দুই গ্রামের ঘরবাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে।

ভুক্তভোগীরা বালু উত্তোলন বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও ফল পাচ্ছে না। তারা এ ব্যাপারে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সবার কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানের ছেলে ইমতিয়াজ তার বাবার প্রভাব খাঁটিয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের নির্বাহীর বাসভবনের উত্তর দক্ষিণ পাশে দিঘি মাঝে ১টি বড় ড্রেজার বসিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে জেলা পরিষদের পুকুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। প্রতিদিন তারা বালু উত্তোলনের মাধ্যমে জেলা পরিষদের পুকুর ভরাট করে যাচ্ছে। এতে ইমতিয়াজ লাভবান হলেও এলাকার দোকান-পাট, মসজিদ, মা ও শিশু কল্যাণ, সদর হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালের কোয়াটারের ও বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। ফলে আশে পাশের তীর ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে।

জেলা পরিষদের আশে-পাশের স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ছেলে প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের বাঁধা দেয়ার সাহস করে না। এরা ড্রেজার মেশিন বসিয়ে জেলা পরিষদের দিঘির গভীর থেকে বালু উত্তোলন করছে। এতে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যে কোনো মুর্হূতে আশে পাশের ঘরবাড়ি, গ্রামসহ সরকারি স্থাপনার পাড় ভাঙনের ঘটনা ঘটতে পারে। 

ভুক্তভোগীরা জানান, ড্রেজিং পদ্ধতিতে বালু উত্তোলন করা হলে ভরা বর্ষায় তাদের বসত বাড়ি ঘর দালান কোটা ও মসজিদ দিঘির গর্ভে বিলীন হবে।

সূত্র জানায়, ২০১০ সালে বালু উত্তোলন নীতিমালায় যন্ত্রচালিত মেশিন দ্বারা ড্রেজিং পদ্ধতিতে যেকোনো নদ, নদী, খাল, বিল, পুকুর, কোনো ফসলি জমিনের তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও সেতু, কালভার্ট, রেললাইন, স্কুল কলেজ, বসত ভিটা, হাসপাতলসহ বিভিন্ন  মূল্যবান স্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন করা বেআইনি। অথচ বালু দস্যুরা সরকারি ওই আইন অমান্য করে জেলা পরিষদের দিঘি নির্বাহীর বাসভবন পাশের দিঘি থেকে বালু উত্তোলন করে জেলা পরিষদের পুকুর ভরাট করে যাচ্ছে। কয়েক গজ দূরে থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে।

জেলা পরিষদের নিবার্হী কর্মকতা মীর শওকত হোসেনের কাছে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানায়, অল্প কিছুদিন হলো আমি যোগদান করেছি এ বিষয়ে আমার জানা নেই। অথচ তার বাসভবনের সামনে দিঘি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহাউৎসব চলছে।
 
এ বিষয়ে জানতে লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলে তিনি কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেন, অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

একেএস