• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২২, ২০১৯, ০২:৪৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২২, ২০১৯, ০২:৪৪ পিএম

সরকারি প্রা. বিদ্যালয়

লক্ষ্মীপুর ও রায়পুরের ৮৩টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান  

লক্ষ্মীপুর ও রায়পুরের ৮৩টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান  

লক্ষ্মীপুর সদর ও রায়পুর উপজেলায় ৪০৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৮৩টি ঝুকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। এ নিয়ে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিশুদের মধ্যে রয়েছে চরম আতংক। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষকরা। এতে শিক্ষা কার্যক্রম যেমন ব্যাহত হচ্ছে তেমনি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় ২৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রায়পুর উপজেলায় ১২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলা প্রকৌশলী এলজিইডি, সদর চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ৫৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫৮টি পাকা ভবন ও টিনসেড ঘরকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে। একইভাবে প্রকৌশলী এলজিইডি রায়পুর, উপজেলার ১২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৫টি পাকা ভবন ও টিনসেড ঘরকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করে। 

সূত্রে আরও জানা গেছে, সদর উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ লক্ষ্মীপুর, পৌরসভার শহীদ স্মৃতি আদর্শ, দালাল বাজার বালিকা, দক্ষিণ চরমন্ডল, পশ্চিম নন্দনপুর, শাকচর, পশ্চিম খোদাওয়ান্দপুর, নন্দীগ্রাম, হাজিরপাড়া কেবি, হামছাদী, উত্তর বিজয়নগর, হামছাদী এস.কে, মুক্তারামপুর, মিরপুর, চরচামিতা বালিকা, মটবী, কালিদাসেরবাগ বালিকা, উত্তর পিয়ারাপুর, মধ্যচরভূতা, দক্ষিণ টুমচর, টুমচর মাদ্রাসা, পূর্ব কালিরচর, দক্ষিণ চন্দ্রপুর, পূর্ব করইতোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৫৮টি বিদ্যালয় রয়েছে। 

রায়পুর উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যে দক্ষিণ চরবংশী, চর আবাবলি এস.সি, দক্ষিণ-পূর্ব কেরোয়া, চর পালোয়ান, শেখ আব্দুল্লাহ্, পূর্ব চরবংশী, কেওড়াডগী চরপক্ষী, বামনী আল-আমিন, ঝাউডগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২৫টি বিদ্যালয় রয়েছে। 

সরেজমিনে সদর উপজেলার দক্ষিণ লক্ষ্মীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গিয়ে দেখা গেছে, আধা পাকা টিনসেড ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ভবনের ওয়ালগুলোতে বড় বড় ফাটল ধরছে। যে কোন সময়ে ভবনটি ধসে পড়তে পারে। কিন্তু বিকল্প শ্রেণি কক্ষ না থাকায় ঝুঁকির মধ্যে চলছে পাঠদান। 

বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী জেবায়ের হোসেন ও আকলিমা বেগম জানান, তাদের স্কুলের এ ভবনটি অনেক পুরানো। এরমধ্যে ওয়ালগুলোতে ফাটল ধরছে। প্রতিদিনই মনের মধ্যে আতংক নিয়ে পড়া-লেখা করছে তারা। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঝর্ণা রায় বর্মণ বলেন, তার বিদ্যালয়টি সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করা হয়েছে। ৫৬৭ জন শিক্ষার্থীর জন্য পাকা ও আধা পাকা ভবন’সহ তিনটি ভবন থাকলেও টিনসেড ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার্থী অনুপাতে শ্রেণিকক্ষ না থাকায় ঝুঁকিও আতংকের মধ্যে ওই ভবনটিতে ক্লাশ নিতে হচ্ছে তাদেরকে। 

অপরদিকে, রায়পুর উপজেলার চরমোহনা বিএন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা জানান, তার স্কুলটিতে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান করতে হচ্ছে। এতে করে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

রায়পুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কে. এম মোস্তাক আহম্মেদ জানান, রায়পুর উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। 

সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান, ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবনের তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। কিছু সমস্যা থাকলেও শিক্ষকরা আন্তরিকভাবে পাঠদান করছেন। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু জাফর মো. সালেহ বলেন, লক্ষ্মীপুর সদর ও রায়পুরের ৮৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা করে শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলে এসব বিদ্যালয়গুলোতে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে।


কেএসটি