• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ৭, ২০১৯, ০৬:০০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ৭, ২০১৯, ০৬:০৪ পিএম

শাশুড়িকে কবরেও থাকতে দিল না পুত্রবধূ রিনা

শাশুড়িকে কবরেও থাকতে দিল না পুত্রবধূ রিনা
উঠোনের দিকে শ্বশুর জালাল উদ্দিনের নির্বাক চাহনি-ছবি : জাগরণ

পুত্রবধূর অকথ্য ভাষায় গালমন্দ শারীরিক আর মানসিক অত্যাচারে শেষ পর্যন্ত কবর থেকে শাশুড়ির মরদেহ উঠিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে একটি পরিবার।

নেত্রকোনার সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের হাইলোড়া গ্রামে ন্যক্কারজনক এ ঘটনা ঘটে।

এই খবর ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার (৭ জুন) দুপুরের দিকে অভিযুক্ত পুত্রবধূর বাড়িঘরে ভাঙচুর করে স্থানীয়রা।

এর আগে বাড়িতে পুত্রবধূর তুলকালামে উপায়ন্তর না পেয়ে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় মরদেহটি কবর থেকে উঠাতে বাধ্য হন পরিবারের সদস্যরা। পরে প্রায় আধা কিলোমিটার দূর থেকে মরদেহটি এনে বাড়ির উঠানে নতুন করে দাফন করা হয়।

অভিযুক্ত পুত্রবধূ হলেন হাইলোড়া গ্রামের মঞ্জুরুল হকের স্ত্রী রিনা আক্তার।

এলাকাবাসী আবুল হাশেম, কুদ্দুস মিয়া জানান, গৃহবধূ রিনার স্বামীরা পাঁচ ভাই। যৌথ পরিবার হিসেবে বসবাস করেন তারা। গত পাঁচ মাস আগে রিনার শাশুড়ি বৃদ্ধা মর্তুজা বেগম হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।

পরে পরিবারের সিদ্ধান্তক্রমে জালাল উদ্দিনের স্ত্রী মর্তুজাকে পুত্রবধূ রিনার কেনা জায়গায় কবর দেয়া হয়। কিন্তু কবর দেয়ার নিয়ে কিছুদিন পর থেকেই মরদেহ তোলে অন্যত্র কবর দেয়ার জন্য শুরু হয় রিনার অত্যাচার। 

স্বামীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে কবরটি অনত্র সরানোর জন্য। এমনকি দা বটি নিয়েও কারো ওপর হামলা করতে দ্বিধা করে না পূত্রবধূ রিনা আক্তার। শ্বশুর জালাল উদ্দিন বলেন, জীবনের শেষ লগ্নে এমন দৃশ্য দেখার আগে মৃত্যু কেন আমাকে ছুঁয়ে গেল না। সব আল্লাহের ওপর ছেড়ে দিলাম।

পরিবারে মারামারি কাটাকাটি এড়িয়ে শান্তি বজায় রাখতে শেষ অবধি মর্তুজার পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে মরদেহটি সেখান থেকে তোলে বাড়ির ভেতরে এনে উঠানের মধ্যে কবর দেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে পরে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এই ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য রিনার বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। বিপদ বুঝে এর আগেই আত্মগোপন করে পুত্রবধূ রিনা।

স্থানীয় বাসিন্দা হোসনে আরা, বিলকিস, আয়নুল হক জানান, সরকারি কোনও প্রক্রিয়া না করে কবর থেকে মরদেহ উঠানোর বিষয়টি ধর্ম ও রাষ্ট্র বিরোধী কাজ। এর কঠোর বিচার হওয়া প্রয়োজন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই । 

হাইলোড়া গ্রামে স্থায়ী কোনও কবরস্তান নেই জানিয়ে তারা বলেন, এলাকাবাসীর মৃত্যুর পর দাফন করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট একটি কবরস্তানের বন্দোবস্ত করার জোর দাবি জানান গ্রামের ওই বাসিন্দারা।

কাইলাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, কবর থেকে মরদেহ উঠানোর বিষয়টি সত্যিই ন্যক্কারজনক কাজ। কাল (শনিবার, ৮ জুন) গ্রাম্য শালিস বসবে। সকলের সিদ্ধান্ত ক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসএমএম