• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২৫, ২০১৯, ১১:২৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২৫, ২০১৯, ১১:২৭ এএম

শেরপুর গারো পাহাড়ের সবজি যাচ্ছে কুয়েতে

শেরপুর গারো পাহাড়ের সবজি যাচ্ছে কুয়েতে
সবজি প্যাকেটজাত করে বিদেশ পাঠানো হচ্ছে- ছবি: জাগরণ

প্রথমবারের মতো শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের সবজি যাচ্ছে কুয়েতে। গত সপ্তাহের মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার দুই দফায় ৪ মেট্রিক টন সবজি স্থানীয় সবজি আড়ৎদার সুরুজ আলীর মাধ্যমে ঢাকার এএস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান কুয়েতে এ সবজি রপ্তানি করছেন। স্থানীয় বাজারে যে কাঁকরোল, করলা, ঝিঙ্গা বিক্রি হয় ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে, বিদেশে রপ্তানিকারী কোম্পানির প্রতিনিধির কাছে তা বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪৫ টাকায়। ফলে এ উপজেলার কৃষকেরা আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছেন সবজি চাষে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৫৪০ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। এ পরিমাণ জমিতে মোট ১০ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদিত হয়। স্থানীয় মানুষের চাহিদা পূরণ করে সিংহভাগ সবজি জামালপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যায়। এখন থেকে বিদেশেও যাচ্ছে।

সাম্প্রতি গুমড়া এলাকার সবজির আড়ৎ এ গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা (শ্রমিক) সবজি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ওজন দিয়ে প্যাকেটজাত করে রপ্তানির উপযোগী করছেন। ওই প্যাকেটের গায়ে কুয়েতের একটি স্টিকারও লাগানো হচ্ছে।

সবজির আড়ৎদার সুরুজ আলী বলেন, আমাদের এলাকায় প্রচুর পরিমাণে সবজি চাষ হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয়ভাবে চাহিদা না থাকায় সঠিক দাম পাওয়া যায় না। আমি প্রথমে এখান থেকে ঢাকার কাওরান বাজারে পিকআপ ভ্যানে সবজি বিক্রি করতে যেতাম। পরে ওইখানকার একজনের মাধ্যমে ঢাকার এ এস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কোম্পানির প্রতিনিধির মাধ্যমে এই প্রথমবারের মতো দু দফায় চার মেট্রিক টন সবজি বিক্রি করলাম। এ সবজিগুলোর বড় একটি অংশ কুয়েতে রপ্তানি করবে ওই প্রতিষ্ঠান। তিনি আরও বলেন, ওই কোম্পানি কুয়েত, দুবাই ও মালেশিয়াতে কৃষিপণ্য রপ্তানি করে থাকে। আগামী সপ্তাহে আরও সাত থেকে আট মেট্রিক টন সবজি তাদের কাছে বিক্রি করা হবে বলে জানান এ ব্যবসায়ী। 

গুমড়া গ্রামের কৃষক জয়নাল বলেন, দুই বছর ধরে কাঁকরোল চাষ করছি, লাভও বেশি পাচ্ছি। তিনি এ বছর চার কাঠা (২০শতংশ) জমিতে কাঁকরোল চাষ করেছেন। তার খরচ হয়েছে মাত্র ৫হাজার টাকা। এ পর্যন্ত বিক্রি করছে ২০ হাজার টাকা, আরও ২০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবে বলে জানান এ কৃষক।

কৃষক আহাম্মদ বলেন, আগে সবজি হাটে নিয়ে বিপাকে পড়তে হতো। বাজারে সবজির সরবরাহ বেশি হলে দাম কমে যেত। তখন অনেক সময় লোকসানে সবজি বিক্রি করতে হতো। এখন ঢাকায় বিক্রি করায় বেশি মূল্য পাচ্ছি। আবার শুনতাছি বিদেশেও বলে যাবে আমগুর কাঁকরোল, হয়ত আরও দাম বেশি পাবো।

স্থানীয় কৃষকদের দাবি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে সরারসরি বিদেশে রপ্তানিকারী কোন প্রতিষ্ঠানে সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে আরও সবজির চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি দামও বাড়বে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, উপজেলার কৃষকদের জমির মাটি পরীক্ষা থেকে শুরু করে ফসল তোলা পর্যন্ত সকল ধরনের পরার্মশ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া কৃষি বিভাগের নিবিড় তত্ত্বাবধানে হাত পরাগায়ণ, জৈব বালাইনাশক ও যুক্তিসংগত বালাইনাশক ব্যবহারে বিষমুক্ত সবজির চাহিদা বাড়ছে। বিদেশে সবজির রপ্তানির বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে চুক্তির ব্যবস্থা করবেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।

টিএফ