• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১২, ২০১৯, ০১:০৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১২, ২০১৯, ০৭:৪৭ পিএম

পার্বতীপুরে তাপ ও রাসায়নিক দিয়ে পাকানো হচ্ছে কলা

পার্বতীপুরে তাপ ও রাসায়নিক দিয়ে পাকানো হচ্ছে কলা
পার্বতীপুরের আড়তে ইট দিয়ে তৈরি এই ছোট ঘরে কেরোসিনের স্টোভ জ্বালিয়ে তাপ দিয়ে পাকানো হচ্ছে কলা- ছবি: জাগরণ

 

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে কাঁচা ও অপরিপক্ক কলাকে তাপ ও কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো হচ্ছে। কলার কাদিঁর নিচে কেরোসিনের স্টোভ জ্বালিয়ে হিট দিয়ে পাকানো হচ্ছে এসব কলা। কেমিক্যাল মেশানো পানি কলার উপর ছিটানো হয়। তাপ দিয়ে পাকানো কলার ভিতরের অংশ শক্ত হয়ে পড়ছে। এসব কলা একেবারেই স্বাদহীন। এ তাপের ফলে ১২ ঘণ্টার মধ্যে পেকে যাচ্ছে কলা। কলার দামের সাথে যোগ হচ্ছে এই কেরোসিন আর কার্বাইডেরও দাম। দীর্ঘদিন ধরে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট এটি করে আসছে। এতে ভোক্তার স্বাস্থ্যের ঝুঁকি থাকলেও ব্যবসায়ীদের পকেট ভরছে নিয়মিত। ফলের স্বাদ যেমন কমেছে, একই সঙ্গে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকিও। 

জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পার্বতীপুরে কাঁচা ও অপরিপক্ক কলা প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ অটোচার্জার ভ্যানে আসছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এ পদ্ধতি ব্যবহার করছে পার্বতীপুর শহীদ রেলওয়ে মসজিদ পিছনের ৪ কলা আড়ত ব্যবসায়ী। ফলে আড়তেই এখন দেখা মিলছে এভাবে কলা পাকানোর দৃশ্য। 

শহীদ মিনার রোডের ফল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাঁচা ও অপরিপক্ক যে কোনো ফলই তাপ দিয়ে পাকানো সম্ভব। এ তাপ পদ্ধতিতে আম পাকাতে তিন দিন সময় লাগে। পেঁপে ২ দিন, কলা ১ থেকে ২ দিন। এভাবে কলা পাকানোর পর এখান থেকেই পাইকারি দরে বিক্রি হয়। পরে খুচরা ক্রেতাদের মাধ্যমে তা চলে যায় পার্বতীপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারসহ প্রত্যন্ত গ্রামঞ্চলে। 

এ বিষয়ে আড়ত মালিক আজিমুল হক বলেন, হিট দিয়ে কলা পাকানো হলেও কোনো রাসায়নিকের ব্যবহার নেই। এক্ষেত্রে কলাটি নিরাপদ। যদিও ডাক্তার বলছেন, হিট দিয়ে পাকানো কলা স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে।

শহরের রিয়াজনগর মহল্লার আজিজার রহমান (৬৩) নামে এক ভোক্তা বলেন, হিট দিয়ে কলা পাকানোর কারণে ফলের স্বাদ আগের মতো পাওয়া যায় না। আগে একটি পেঁপে যেমন মিষ্টি লাগত, এখন সেটা মনে হয় না। তবে এতে প্রশাসনের নজরদারি থাকলে হয়ত এভাবে ফল পাকাতে পারতেন না ব্যবসায়ীরা। 

পার্বতীপুর শহীদ মিনার সংলগ্ন রেলওয়ে মসজিদের পিছনে আজিমুল হক, আজিবার রহমান, আবুল হোসেন ও মতিয়ার রহমান নামে এ ৪ ব্যবসায়ীর আড়তের মধ্যেই রয়েছে ইট দিয়ে তৈরি বিশেষ ধরনের ছোট ছোট ঘর। এই ঘরের মধ্যে একটি ছোট দরজা থাকে। দরজা দিয়ে কলাগুলো ভালো করে সাজানো হয়। এই আগুনের হিটেই কাঁচা ও অপরিপক্ক কলা পাকানো হচ্ছে। পরে পার্বতীপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারসহ প্রত্যন্ত গ্রামঞ্চলে সেটি ছড়িয়ে পড়ে। 

এ বিষয়ে পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল্লাহেল মাফী বলছেন, এ ধরনের ফল খেলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে। একই সঙ্গে ফলের পরিপূর্ণ কোনো গুণাগুণ থাকে না। হিট দিয়ে পাকানো ফলের পুষ্টিগুণ ঠিক থাকে না। এ ধরনের ফল খেলে উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণই বেশি। এসব ফল খেলে এলার্জিসহ নানা ধরনের চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণ ভোক্তাদের এবিষয়ে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন। 

পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রেহানুল হক বলেন, যারা রাসানিক ব্যবহার করে অপরিপক্ক ফল পাকাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

টিএফ