• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০১৯, ১২:১৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২৮, ২০১৯, ১২:২১ পিএম

বাঁশ দিয়ে আটকিয়ে রাখা হয়েছে স্লিপারগুলো

বাঁশ দিয়ে আটকিয়ে রাখা হয়েছে স্লিপারগুলো

মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনাটি সারা দেশের মানুষের হৃদয়কে নাড়িয়ে দেয়। এ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন, আহত হয়েছেন অন্তত শতাধিক লোক।

দুর্ঘটনার পর সারা দেশের রেল লাইন ও ব্রিজগুলোর নাজুক অবস্থা গণমাধ্যমে উঠে আসতে শুরু করেছে। তবে সবচেয়ে ঝুঁকিপুর্ণ অবস্থানে রয়েছে ঢাকা-সিলেট রেল লাইনটি। ব্রিটিশ আমলেরর পুরনো রেলব্রিজ ও ত্রুটিপূর্ণ লাইন দিয়েই বছরের পর বছর ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন সিলেট বিভাগের চার জেলার কয়েক লাখ মানুষ। সামান্য ঝড় বৃষ্টি হলেই রেল লাইন থেকে মাটি সরে মৃত্যুফাঁদে পরিণত প্রতিটি স্লিপার। ত্রটিপূর্ণ এই লাইনে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই রেল কর্তৃপক্ষের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট রেল পথের হবিগঞ্জ জেলার অংশে অন্তত ১০টি ব্রিজ রয়েছে। যার সব কয়টিই ঝুঁকিপূর্ণ। ব্রিজগুলো হলো- খোয়াই ব্রিজ, লস্করপুর ব্রিজ, বড়চর ব্রিজ, সুতাং ব্রিজ, কুতুবের চক এলাকার দুইটি ব্রিজ, চাইল্লা ব্রিজ, বাহুবলে একটি ব্রিজ ও মাধবপুরের তেলিয়াপাড়ার একটি ব্রিজ। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে বড়চর ব্রিজ। এই ব্রিজরে
প্রতিটি স্লিপারের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এছাড়া বাঁশ দিয়ে আটকিয়ে রাখা হয়েছে স্লিপারগুলো।

এই ব্রিজটি নিয়ে স্থানীয়দের মনে আশঙ্কা কুলাউড়ার বরমচালের পুনরাবৃত্তি যেন বড়চরে না হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, শায়েস্তাগঞ্জ রেল জংশনের পশ্চিমে বড়চর ব্রিজের অবস্থান। দীর্ঘদিনের পুরাতন স্লিপারগুলো অকেজো হয়ে পড়ে আছে। প্রতিটি স্লিপারের ক্লিপগুলো খুলে স্লিপারগুলো এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরে গেছে। ঘুণ পোকায় খেয়েছে কাটের স্লিপারগুলো। অতিরিক্ত ঝুঁকি এড়াতে স্লিপারগুলোকে বাঁশ দিয়ে আটকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে রেল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ব্রিজের পিলারগুলোতে দেখা দিয়েছে একাধিক ফাঁটল।

স্থানীয়রা জানান- বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সচেতন মহল অনেকবার রেল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েছে। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ কোন
কর্ণপাতই করছে না। এখন কুলাউড়ার ঘটনার মতো যদি বড়চরেও ঘটে তাহলে এই দায় কে নেবে এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন স্থানীয়রা?

এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা মো. রহমত আলী বলেন- ‘দুই বছর ধরে বাঁশ দিয়ে ব্রিজটা মেরামত করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা এলাকাবাসী আপত্তি করলেও রেল কর্মকর্তারা শুনেন না।’

বড়চর এলাকার কৃষক লতিফ মিয়া বলেন- ‘ট্রেনগুলো ব্রিজের উপর উঠলে এমন মনে হয় যে এক্ষুণি ভেঙে পড়রে। ট্রেনের ঝাঁকুনি দেখলে আমাদেরই ভয় করে। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন ভয় নেই।’

এ ব্যাপারে জানতে শায়েস্তাগঞ্জ জংশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার গৌর প্রসাদ দাসের সাথে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

কেএসটি