• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ৩১, ২০১৯, ০৯:০৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৩১, ২০১৯, ০৯:০৭ এএম

কমছে আবাদি জমির পরিমাণ

শ্রীনগরে ইটভাটায় যাচ্ছে ফসলি জমির মাটি

শ্রীনগরে ইটভাটায় যাচ্ছে ফসলি জমির মাটি

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলাজুড়ে দিন দিন কৃষি জমির পরিমাণ কমে আসছে। ফসলি জমির মাটি কাটার পর চলে যাচ্ছে ইটভাটায়। এতে ফসলি জমির চরম সর্বনাশ ডেকে আনা হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিগত তিন দশক ধরে ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। আর জমির মালিকরা মাটি কেটে সেখানে পুকুর তৈরি করে চলেছেন। এ অবস্থায় আবাদি জমির পরিমাণ কমে আসছে পুরো উপজেলায়। 

একদিকে, ফসলি জমির পরিমাণ কমছে, অন্যদিকে উপজেলাজুড়ে বাড়ছে পুকুরের সংখ্যা। 

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ জানিয়েছেন, উপজেলায় সরকারি ১২ হাজার ৭২টি পুকুর রয়েছে। তবে বেসরকারি হিসেবে পুকুরের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার হবে। 

এদিকে, উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশাগ্রস্ত কৃষকরা তাদের জমির মাটি কেটে ইটভাটায় সরবরাহ করছেন। পাশাপাশি ফসলি জমিতে পুকুর খনন হয়ে যাচ্ছে। পরবর্তীতে ওই পুকুরে মাছ চাষে ঝুঁকছেন জমির মালিকরা। মাছ চাষে অধিক লাভবান হওয়ার আশায় দিনের পর দিন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ফসলি জমির মাটি কেটে পুকুর তৈরি করা হচ্ছে। 

জেলার অধিকাংশ ইটভাটা সিরাজদিখান উপজেলায় অবস্থিত। পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর করে ইটভাটায় মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার ফলে কোটি কোটি টাকায় নির্মিত পাকা সড়ক পথ বিনষ্ট করা হচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলেই কাঁদা পানিতে সড়কগুলো পিচ্ছিল হয়ে যায়। দুর্ঘটনায় পতিত হয় অনেক যানবাহন। জমির মাটি কেটে ইঞ্জিন চালিত ট্রাক্টরে করে পরিবহনের কারণে পাকা সড়কের পিচ ওঠে গিয়ে নানা খানাখন্দ ও ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। আবার কৃষকদের মধ্যে নানা বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ও লোভ ফসলি জমির মাটি কেটে পুকুর তৈরিতে প্ররোচিত করা হচ্ছে। ইটভাটার মালিক ও এক শ্রেণীর দালালচক্র কৃষকদের দারিদ্রতার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এ সব করছে। ইটভাটার কারণে এলাকার আম, লিচু, নারকেলসহ বিভিন্ন গাছে ফল ধরছে না, ধরলেও তা কমে অবস্থা বিরাজ করছে। ইটভাটাগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উদ্যোগ নেই।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শান্তনা রানী জানান, ২০১৮ সাল পর্যন্ত শ্রীনগরে ১৫ হাজার ২৮৫ হেক্টর কৃষি জমি রয়েছে। অথচ পাঁচ বছর আগেও ১৭ হাজার ২৪ হেক্টরের বেশি কৃষি জমি ছিল। এলাকায় কৃষি জমিতে মাটি কাটা ও পুকুর খনন অব্যাহত থাকলে জীববৈচিত্র ও পরিবেশের বিপর্যয় ঠেকানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।

এ ব্যাপারে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারি খাল বা পুকুর এক করে কৃষি জমিতে মাটি কাটা ও পুকুর খনন করা চলবে না। তারপরও যদি কেউ এ অন্যায় করে তাহলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
কেএসটি