• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০১৮, ১২:১৫ পিএম

বরিশালে আ.লীগ-বিএনপি’র মনোনয়ন বঞ্চিতরা স্বতন্ত্র প্রার্থী !

বরিশালে আ.লীগ-বিএনপি’র মনোনয়ন বঞ্চিতরা স্বতন্ত্র প্রার্থী !

 

 

প্রার্থী ঘোষণার আগে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার ঘোষণা দেয়া বরিশালের রাজনৈতিক নেতারা তাদের পূর্ব প্রতিশ্রুতি ভুলে গেছেন। দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। দলের পক্ষে না থেকে নিজের বিজয় নিশ্চিত করতে প্রচারনা চালাচ্ছেন। বরিশাল জেলার ৬টি সংসদীয় আসনের ৩টিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা বিদ্রোহী নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। তাদের ঠেকাতে কাজ করছেন দলের নেতারা। 

এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশালের ৬টি আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র দলীয় প্রার্থী হতে চান একাধিক নেতা। যারা সবাই দলের সিদ্ধান্তের উপর নিজের ভাগ্য তুলে দেন। প্রতিশ্রুতি দেন দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করবেন তারা।

দলের মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণার আগে এক রকম বক্তব্য ঝাড়লেও এখন অধিকাংশ নেতার সুর পাল্টে গেছে। তারা মনোনয়ন কার্যক্রম এবং মনোনীত প্রার্থীদের প্রশ্নবিদ্ধ করে নিজেরাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এমনকি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তারা তাদের মনোনয়নপত্রও জমা দিয়েছেন। তবে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নিকট তা জমা দেয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের সংখ্যাই বেশি। এর মধ্যে বরিশালের ২টি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত ৫ জন নেতা মনোনয়পত্র দাখিল করেছেন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে বর্তমান এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুসকে প্রথমে মনোনয়ন দেয়া হয়। কিন্তু মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার একদিন আগে তাকে পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগ নেতা মো. শাহে আলমকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। তাই তালুকদার মো. ইউনুস-এমপি’র পরিবর্তে আওয়ামী  লীগের প্রার্থী হিসেবে মো. শাহে আলম দলীয় মনোনপত্র দাখিল করেন। তবে এতেও মনোনয়ন দ্বন্দ্বের অবসান হয়নি। বরং ওই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত তিন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন- শের-ই বাংলার দৌহিত্র ফাইয়াজুল হক রাজু, সৈয়দা রুবিনা আক্তার ও ক্যাপ্টেন (অব.) এম মোয়াজ্জেম হোসেন।

এই আসনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শহীদুল হক জামাল ও এস সারফুদ্দিন আহমেদ সান্টুকে বিএনপির মনোনয়নপত্র দেয়া হলেও দলের সঙ্গে অভিমান করে তা জমা দেননি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপি নেতা শাহ আলম মিয়া। তিনি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।

বরিশাল-৪ (বাকেরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী নেই। তবে বিএনপি’র বিদ্রোহী হয়েছেন জেএম নূরুর রহমান। তিনি সেখানকার স্থানীয় বিএনপি নেতা। এই আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন দেয়া হয় উত্তর জেলার সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ ও ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাজীব আহসানকে। এদের মধ্যে রাজীব আহসান মনোনয়নপত্র জমা দেননি। আসনটিতে আওয়ামী লীগের একমাত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেব নাথ।

বরিশাল-৬ আসনে দলীয় প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। আসনটি মহাজোটের জন্য সংরক্ষিত। সে অনুযায়ী বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের স্ত্রী রতণা আমিন পুনরায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে প্রায় চূড়ান্ত। তবে আসনটিতে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী দেয়ার দাবি স্থানীয় নেতাকর্মীদের।

তাই মহাজোটের জন্য সংরক্ষিত এই আসনটিতে আওয়ামী লীগ থেকে দু’জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে একজন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তিনি হলেন- আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি পারভিন তালুকদারের স্বামী মোহাম্মদ আলী তালুকদার ফারুক। অপর প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ওসমান হোসেন।

তবে বরিশাল-৬ আসনে দু’জনকে মনোনয়ন দেয়ায় এখানে এখন পর্যন্ত কেউ বিদ্রোহী নেই। 

এসসি/বিএস