• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০১৯, ০৭:২২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৭, ২০১৯, ০৭:২২ পিএম

পদ্মার করাল গ্রাসে ছোট হয়ে আসছে মুন্সীগঞ্জের মানচিত্র

পদ্মার করাল গ্রাসে ছোট হয়ে আসছে মুন্সীগঞ্জের মানচিত্র

বর্ষার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর সঙ্গে সঙ্গে প্রমত্তা পদ্মা রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের নদী-তীরবর্তী গ্রামগুলোতে ভাঙনের তাণ্ডব দেখা দিয়েছে। এতে প্রমত্তা পদ্মার করাল গ্রাসে ছোট হয়ে আসছে মুন্সীগঞ্জের মানচিত্র।

জেলার লৌহজং উপজেলার সামুরবাড়ী এলাকায় নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করতে দেখা গেছে। শুধু সামুরবাড়ী এলাকাতেই নয়, প্রমত্তা পদ্মার করাল গ্রাসে ভাঙনের তাণ্ডব চলছে হারিদিয়া, ডহরী ও বেজগাঁও গ্রামেও। গত এক সপ্তাহের মধ্যে বিস্তীর্ণ এলাকা পদ্মার করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে গেছে।

এদিকে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রমত্তা পদ্মা রুদ্রমূর্তি ধারণ করায় লৌহজংয়ের গাঁওদিয়া, কুমারভোগ ইউনিয়নের শিমুলিয়া বাজার, খড়িয়া গ্রাম, মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়নের কান্দিপাড়া গ্রাম, যশলদিয়া গ্রাম, মাওয়া পুরাতন ফেরিঘাটসহ পদ্মা তীরবর্তী গ্রামগুলোতে ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নদী-তীরবর্তী এসব গ্রামের অনেক পরিবার তদের বসতবাড়ি ভেঙে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ছাড়া লৌহজং উপজেলার ছয়টি গ্রামের দুটি বাজার, একাধিক মসজিদ, মাদ্রাসা, বিদ্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদসহ বিভিন্ন স্থাপনা এখন ভাঙনের মুখে রয়েছে।

লৌহজংয়ের পাশাপাশি জেলার টঙ্গিবাড়ী উপজেলার কামারখাড়া, হাসাইল বানারী ইউনিয়নের নদী-তীরবর্তী গ্রামগুলোতেও পদ্মার ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় ভাঙনের মুখে থাকা একাধিক পরিবার ঘরবাড়ি ভেঙে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। টঙ্গিবাড়ীর বড়াইল গ্রামের কবির বেপারী জানান, তিন বছরের ব্যবধানে তাদের পাঁচটি বাড়ি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। চলতি মৌসুমে আবার ভাঙন শুরু হওয়ায় তাদের পরিবারসহ বড়াইল গ্রামের সাত শতাধিক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। কেউ কেউ আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে অবস্থান নিচ্ছে।

লৌহজং উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বর্ষা মৌসুমের পানি বৃদ্ধির সঙ্গে পদ্মা নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোতে প্রতিবছরই কিছুটা ভাঙন দেখা দেয়। তবে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তার পরও সংশ্নিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত জানাতে বলা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, লৌহজংয়ের গাঁওদিয়া, সামুরবাড়ী ও টঙ্গিবাড়ীর কামারখাড়া এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধের লক্ষ্যে তিন কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পদ্মা সেতুর নদীশাসনের কাজ শুরুর পর এ প্রকল্পের কাজ শুরু হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক শায়লা ফারজানা জানিয়েছেন, মুন্সীগঞ্জের যেসব উপজেলার গ্রামে পদ্মার ভাঙন শুরু হয়েছে, সেসব উপজেলা প্রশাসন কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে সভা করে ভাঙন রোধে সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এনআই