• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২০, ২০১৯, ০২:০৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২০, ২০১৯, ০২:০৩ পিএম

চুয়াডাঙ্গায় ধানের বদলে চিটায় ভরা ক্ষেত

চুয়াডাঙ্গায় ধানের বদলে চিটায় ভরা ক্ষেত

চলতি বোরো মৌসুমে ব্রি-২৮ জাতের ধান আবাদ করেছিলেন চুয়াডাঙ্গার কৃষকরা। তবে কাটতে গিয়ে দেখেন, ধানের বদলে চিটায় ভরে আছে ক্ষেত। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। চলতি বোরো মৌসুমে এ জেলায় ৬ হাজার ৩৬৩ হেক্টর জমিতে ব্রি-২৮ জাতের ধান আবাদ করা হয়। এর মধ্যে কত জমিতে চিটা হয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কৃষি কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, ব্রি-২৮ ধানে চিটা হলেও তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গায় চলতি বোরো মৌসুমে ২৭ হাজার ৭৪৮ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ হয়েছে। 

এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৫ হাজার ৫৫৮ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ৯ হাজার ৫২০, দামুড়হুদায় ৭ হাজার ৪০০ ও জীবননগরে ৫ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। 

এসব জমিতে কৃষকরা হাইব্রিড জাতের এসিআই-১, ২, সোনার বাংলা, এসএল-৮এইচ, চমক, সাথী, লাল তীর, হীরা, বিএডিসির উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্রি-২৬, ২৮, ২৯, ৫০, ৫৫, ৫৮, ৬৩,৭৪, ৮১, ৮৯, ৮২ বিনা-৮, কাজল লতা, নয়নমণি, গটকা ও খাটোবাবু জাতের ধান আবাদ করেছিলেন। 

শুধু ব্রি-২৮ ধান আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৩৬৩ হেক্টরে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৫৮০ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ২ হাজার ২০৩, দামুড়হুদায় ৩ হাজার ১৮০ ও জীবননগরে ৪০০ হেক্টর জমিতে এটি আবাদ হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাসনহাটি গ্রামের লস্কর আলী জানান, কয়েক বছর ধরে ব্রি-২৮ ধান আবাদ করে আসছেন। এবারো ব্রি-২৮ জাতের ধান আবাদ করেছি। গাছের বৃদ্ধিও ভালো হয়েছে। তবে কাটতে এসে দেখি চার ভাগের তিন ভাগ গাছেই চিটা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, ব্রি-২৮ জাতের ফলন ভালো হয়। তাই আশা করে এ ধান আবাদ করেছিলাম। তবে এবার চিটা হওয়ায় উল্টো আমাকে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

একই গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন, আমার ক্ষেতে ধান নেই, শুধু চিটা। ধান রোপণের পর যা যা করার, তাই করেছি। কিন্তু বীজের কারণে চিটা হয়েছে। এ ব্যাপারে আগে থেকে সঠিক পরামর্শ পেলে লোকসানের মুখে পড়তে হতো না।

ব্রি-২৮ ধানে চিটা হওয়া প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গা সদর কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবাইর মাসরুর জানান, এ মৌসুমে বোরো ধানের ভালো ফলন হয়েছে। কৃষকদের কেউ কেউ জানিয়েছেন ধানে চিটা হয়েছে। তবে এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।

তিনি আরো জানান, বীজের কারণে চিটা হয়নি। ব্লাস্ট অথবা মাজরা পোকা লাগার কারণে বা প্রয়োজনের সময় সেচ না দেয়ায় এমনটি হয়ে থাকতে পারে।

এ প্রসঙ্গে জেলা কৃষি সম্প্রসারণের অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য সংরক্ষণ) সুফি রফিকুজ্জামান জানান, আমরা কৃষকদের ব্রি-২৮ ধানের আবাদ না করতে পরামর্শ দিয়েছিলাম। তারা এ পরামর্শ না মানায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি জানান, ব্রি-২৮ ধানের আবাদ শুরু হয়েছে ১৯৯০-৯৪-এর দিকে। এরই মধ্যে এ ধানের ১২ থেকে ১৪ শতাংশ গুণাগুণ নষ্ট হয়ে গেছে। এর বিকল্প হিসেবে আমরা ব্রি-৬৩ ধান আবাদ করার পরামর্শ দিয়েছি। 

তাছাড়া ব্রি-৫০, ৬৮, ৭৪, ৮১, ৮২ ও ৮৯ জাতের ধান আবাদ করে ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে। এসব ধানের দামও বেশি। ব্রি-২৮ ধানের চালের দাম যেখানে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা, সেখানে নতুন জাতের চালের দাম ৬০-৬৫ টাকা।

কেএসটি